চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ গতকাল (রোববার) বেইজিংয়ে যৌথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্ররণ ব্যবস্থাবিষয়ক একটি সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করে। সম্মেলনে বলা হয়, সারা চীনে কয়লা, বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম ও গ্যাসের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। এ দিয়ে মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং চাহিদা পূরণ সম্ভব। বর্তমানে চীনের অধিকাংশ কয়লা ও পেট্রোলিয়াম কোম্পানি পুনরায় উত্পাদনে আছে; বিদ্যুৎ ও গ্যাস কোম্পানিগুলোও একটানা উত্পাদন করছে। উহানের লেইশেনশান হাসপাতাল, হৌশেনশান হাসপাতাল ও অস্থায়ী হাসপাতালগুলোর জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, সারা চীনের সঞ্চিত কয়লা ২৭ দিন ব্যবহার করা যাবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম অর্ধে চীনে দৈনিক গড় বিদ্যুৎ উত্পাদনের পরিমাণ ছিল ১৪.৩ বিলিয়ন কিলোওয়াট; সর্বাধিক লোড ছিল ৬৯০ মিলিয়ন কিলোওয়াট; আর জেনারেটর ছিল যথেষ্ট। বিদ্যুৎ উত্পাদনের জন্য কয়লা ও পেট্রোলিয়ামের সরবরাহ ছিল স্থিতিশীল। গ্যাসের পর্যাপ্ত মজুতও ছিল।
চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির পরিচালনা বিভাগের পরিদর্শক থাং শি মিন বলেন, জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটি জ্বালানির চাহিদা-সরবরাহ পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি রাখবে, এবং বাস্তব অবস্থা অনুসারে সময়মতো সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় পর্যায়ক্রমে পুনরায় উত্পাদন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে কয়লা, বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়া ও গ্যাসের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে। জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটি দেশের জ্বালানির চাহিদা-সরবরাহ পরিস্থিতির পরিবর্তনের উপর উচ্চ গুরুত্ব দেবে, উত্পাদন ও পরিবহনের সমন্বয় জোরদার ও সুবিন্যস্ত করবে, এবং সময়মতো সমস্যা সমাধান করবে।
জাতীয় জ্বালানি ব্যুরোর বিদ্যুৎ বিভাগের পরিচালক হুয়াং শুয়েই নোং বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে হুপেই প্রদেশে প্রতিদিন ২০০০টিরও বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত গাড়ি, ৫০ থেকে ৮০টি জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ গাড়ি ও ৫০ থেকে ১৫০টি জেনারেটর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গার বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে। মহামারী প্রতিরোধ ও চিকিত্সার গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা, হাসপাতাল, বিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ পয়েন্ট, মহামারী প্রতিরোধ সামগ্রী উত্পাদন কোম্পানি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হোটেলসহ বিভিন্ন জায়গায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উহানের লেইশেনশান হাসপাতাল, হৌশেনশান হাসপাতাল, হুয়াং কাংয়ের তাইপিয়েশান হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও ৩৬টি অস্থায়ী হাসপাতালের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। তা ছাড়া, কোনো অস্থায়ী হাসপাতাল ডিজেল ব্যবহার করলে, জাতীয় জ্বালানি ব্যুরো পেট্রোলিয়াম কোম্পানির সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের ডিজেল সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
পর্যবেক্ষণতথ্য অনুসারে, ফেব্রুয়ারি থেকে উহানে সঞ্চিত উত্পাদিত তেলের পরিমাণ ১ লাখ টনের বেশি। জাতীয় জ্বালানি ব্যুরো ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে উত্পাদিত তেলের পরিবহন নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাতীয় জ্বালানি ব্যুরোর পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস বিভাগের উপ-পরিচালক লিউ হোং বলেন, তারা ইতোমধ্যে উত্পাদিত তেল ও গ্যাসের পরিবহনের জন্য সবুজ চ্যানেল খুলেছেন। একই সঙ্গে জাতীয় জ্বালানি ব্যুরো মহামারী আক্রান্ত অন্যান্য স্থানে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করেছে।
তেল ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি, কোনো কোনো তেল ও গ্যাস কোম্পানি নিজ নিজ উত্পাদনলাইনে মাস্কের কাঁচামাল ও মাস্ক উত্পাদন করে চলেছে।
(তুহিনা/আলিম/ছাই)