চীনা বিশেষজ্ঞরা এদিন ইতালিতে পৌঁছানোর পর সময়মতো ইতালির রেডক্রস, জাতীয় সংক্রমণ গবেষণালয়ের হাসপাতাল ও রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তাঁরা ইতালির বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও চিকিত্সার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন। চীনা বিশেষজ্ঞ গ্রুপ ও চীনা রেডক্রসের উপ-সভাপতি সুন শুও ফেং বলেন, ইতালি চীনের ভাইরাস প্রতিরোধের পরিকল্পনা ও চিকিত্সার উপায় জানতে চায়।
তিনি আরো বলেন, চীন দেড় মাসের মধ্যে ছয়বার প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনা ও সাতবার চিকিত্সা নির্দেশিকা আপডেট করেছে।
স্থানীয় সময় ১৪ মার্চ রোম বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুমুখী হাসপাতালে চীনা বিশেষজ্ঞরা ইতালির চিকিত্সকদের সঙ্গে ভাইরাস প্রতিরোধ নিয়ে মতবিনিময় করেছেন। রোম বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের গুরুতর রোগ বিভাগের পরিচালক বলেন, চীনা বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা ইতালির ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য মূল্যবান।
পরিচালক বলেন, চীনা বিশেষজ্ঞরা বার বার বিচ্ছিন্ন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। হাসপাতালে পুনরায় সংক্রমণ এড়ানোর ব্যবস্থা করতে বলেছেন। এসব তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিবিড় যত্নের ক্ষেত্রে চীনা বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা আরো গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আমরা চীনের প্রকাশিত কোভিড-১৯ সম্পর্কিত প্রবন্ধ গবেষণা করছি, তবুও চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরাসরি বিনিময় করা অনেক বেশি কার্যকর।
গুরুতর ভাইরাস সংক্রমণের অবস্থায় ইতালি শহরগুলো বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থা নিয়েছে। চীনা বিশেষজ্ঞ গ্রুপের প্রধান সুন শুও ফেং বলেন, শহর অবরুদ্ধ করা হলো একটি টার্নিং পয়েন্ট। নাগরিকদের স্ব-সুরক্ষা সচেতনতা উন্নীত হয়েছে। ইতালির বিভিন্ন পর্যায়ে কার্যকর তত্পরতা চলছে। তিনি আরো বলেন,
আমরা ৩১টন চিকিত্সা সামগ্রী নিয়ে ইতালিতে এসেছি। এসব সামগ্রী সময়মতো বিন্যাস করা হয়েছে।
তিনি মনে করেন, পরবর্তী ধাপে ইতালির কাজ হবে, গুরুতর ও কঠিন স্তরযুক্ত চিকিত্সাব্যবস্থা। গুরুতর অসুস্থ, হালকা সংক্রমিত এবং অন-কল কর্মীদের পৃথক করে চিকিত্সা দিতে হবে। এ ছাড়া চীনা ঔষধের ব্যবহার চীনে ভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইতালির বিভিন্ন মহল চীনা ঔষধের ওপর মনোযোগ দিয়েছে। দেশটির বিভিন্ন সংস্থা চীনা ঔষধের চাহিদা জানিয়েছে। আমরা তাদেরকে চীনা ঔষধ দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
সুন শুও ফেং বলেন, ইতালিকে সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের কমিউনিটির ধারণা প্রকাশ পায়। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে যৌথভাবে ভাইরাস প্রতিরোধ করা যাবে। একসঙ্গে ভাইরাস প্রতিরোধে তথ্য, সম্পদ, মানবসম্পদ ও পদ্ধতি বিনিময় করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যেখানে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, সেখানে আমরা গিয়ে চীনা পদ্ধতি পরিচিত করবো। কোনও রাজনৈতিক কারণ ছাড়াই মানবিক সহায়তা দেবো আমরা। তিনি বিশ্বাস করেন, যৌথ প্রচেষ্টায় ইতালি এ ভাইরাস নির্মূল করতে পারবে। রোমে কাজ শেষ করার পর চীনা বিশেষজ্ঞরা উত্তরাঞ্চলের পাদোভা ও মিলানোতে গিয়ে ভাইরাস প্রতিরোধে সহায়তা করবেন।
(ছাই/তৌহিদ/রুবী)