কেরিকে প্রথমবারের মতো আমি ফুটবলের মাঠে দেখলাম। এই রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে কিছুটা ভীরু ছেলেটি পূর্ণ শক্তিতে মাঠে দৌড়াচ্ছিল। বেশিরভাগ স্থানীয়দের মতো, ফুটবলও কেরির সঙ্গে এগিয়েছে। আজ, কেরি নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে পড়াশোনা করছে। সে ডাচ, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় সাবলীল। সে এখন চীনা ভাষা শেখার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে। কেরি বলছিল, সে বুঝতে পেরেছিলে যে সে তার চারপাশের লোকদের মতো নয় এবং মাঝে মাঝে তার অস্বস্তি হতো। সে স্থানীয় সমাজে খুব ভালভাবে মানিয়ে নিতে পারছিল না।
কেরি বলে, নেদারল্যান্ডস খুব উন্মুক্ত দেশ। আমি এখানে খুব সুখী।
কেরি চার সদস্যের খুব সুখী একটি পরিবারে বেড়ে ওঠে। যখন তার প্রায় ৭ বছর বয়স, তখন সে তার দত্তক নেওয়ার গল্পটি জানত। সে বলেছিল, এতে তার পিতা-মাতার প্রতি অনুভূতি সামান্য প্রভাবিত হয় নি। তার পরিবর্তে, তার বিশেষ অভিজ্ঞতা তাকে কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ করেছে।
কেরি জানায় যে, তারা দুর্দান্ত কাজ করেছে। আমি যা পছন্দ করি তা করতে এবং আমাকে পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দিতে সবসময় আমাকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমি তাদের আগেই বলেছিলাম যে আমি এশীয় সংস্কৃতি খুব পছন্দ করি এবং অবশেষে আমি এশিয়াতে যেতে চাই। এতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। যদিও তারা চায় না যে, আমি এতদূর তাদের ছেড়ে চলে যাই।
মিডল স্কুলের সময়ে তার দত্তক পিতামাতার নেতৃত্বে, কেরি প্রথমবারের মত চীনের বেইজিং, শি'আন এবং লুওইয়াংয়ে ভ্রমণ করে। এই ১০ দিনের সংক্ষিপ্ত ভ্রমণটিই তাকে এশিয়ান ও চীনা সংস্কৃতির প্রতি দৃঢ় আগ্রহী করে তোলে।
কেরি বলে যে, নেদারল্যান্ডসে যখন আমরা বয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, আমরা কেবল শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য ভাষাটি শিখে নিই। তবে এশিয়ায় আমি অনুভব করি যে, প্রত্যেকে পশ্চিমা সমাজের চেয়ে প্রবীণদের আরও গভীরভাবে সম্মান করে। পশ্চিমা বা ডাচ সংস্কৃতির চেয়ে এশিয়ান সংস্কৃতিকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়ার এটি একটি কারণ।
কেরির এখন পর্যন্ত এটিই চীন ভ্রমণ। তবে নেদারল্যান্ডসে ফেরার পর ভবিষ্যতে চীন যেতে এবং নিজের সংস্কৃতিতে ফিরে আসার ব্যাপারে সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠে। সেই লক্ষ্যে, কেরি সক্রিয়ভাবে চীনা ভাষা শেখা এবং বিভিন্ন চ্যানেল থেকে এশিয়ান সংস্কৃতি বুঝতে ও শিখতে শুরু করে। সে চীনা সংস্কৃতির সারমর্ম শিখেছে। সে বলে, ভবিষ্যতে যদি সুযোগ পাই, তাহলে আমি সত্যিই এশিয়ায় কাজ করতে যাব এবং বাস করব। তবে আমার দত্তক নেওয়া পিতামাতার যত্নের প্রয়োজন হলে, আমি তাদের কাছে ফিরে যাবো।