চলুন বেড়িয়ে আসি-200207
  2020-02-07 20:10:01  cri

বিশ্ব ভ্রমণ: অধ্যায়- এশিয়া

পর্ব ১: ভারত

প্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। এখন শুনবেন আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন, চলুন বেড়িয়ে আসি। আপনাদের সঙ্গে রয়েছি মোহাম্মদ তৌহিদ।

শ্রোতাবন্ধুরা, আজ থেকে আমরা নতুন করে বিশ্বভ্রমণ শুরু করব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শনীয় স্থান এবং সেসব স্থানে ভ্রমণসংক্রান্ত বিভিন্ন খবরাখবর জানাবো। আশা করি আমাদের নতুন এ আয়োজন আপনাদের ভালো লাগবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমরা বাংলাদেশ ও চীনের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে ভ্রমণ দিয়ে শুরু করব। চীন ও বাংলাদেশের সঙ্গে অতীতকাল থেকেই ভারতের রয়েছে ঐতিহাসিক যোগাযোগ। আর্থ-বাণিজ্যিক, চিকিৎসা-শিক্ষাসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ দেশটি ভ্রমণ করে থাকেন। তাই আমাদের বিশ্ব ভ্রমণের প্রথম পর্ব থাকছে ভারতের কিছু দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণসংক্রান্ত কিছু উল্লেখযোগ্য খবর।

এর কারণ হলো, ভারতে মোট বিদেশি পর্যটকের ৬৫.৬১ শতাংশই বাংলাদেশি পর্যটক। ভারত ভ্রমণকারী বিদেশির সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১৩ ও ২০১২ সালে তৃতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।

যাই হোক বন্ধুরা, চলুন মূল অনুষ্ঠান শুরু করি।

মিউজিক....

খবরাখবর

১.

২০১৯ সালে ১৫ লাখ বাংলাদেশিকে ভারতীয় ভিসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ। প্রতিবেশী দেশের মানুষকে দেয়া এই ভিসার বিনিময়ে ভারতও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

গত ডিসেম্বরে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে ভারতীয় ভিসা সেন্টারে তিনজন মুক্তিযোদ্ধার হাতে ভারতীয় ভিসা তুলে দিয়ে হাইকমিশনার এ কথা বলেন। ভিসাপ্রাপ্ত তিন মুক্তিযোদ্ধা হলেন- ড. মো. শহীদুল ইসলাম, ড. নূর মোহম্মদ মল্লিক ও মো. আতিয়ার রহমান। হাইকমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে ১৫টি ভারতীয় ভিসা সেন্টার খোলা হয়েছে। কয়েক বছর আগে সাত থেকে আট লাখ ভিসা দেওয়া হতো। এখন তা ১৫ লাখে পৌঁছেছে। এটাই এক বছরে এত ভারতীয় ভিসা দেয়ার রেকর্ড। তাই ২০১৯ সালকে স্মরণীয় করে রাখতে এ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ভারতীয় ভিসা সেন্টার।

বর্তমানে ঈদ বা বিয়ের সময় অনেকে ভারতে কেনাকাটা করতে যান। এ ছাড়া, ব্যবসা, চিকিৎসা, ভ্রমণ, শিক্ষাসহ নানা কারণেই বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক লোক বন্ধুদেশ ভারতে যাচ্ছেন। প্রতিবছর এ সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই ভারতীয় ভিসার জন্য মানুষের আবেদন জমা পড়ছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের পাঁচ বছর মেয়াদী ভিসা দেয়া হচ্ছে।

ভারতীয় ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছরই ভারতে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ বাড়ছে। ভারতীয় হাইকমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১ কোটি ৩৭ লাখ ৩০ হাজার ২৮২ বিদেশি ভারত ভ্রমণ করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ২৮ লাখ ৭৬ হাজার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৮ লাখ ৬৩ হাজার ২৭৮, যুক্তরাজ্যের ১৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫৪৮, কানাডার চার লাখ ৭৮ হাজার ২২৮, শ্রীলংকার চার লাখ ৫১ হাজার ৭৩৬, অস্ট্রেলিয়ার চার লাখ ৪৪ হাজার ৩৩, মালয়েশিয়ার চার লাখ ১১ হাজার ৫০, রাশিয়ার তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮৩, চীনের তিন লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৯ এবং জার্মানির তিন লাখ ৬০ হাজার ৮৪৩ নাগরিক ভারত ভ্রমণ করেন।

এদিকে এখন বাংলাদেশিদের জন্য সিকিম ভ্রমণ উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে কাছে হিমালয়ের বরফ দেখার সুর্বণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য।

মিউজিক.....

