সহযোগিতা জোরদার করে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে
  2020-04-26 15:21:36  cri
গত বছরের ২৬ এপ্রিল, দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষসম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট তার মূল ভাষণে বলেছিলেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের উচ্চ মানের উন্নয়ন পর্যায় শুরু হয়েছে। এক বছর ধরে, অভিন্ন উন্নয়নের ধারণা নিয়ে, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের বিভিন্ন প্রকল্প অনেক দেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের জনগণ আশা করেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করে একসঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে।

দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষসম্মেলনে বিভিন্ন পক্ষ ২৮৩টি মতৈক্যে পৌঁছায়; মোট ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। গত বছর ১৬টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা চীনের সঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের আওতায় সহযোগিতাচুক্তি স্বাক্ষর করে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের বিভিন্ন প্রকল্প আরো বেশি দেশে বাস্তবায়িত হয়েছে, আরো বেশী লোকও এতে উপকৃত হয়েছে।

বুলগেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট রোসেন প্লেভনেলিয়েভ বিশ্বের অভিন্ন উন্নয়নে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের অবদান স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আশা করা যায় আরো বেশি ব্যক্তি, দেশ ও বিশ্বসংশ্লিষ্ট জয়-জয় প্রকল্প গৃহীত হবে।

বর্তমান বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী গুরুতর হচ্ছে। তবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলো মহামারী প্রতিরোধে পরস্পরকে সমর্থন দিচ্ছে। চীনা শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে চীনের আমদানি-রফতানির মোট পরিমাণ ছিল ২.০৭ ট্রিলিয়ান ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.২ শতাংশ বেশি। আর আসিয়ান ইইউকে ছাড়িয়ে চীনের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের সাউথ সিস সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সিয়ু চেন ই মনে করেন, এটা দীর্ঘসময়ে চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা উন্নত করার ফল। তিনি বলেন, চীন উত্থাপিত 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ---সামুদ্রিক রেশম পথ দক্ষিণ-পূর্ণ এশিয়ায়। এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে চীনের সমন্বয় ও অংশগ্রহণের মাত্রা অনেক উন্নত হয়েছে।

'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের মধ্যে অবকাঠামো একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্র এবং এর প্রতিষ্ঠা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প----চীন-লাওস আন্তর্জাতিক রেলওয়েইর চীনের ইউয়ু সি থেকে লাওসের মোহান অংশের বাস্তবায়নকাজ এপ্রিল মাসের শুরুতে সার্বিকভাবে শুরু হয়। আর সৌদি আরবে চীনা জাতীয় বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম কোম্পানি অনেক বাধা অতিক্রম করে প্রথমবারের মতো বিশ্বের বৃহত্তম বুদ্ধিমান বৈদ্যুতিক মিটার প্রকল্পের বাস্তবায়নকাজ শুরু করে।

মিশরের জাতীয় পরিকল্পনা ইনস্টিটিউটের 'এক অঞ্চল, এক পথ' গবেষণা গ্রুপের নেতা ডাক্তার হেবা জামাল মনে করেন, মহামারী চীন ও বিশ্বের অর্থনীতিকে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত করলেও, চীনের অর্থনীতি দ্রুত পুনরুত্থান হবে, এবং বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, চলতি বছর মহামারীর জন্য বিশ্বের অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খাবে। তবে চীনা অর্থনীতি বিশ্বের অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে পারে। মহামারীর পর চীনা অর্থনীতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে, আর এর কারণ হল, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর চীনের অর্থবাজার অনেক শক্তিশালী হয়েছে।

প্রথম প্রান্তিকের তথ্য অনুসারে, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগসংশ্লিষ্ট ৫২টি দেশে চীনা কোম্পানিগুলোর অ-আর্থিক সরাসরি বিনিয়োগ ৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের চেয়ে ১১.৭ শতাংশ বেশি। আর চীন থেকে ইউরোপ পর্যন্ত চায়না রেলওয়ে এক্সপ্রেসের মোট ট্রেনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৪১টিতে। পরিবহনও বেড়েছে গত বছরের চেয়ে ১৮ শতাংশ।

ব্রিটেনের রয়্যাল ইন্সটিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট লর্ড জিমওনিল মনে করেন, মহামারীর পর চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যাগ বিশ্বের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। (তুহিনা/আলিম/ছাই)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040