তাদের একাধিক গবেষণাদল প্রায় একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। তা হলো, নিউইয়র্কের নভেল করোনাভাইরাস মূলত ইউরোপ থেকে আসা। গবেষকরা হাজার হাজার রোগীর কাছ থেকে এই ভাইরাসের জিনগত উপাদানের অনুসন্ধান করেন এবং প্রাদুর্ভাবের প্রক্রিয়াও প্রকাশ করেন। নিউইয়র্কের সিনাই পর্বতের আইকাহান স্কুল অফ মেডিসিনের জেনেটিক বিশেষজ্ঞ হ্যাম ভ্যান বুক্কেল বলেন, 'ভাইরাসটি মূলত ইউরোপ থেকে ভ্রমণকারীরা নিয়ে আসেন'। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রসম্যান স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষণা দলটি এই আশ্চর্যজনক রিপোর্ট পান। নিউইয়র্কে রোগীদের কাছ থেকে ভাইরাসের যেসব নমুনা নেওয়া হয়েছে তা ইউরোপের ভাইরাসের মতো একই রকম।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যাঙ্গোন মেডিকেল সেন্টারের গবেষকরা বলেন যে, গত মার্চ মাসে নিউইয়র্কের আঞ্চলিক হাসপাতালে সনাক্ত ৭৫জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করেন তাঁরা। পরে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ইউরোপ থেকে আগত বলে চিহ্নিত হয়।
কোভিড-১৯ সম্পর্কে মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সক্রিয় পরীক্ষা চালানো হলে, সময়মতো ভাইরাসের বিস্তারিত উদঘাটন করা যাবে। গত ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র এক ঘোষণায় বলে, গত দুই সপ্তাহে মার্কিন নাগরিক ছাড়া যারা চীন ভ্রমণ করেছে, তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে, ইতালি সরকার লকডাউন ব্যবস্থা চালু করে। তারপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১৩ মার্চ ঘোষণা করেন যে, এদিন থেকে ব্রিটেন ছাড়া সব ইউরোপীয় দেশে ৩০ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। কিন্তু 'নিউইয়র্ক টাইমস' এর প্রতিবেদন অনুসারে, ঠিক তখন নিউইয়র্কে এ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়ে যায়।
একই সঙ্গে "নিউইয়র্ক টাইমসের" প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাইয়ের আইকাহান স্কুল অফ মেডিসিন ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রসম্যান স্কুল অফ মেডিসিনের দুটি গবেষণাদল উভয়েই মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এক পরীক্ষা চালিয়েছে যে, তারা নিউইয়র্কে এ ভাইরাসে শনাক্ত রোগীর ওপর নতুন করোনাভাইরাস জিনোম বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সংক্রমণের শুরুর দিকে নিউইয়র্কে সুপ্ত অবস্থায় খুব দ্রুত ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ছিল।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গোন মেডিকেল সেন্টার ডা. অ্যাড্রিয়ানা হাইজু এক গবেষণায় বলেন, এ ভাইরাসের ওপর পরীক্ষামূলক কাজ সক্রিয়ভাবে চালানো হলে, ভাইরাসটির সুপ্ত অবস্থায় সংক্রমণের আশঙ্কা জানা যাবে।
সিএনএন ৮ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে বলে, বাজার গবেষণা সংস্থা এসএসআরএসের জরিপ অনুযায়ী ৫৫ শতাংশ দর্শক মনে করেন, মার্কিন ফেডারেল সরকার নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে খুব খারাপ কাজ করেছে।
৮০ শতাংশ দর্শক মনে করে, মহামারীর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এখনও আসে নি। ৫৫ শতাংশ দর্শক মনে করেন, মহামারী প্রতিরোধে আরও বেশি কিছু করতে পারেন ট্রাম্প। ৩৭ শতাংশ মানুষ বলেন, তারা গত কয়েক দিন ধরে বেশি উদ্বিগ্ন বোধ করছেন। (ওয়াং হাইমান/তৌহিদ)