ইয়াসির মাসউদ হলেন চীনের ইউনিভার্সিটি অব ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এন্ড ইকোনোমিক্স'র পিএইচডি প্রার্থী শিক্ষার্থী। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের একটি থিংকট্যাংকের পরিচালক। তিনি স্থায়ীভাবে চীনা অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের অগ্রগতির ওপর আগ্রহী। তিনি মনে করেন, দারিদ্র্যবিমোচনের ক্ষেত্রে চীনের অবদান বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
গত ৪০ বছরে চীনের ৮০কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়েছেন। যদি চীন ২০২০ সালে দারিদ্র্যবিমোচনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে, তাহলে চীন ১০ বছরের আগেই জাতিসংঘের ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়নের পরিকল্পনার দারিদ্র্য হ্রাসের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারবে। চীন হবে জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নকারী প্রথম দেশ।
মাসউদ বলেন, চীনের নেওয়া ধারাবাহিক দারিদ্র্যবিমোচন ও হ্রাসের ব্যবস্থা কার্যকরভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে। এসব ব্যবস্থার কারণে চীন ২০২০ সালে সার্বিকভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি আরো বলেন,
চীন দরিদ্র অঞ্চলে ব্যাপক সম্পদ বরাদ্দ দিয়েছে। এটি দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। চীন ব্যাপকভাবে যন্ত্রপাতি উৎপাদন বাড়িয়েছে। চীন দরিদ্র মানুষকে দরিদ্র অঞ্চল থেকে আরও উন্নত স্থানে স্থানান্তরিত করেছে।
মাসউদ মনে করেন, চীন সরকার শিল্প ও ক্ষুদ্রঋণ নীতির মাধ্যমে দারিদ্র্যবিমোচন করছে। স্থানীয় অবস্থা অনুযায়ী দরিদ্র মানুষকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও ব্যবসার ক্ষেত্রে উত্সাহ দেয় চীন। চীন সরকার দরিদ্র অঞ্চলের বাসিন্দাদেরকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা, প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। যাতে দরিদ্র মানুষকে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও ব্যবসা উন্নয়নে উৎসাহ দেওয়া যায়।
গত জানুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। মাসউদ বলেন, ভাইরাস মোকাবিলায় চীন সরকার প্রথমে দরিদ্র শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। দারিদ্র্যবিমোচনের জন্য কৃষি ও প্রাণিসম্পদ পণ্যের বিক্রি সমস্যা সমাধানে বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দারিদ্র্যবিমোচনের প্রকল্পগুলির কাজ পুনরায় শুরু করেছে চীন। এসব ব্যবস্থা ভাইরাসের কঠিন সমস্যা মোকাবিলার পাশাপাশি চীনকে সময়মতো দারিদ্র্যবিমোচনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে।
এ সম্পর্কে মাসউদ বলেন,
দারিদ্র্য হ্রাস ও বিমোচনের পরিকল্পনা সময়মতো সম্পন্ন নিশ্চিত করার জন্য চীন সরকার দরিদ্র অঞ্চলে কৃষিপণ্য বিক্রিতে সহায়তা করেছে এবং গ্রামীণ শ্রমিককে পুনরায় কাজে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। এর অর্থ বর্তমানে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময়ও চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ বন্ধ হবে না।
মাসউদ আরও বলেন, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের সাফল্যের প্রশংসা করেছেন। তিনি চীনের অগ্রণী অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা অর্জনের কথা বলেন। ইমরান খান মনে করেন, পাক সরকারের উচিত চীনের দারিদ্র্যবিমোচনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া।
(ছাই/তৌহিদ/রুবী)