|
আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন 'রোববারের আলাপন'। আপনাদের সঙ্গে আছি আলিম এবং শিয়েনান আকাশ।
আকাশ: বন্ধুরা, এখন নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া তথা কোভিড-১৯ প্রতিরোধের লড়াইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। বিশ্বব্যাপী চিকিত্সকসহ সবাই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ মহামারীকে pandemic আখ্যায়িত করেছে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আদহানম জেনিভায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে, যা উদ্বেগজনক।
তিনি জানান, বিগত কয়েক সপ্তাহে চীন ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের সংখ্যা ১৩ গুণ বেড়েছে; আক্রান্ত দেশের সংখ্যাও ৩ গুণ বেড়েছে। এ অবস্থায় আশঙ্কা এই যে, অদূর ভবিষ্যতে এই ভাইরাসের প্রকোপ আরও বাড়বে; এতে আক্রান্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যাও বাড়বে। আক্রান্ত দেশের সংখ্যাও বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
আদহানম বলেন, এবারের প্যানডামিকের সঙ্গে আগের সকল প্যান্ডামিকের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় যে, এ প্যান্ডামিক নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এ দু'দেশে আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু অনেক দেশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি, যা উদ্বেগজনক।
স্থানীয় সময় ১৩ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব তেদ্রোস আদহানম জেনিভায় আরেকটি প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বিশ্বের ১২৩টি দেশ ও অঞ্চল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ১ লাখ ৩২ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ আক্রান্তের খবর দিয়েছে। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার। ইউরোপ ইতোমধ্যে মহামারীর কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ইউরোপ এখন মহামারীর কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ইউরোপে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা চীন ছাড়া অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের মোট সংখ্যার চেয়েও বেশী।
অন্যদিকে, ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক ফোনালাপে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, এখন ইতালি মহামারী প্রতিরোধের পরিস্থিতি অনেক কঠিন। ইতালিতে এখন চিকিত্সা-সামগ্রী ও যন্ত্রপাতির অনেক অভাব। এজন্য ইতালি আশা করে, চীন সাহায্য করবে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ইতালির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সার্বিক কৌশলগত সহযোগী অংশিদার হিসেবে চীন ইতালিকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য দেবে। মহামারীর কোনো দেশ বা সীমান্ত নেই। এটা মানবজাতি অভিন্ন শত্রু। আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা।
ওয়াং ই আরো বলেন, কোভিড-১৯ প্রতিরোধের সবোর্চ্চ কঠিন সময়ে ইতালি চীনকে সাহায্য করেছে। চীন কখনও তা ভুলবে না। এখন চীন ও চীনের জনগণ ইতালির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ইতালি ও ইতালির জনগণের পাশে থাকবে চীন।
ওদিকে, স্থানীয় সময় ১২ মার্চ রাতে একটি বিশেষ বিমানে করে চীনের চিকিত্সক-দল ৩১ টন চিকিত্সা-সামগ্রী ও যন্ত্রপাতিসহ ইতালির রাজধানী রোম পৌঁছায়।
বড় ভাই, সত্যি এখন বিশ্বব্যাপী মহামারী প্রতিরোধে আমাদের পরিস্থিতি অনেক কঠিন। এ বিশেষ মুহূর্তে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত রেখে প্রতিরোধ করতে হবে এবং সবাইকে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।