সংবাদ পর্যালোচনা: কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে চীনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিভঙ্গি
  2020-02-15 16:28:51  cri

আকস্মিক করোনাভাইরাসের মহামারি বা কোভিড-১৯ রোগ চীনের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, সারা বিশ্ব এতে উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি কোভিড-১৯ মহামারির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে, প্রতিরোধকাজের অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। পরিস্থিতি উন্নয়নের পাশাপাশি চীন এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় চীনের সর্বোচ্চ নেতা সি চিন পিং সম্প্রতি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী কমিটির সম্মেলনে আবারও বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। এদিকে, চীনের প্রধানমন্ত্রী সিপিসি'র কেন্দ্রীয় কমিটির নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া (এনসিপি) প্রতিরোধকাজ পরিচালনা দলের এক কর্মসভায় বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।

শ্রোতাবন্ধুরা, কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে চীনের শীর্ষনেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুনবেন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

গত বুধবার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী কমিটির বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কর্মগ্রুপের রিপোর্ট পড়ে শোনানো হয়। এতে ভাইরাসের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে এবং মহামারী প্রতিরোধকাজ জোরদারের কথা বলা হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। সি চিন পিং বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর চীন সবসময় জনগণের জীবনে নিরাপত্তা দিয়েছি এবং সুস্থতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সার্বিকভাবে ভাইরাস প্রতিরোধে কাজ করে আসছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে ভাইরাস প্রতিরোধের কাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভাইরাসের মহামারীতে ঝুঁকিপূর্ণ বড় অঞ্চলে প্রতিরোধকাজ জোরদার করতে হবে।

সম্মেলন থেকে উল্লেখ করা হয়, রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার এবং সুস্থ হওয়ার হার বাড়াতে হবে, সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর হার কমাতে হবে। যেসব শহরে রোগীর সংখ্যা বেশি, সে শহরগুলোতে নির্ধারিত হাসপাতাল, শয্যা ও আইসোলেশনের স্থান বাড়াতে হবে। রোগী সনাক্ত করার গতি দ্রুততর করতে হবে। যেসব রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা ও চিকিত্সা দেওয়া প্রয়োজন, তাদেরকে উপযুক্ত চিকিত্সা দিতে হবে। আগে থেকেই রোগী সনাক্ত করা, রিপোর্ট করা, আইসোলেশন করা এবং চিকিত্সা দেওয়ার ব্যবস্থা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। ওষুধ ও টিকার গবেষণা জোরালো করতে হবে। চিকিত্সায় ব্যবহৃত সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বার্ষিক অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা চালাতে হবে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট সি বৃহস্পতিবার রাতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বিন মোহাম্মাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

ফোনালাপে সি চিন পিং বলেন, নভেল করোনাভাইরাস নিউমোনিয়া এনসিপি সংক্রমনের পর চীন সরকার দেশব্যাপী সবচেয়ে কঠোর প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, এতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে এ ভাইরাসে মৃত্যুর হার কমে এসেছে এবং সুস্থতার হার অনেক বেড়েছে। চীন সরকার জনগণকে নিয়ে এ লড়াইয়ে জয়ী হবে এবং চীনা অর্থনীতির উন্নয়নের প্রবণতা বজায় থাকবে বলে জোর দেন সি। প্রেসিডেন্ট বলেন, এনসিপি প্রতিরোধে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যবস্থা গ্রহণ শুধু চীনা মানুষ নয়, বিশ্বের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। চীন অব্যাহতভাবে মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গঠনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে সহযোগিতা চালাবে।

এদিকে, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংয়ের নেতৃত্বে সিপিসি'র কেন্দ্রীয় কমিটির এনসিপি প্রতিরোধকাজ পরিচালনা দলের এক কর্মসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসভায় বলা হয়, বিভিন্ন অঞ্চল ও বিভাগের উচিত, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাধারা ও পলিট ব্যুরোর স্থায়ী কমিটির সম্মেলনের চেতনায় বিভিন্ন পর্যায়ে এনসিপি প্রতিরোধের কাজ জোরদার করা। এ লড়াইয়ে জয়ী হওয়া এবং এ বছরের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী চীনের হুপেই প্রদেশ, বিশেষ করে উহান শহরে এনসিপি প্রতিরোধকাজে গুরুত্ব দেন। উহানের চিকিৎসাকেন্দ্রে শয্যা বাড়ানো, আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার পাশাপাশি হুপেই ও উহান থেকে বাইরে যাওয়ার পথ নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেন লি।

কর্মসভায় প্রধানমন্ত্রী জানান, চীনের বিশেষজ্ঞরা ৬০০০ আক্রান্ত রোগী নিয়ে গবেষণা করে চিকিৎসার পদ্ধতি সুবিন্যাস করেছে। ক্লিনিকাল ট্রায়াল জোরদার করা হচ্ছে, যাতে সুস্থতার হার বৃদ্ধি পায় ও মৃত্যুর হার কমানো যায়। সার্বিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মৃত্যুর হারের তুলনায় সুস্থতার হার ক্রমেই বাড়ছে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040