২.

যেমনটি বলছিলাম। রাজধানী ঢাকা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং ও সিকিমে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে বাস সার্ভিস। আগামী ১২ ডিসেম্বর এ সার্ভিসের ট্রায়াল রান হয়। ১২ ডিসেম্বর দুটি বাস সিকিম ও দার্জিলিংয়ের পথে রওনা দেয়। বাস দুটি রাজধানীর মতিঝিল থেকে ছেড়ে যায়। পাঁচ দিনের সফর শেষে ১৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরেও যায়।

ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধার দূরত্ব প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে শিলিগুড়ির দূরত্ব ৫২০ কিলোমিটার। সেখান থেকে সিকিমের গ্যাংটকের দূরত্ব আরও ১২০ কিলোমিটার। নতুন এ বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় ভারতের এ দুটি পর্যটন গন্তব্যে আগের চেয়ে আরও সহজে ও আরামদায়কভাবে যাতায়াত করতে পারছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

সিকিম ভ্রমণকারী পর্যটক ও স্থানীয়রা জানায়, ভারতের সিকিম ভ্রমণে তেমন কোনো শঙ্কা নেই। নিরাপদেই ঘোরাফেরা করতে পারেন পর্যটকরা। আর শীতকালাই সিকিম ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। তাইতো প্রতিদিনই পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনে ভিড় করছেন হাজারো বাংলাদেশি পর্যটক।

এদিকে, বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে ভারতীয় হাইকমিশন নিয়েছে নানা উদ্যোগ। এরই মধ্যে দেশজুড়ে ১৫টি ভিসা আবেদন কেন্দ্রের মাধ্যমে ভিসা প্রদান করছে দেশটি। এরই মধ্যে ২০২০ সালে ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো কোন দিনগুলোতে বন্ধ থাকবে তার তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতীয় হাইকমিশন। এ বছরের সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো ছাড়াও ১৭ দিন বন্ধ থাকবে ভিসা আবেদন কেন্দ্র।

মিউজিক....

বন্ধুরা, নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, আজ আমরা ভারতের সিকিম ভ্রমণের তথ্য জানাবো।

প্রথমেই চলুন, সিকিম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সিকিম আয়তনের দিক দিয়ে ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য হলেও প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পর্যটন শহর। ভারতের উত্তর পূর্বে অবস্থিত সিকিমকে ঘিরে আছে পশ্চিমবঙ্গ, ভূটান, নেপাল এবং তিব্বত। ৭০০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সিকিমের মোট জনসংখ্যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। সিকিমের বৃহত্তম শহর এবং রাজধানীর নাম গ্যাংটক। বাংলাদেশ থেকে সহজে ও কম খরচে ভ্রমণ করা যায় বলে পর্যটকদের পছন্দের তালিকার । শীর্ষে সিকিমের অবস্থান।

উত্তর সিকিম, পূর্ব সিকিম, দক্ষিণ সিকিম এবং পশ্চিম সিকিম এই চার জেলার সমন্বয়ে গঠিত সিকিম চমৎকার পাহাড়ি ঝর্ণা, গভীর উপত্যকা, ঔষধি গাছের বন এবং সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য পরিপূর্ণ। আলপাইন চারণভূমি, পাহাড়, হিমবাহ ও হাজার বুনো ফুলে ভরা সিকিমের গ্যাংটক ও লাচুংয়ের মতো উপশহরের প্রতিটা জায়গা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। আর, পূর্ব সিকিমের অপার সৌন্দর্যের ধারক সাঙ্গু লেক এই শহরের আরেক বিশেষ আকর্ষণ।

সিকিমের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে গ্যাংটক, পেলিং, লাচুং। আর গ্যাংটক হলো সিকিমের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের মূল কেন্দ্র।

