ইতালি হচ্ছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত সবচেয়ে গুরুতর দেশ। দেশটিতে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত, এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি। ইতালি সারা দেশ লকডাউন অবস্থায় রয়েছে। ইতালির কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাউরো বলেন, উহানের লকডাউন বাতিল করা থেকে স্পষ্ট যে, চীনের ব্যবস্থা ও অভিজ্ঞতা কার্যকরী। এটি এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্যান্য দেশকে আশা যুগিয়েছে। তিনি বলেন, 'উহানের বাস্তবতা থেকে আমরা জানতে পারি যে, শুরুতে চীন যে পদ্ধতি বেছে নিয়েছিল তা সঠিক ছিল। এতে প্রমাণিত হয় যে, এ বিষয়টি শুধু এ পদ্ধতিতে মোকাবিলা করলেই, মহামারী সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। উহানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ইতালিতে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা অঞ্চলের দ্রুত মুক্তি প্রত্যাশা করছি আমরা'।
তিনি বলেন, চীন সবার আগে এ ভাইরাসের শিকারে পরিণত হয়েছে। গোটা দেশের সামাজিক ব্যবস্থা সমন্বয় করার মাধ্যমে এ ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকাজে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি, এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন নিজের অভিজ্ঞতা প্রয়োগ করেছে। এটি বিশ্বের সঙ্গে ভাগাভাগিও করেছে চীন। এটি অন্যান্য দেশের জন্য এ ভাইরাস ঠেকাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, "আমি মনে করি, চীন এ ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ স্থাপন করেছে। তারা প্রথমেই এন্টি-মহামারী অভিজ্ঞতা বিনিময় নিয়েছে; যাতে ইতালির মতো দেশগুলো মহামারীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও ভালো সাড়া দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, চীন আমাদের বলেছিল যে, ভাইরাসটির বিস্তার রোধ করা খুব প্রয়োজন। আমরা উহানের অভিজ্ঞতা থেকে দেখতে পাচ্ছি যে উহানের ট্র্যাফিক বন্ধ করা একটি ভালো সিদ্ধান্ত, পরের দেশগুলোও এই ভাইরাসের ঠেকাতে একই রকম ব্যবস্থা নিয়েছিল, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।"
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ বৈশ্বিক মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাধ্যমে চীন আবারও নিজের দীর্ঘকালের সংহতি ও সহযোগিতার মনোভাব ফুটিয়ে তুলেছে। বহু দেশকে মানসিক সমর্থনের পাশাপাশি বস্তুগত ও প্রযুক্তিগত সহায়তাও দিয়েছে চীন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মানবস্বাস্থ্য এবং বিশ্ব শান্তি ও উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে জরুরি ও তীব্র চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিভিন্ন দেশের উচিত মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটির ধারণা কাজে লাগানো, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং একে অপরকে সমর্থন ও সহায়তা করা, যাতে বৈশ্বিক সম্পদ ও শক্তি সংগ্রহ করে মানবজাতির এই অভিন্ন শত্রুকে পরাজিত করতে পারে।
তিনি বলেন, জি টোয়েন্টি শীর্ষনেতৃবৃন্দের কোভিড-১৯ মোকাবিলাসংক্রান্ত বিশেষ শীর্ষসম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা, আন্তর্জাতিক সংস্থার ভূমিকা সমর্থন করা এবং এ ভাইরাস থেকে সৃষ্ট অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সব দেশকে একত্রে কাজ করার আহ্বান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'চীনা প্রেসিডেন্ট সি'র প্রস্তাবে আমি পুরোপুরি একমত। আমি মনে করি কোভিড-১৯ রোগের টিকা গবেষণার কাজ জোরদার হলে, এটি হবে এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানবজাতির চূড়ান্ত সমাধান'।
(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/ছাই)