গ্যাংটক

সিকিমের রাজধানী শহর হল গ্যাংটক মূলত পূর্ব সিকিমের অন্তর্গত। যা বর্তমানে তিব্বতীয় বৌদ্ধ কেন্দ্র ও সিকিমের হিমালায়ান শীর্ষ থেকে ট্র্যাকিং করার জন্য হাইকারদের বেজ ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত। এখানের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের মধ্যে তাশি ভিউ পয়েন্ট থেকে কাঞ্চনজংখা ও আসে পাশের পাহাড় দেখা যায়। আর মাত্র ৫০ রুপি দিয়ে ছবি তোলার জন্য ঐতিহ্যবাহী পোশাক ভাড়াও পাওয়া যায়। তিব্বতিয়ান সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা নামগাল ইন্সটিটিউট অফ তিব্বেটোলজি এর জাদুঘরে বিভিন্ন বৌদ্ধ মূর্তি, সন্ন্যাসীদের ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত জিনিস, ধর্মীয় রীতিনীতি, লাইব্রেরি এবং রিসার্চ সেন্টার রয়েছে। ইন্ডিয়ান আর্মির নিয়ন্ত্রণে হনুমানকে উৎসর্গ করে স্থাপিত "হনুমান টক মন্দির"যেখান থেকে পার্বত্য ভ্যালি ও পাহারের সুন্দর ভিউ নজরে পড়ার মতো। আবার বান ঝাকরি ফলস এ সুন্দর ঝর্ণা দেখার সাথে সাথে এডভেঞ্চারেরও অভিজ্ঞতা হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রাণী সম্বলিত সিকিম হিমালায়ান জুলোজিক্যাল পার্ক, রুমটেক মনাস্ট্রি, এনছে মনাস্ট্রি, নাথুলা, রিডজ ফ্লাওয়ার পার্ক, সারামসা গার্ডেন, লহাসা ফলস ও গান্ধী মূর্তি এর মতো দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখতে পারেন। আর গ্যাংটকের ক্যাম্পিং, রোপওয়ে, রাফটিং, ট্র্যাকিং ও হাইকিং এর সুযোগ পর্যটকদের জন্য আরেক বিশেষ আকর্ষণ।

পশ্চিম সিকিমের একটি ছোট শহর পেলিং। স্কাই ওয়াক পেলিং এ পাহাড়ের উপর ঝুলন্ত ৫০ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ব্রিজ দিয়ে মন্দিরে যাওয়ার ভিন্ন অভিজ্ঞতা কোন এডভেঞ্চারের চেয়ে কম নয়। রিম্বি নদীর পাশের রিম্বি অরেঞ্জ গার্ডেনে। এলাচ, কমলা, কাঠ বাদাম ও কমলার গাছ দেখতে পারবেন, জনপ্রতি এখানে এন্ট্রি ফি ১০ রুপি। কানজঙ্গা ফলসের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে অনেকেই এখানে আসেন। আবার রাবন্তেসে রুইন্স এর মতো ঐতিহাসিক জায়গায় ২৫ রুপির বিনিময়ে ট্র্যাকিং করতে পারবেন। পশ্চিম সিকিমের প্রায় ৩০০ বছর পুরনো সুন্দর পেমায়াংতসে মোনাস্ট্রির স্থাপত্যশৈলীও পর্যটকদের বেশ আকর্ষণ করে।

লাচুং

উত্তর সিকিমের অন্তর্গত তিব্বেতিয়ান বর্ডারের কাছে অবস্থিত লাচুং গ্রাম নদী দিয়ে বিভক্ত। গ্যাংটক থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই গ্রামে যেতে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। চারপাশের অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশ ও ইয়ামথাং ভ্যালি যাবার পথে তিস্তা নদীর স্বচ্ছ নীল পানি ও দুইটি অসাধারণ ঝর্না মনকে প্রশান্তি এনে দেয়। ইয়ামথাং ভ্যালি থেকে দূরের পাহাড়ে বরফের সন্ধান পাবেন। এখানে আপেল বাগান দিয়ে ঘেরা ১৯ শতকের বৌদ্ধ লাচুং মঠ রয়েছে। এ ছাড়া সিকিমের সুইজারল্যান্ড হিসেবে পরিচিত কাটাও মিডিল পয়েন্টথেকে সাদা বরফে ঢাকা পাহাড়ের সুন্দর ভিউ দেখা যাবে। এখানে আরও আছে ভিম নালা ফল, খান্দা ওয়াটার ফলস এবং ট্র্যাকিং করার জন্য স্নো পয়েন্ট।

সাঙ্গু লেক

গ্যাংটক থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব সিকিমে অবস্থিত। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩,৭৫৩ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই বরফের হ্রদ সিকিমের অন্যতম একটি পর্যটন স্থান। এই লেকের প্রকৃত সৌন্দর্য ভাষায় বা লিখেও প্রকাশ করা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়। বিশেষ করে গ্যাংটক থেকে সাঙ্গু লেকে যাওয়ার রাস্তাটি অদ্ভুত সুন্দর। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এখানের আবহাওয়া, যত উপরের দিকে যাওয়া যায় ঠাণ্ডা ততই বাড়তে থাকে। স্নো ফলের মধ্যে বরফ দিয়ে খেলা করার প্রকৃত মজা এখানে না আসলে কখনোই বোঝা যাবে না।

ইয়ুকসোম

পশ্চিম সিকিমের একটি ঐতিহ্যবাহী শহর যেখানে কাঞ্চনজঙ্খা ঝর্না, ছোট ছোট লেক ও বৌদ্ধ মন্দির আছে। হাইকিং করার ও সুযোগ আছে এখানে।

ইয়ামথাং

ভ্যালি সাধারনত ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারস নামেও পরিচিত। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে জুনের মধ্য সময়ে বিভিন্ন রঙের ফুলে পুরো উপত্যকা ঢেকে থাকে।

এ ছাড়া লাচেন এর মনাস্ট্রি, রাভাংলা-এর বৌদ্ধ পার্ক, রালাং মনাস্ট্রি, সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট, নামছি এর হিলটপ মনাস্ট্রি, চার ধাম টেম্পল, কাঞ্চনজংখা ন্যাশনাল পার্ক, ৮,০০০-১২,০০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্ক, আরিতার লেক ও ঋষি খোলা ফলস পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থান।

এবার সিকিম ভ্রমণের সময় নিয়ে কিছু কথা বলি:

ফেবরুয়ারীর শেষ থেকে মে এবং সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সিকিম যাওয়ার সবচেয়ে আদর্শ সময়। শীতকালে বরফে রাস্তা বন্ধ থাকার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়া উত্তর সিকিমে সারা বছরই ধস নামে, আর বর্ষায় সিকিমের অনেক জায়গাতেই যাওয়া যায় না। দক্ষিণ ও পশ্চিম সিকিম এবং গ্যাংটক সারা বছরই যাওয়া যায়।

এবার সিকিম ভ্রমণে প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ দেবো।

• পাসপোর্ট, ভিসা ও সিকিম ভ্রমণের অনুমতি পত্রের অন্তত ১০ থেকে ১২টি ফটোকপি এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাথে রাখুন।

• সিকিম ভ্রমণে বিভিন্ন পর্যায়ে দালালের উপদ্রবের বেপারে সচেতন থাকুন। বিশেষ করে শিলিগুড়ির দালালদের থেকে কোন ভ্রমণ প্যাকেজ নেয়া থেকে বিরত থাকুন।

• বর্ডার থেকে প্রয়োজনীয় মানি এক্সচেঞ্জ করে নিন, অন্যান্য জায়গার চেয়ে ভালো রেট পাওয়া যায়।

• ট্র্যাভেল ট্যাক্স ঢাকা থেকেই জমা দিয়ে দিন এতে সময় বাঁচবে।

• সিকিমের অধিকাংশ মন্দির ও জাদুঘরে ছবি তোলা নিষেধ তাই এই ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখবেন।

• ট্র্যাকিং করতে চাইলে ভালো গ্রিপের জুতা বা কেডস সাথে নিন।

• সিকিম ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাথে শীতের পশমি ভারি কাপড়, জ্যাকেট, ছাতা, হাত ও পা মোজা, মাফলার, কান টুপিও বরফে ঢাকা রাস্তায় হাঁটার জন্য অবশ্যই গাম বুট সাথে নিবেন।

• গ্যাংটকে রাত ৯টার পর দোকানপাট ও রেসটুরেন্ট বন্ধ হয়ে যায়।

• ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে প্যাকেজ নেওয়ার সময় খাবার ও হোটেল সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য জেনে নিন।

• শীতের সময় কাঠের হোটেল গুলোতে তুলনামূলক ঠান্ডা বেশি লাগে।

• নর্থ সিকিমে যেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ট্রাভেলিং এজেন্সির মাধ্যমে যেতে হবে। গরুপে যেতে চাইলে আগে থেকেই গরুপ করে ফেলুন।

• গ্যাংটক থেকে বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটে যেতে প্রতিবার অনুমতি নিতে হয়।

• গ্যাংটকে রোপওয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চালু থাকে।

• বুধবার থেকে রবিবার নাথুলা যাওয়া যায়।

• নর্থ সিকিমের 'কাটাও' বাংলাদেশিদের ভ্রমণের জন্য অনুমোদিত নয়। তবে সময় থাকলে গাড়ির ড্রাইভারদের সহায়তায় কাটাও ভ্রমণ করতে পারবেন।

• গ্যাংটকে পাব্লিক প্লেসে ধূমপান, আবর্জনা এবং থুথু ফেলা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

• সিকিমে বিদেশি পর্যটকদের জন্য অবাধ প্রবেশে বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই পর্যটকদেরকে একটি সংরক্ষিত অঞ্চলের অনুমতিপত্র বা আর.এ.পি. নিয়ে যেতে হয়।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040