ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বক্তৃতাকালে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের জনগণকে এই পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, চীনে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক এবং কোন চীনা নাগরিক বাংলাদেশে এখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি।
'তাই বাংলাদেশের জনগণের আতংকিত হওয়ার কিছুই নেই; তবে তাদেরকে সচেতন থাকতে হবে,' তিনি যোগ করেন।
সবাইকে গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'সাধারণ মানুষকে সতর্ক হতে দিন, তবে আতঙ্ক সৃষ্টি করবেন না।'
'এ ভাইরাস প্রতিরোধে চীন সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে পশ্চিমা দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম এ নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। যা ঠিক নয়,' তিনি বলেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৮ হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই নববর্ষের ছুটিতে চীন গেছেন। এখন তাদের ফিরতে কিছুটা দেরি হতে পারে। সে কারণে প্রকল্প শেষ হতে এক থেকে দুই মাস সময় বেশি লাগতে পারে।
তবে করোনাভাইরাসের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন চীনা এই কূটনীতিক।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়া 'মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া' দেখাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন এসব দেশের কিছু গণমাধ্যম এমনভাবে সংবাদ পরিবেশন করছে যেন চীনের মানুষ ও সব চীনা পণ্যই ভাইরাস। কিছু গণমাধ্যমতো তারচেয়েও অগ্রসর হয়ে করোনাভাইরাসকে চীনে 'উৎপাদিত' বলে উল্লেখ করছে।
তিনি আরও বলেন করোনাভাইরাস নিয়ে এসব দেশ মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখালেও অতীতে ইবোলা, ও সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসে যে পরিমাণ লোক আক্রান্ত হয়েছে, সেই তুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা খুবই কম।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রে কেবল ফ্লু'তে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর কী পরিমাণ মানুষ মারা যায় সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
তিনি বলেন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ফ্লু'তে আক্রান্ত হয়ে ৩৩ হাজার মানুষ মারা গেছেন। গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে এ বছরের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ফ্লু'তে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ মিলিয়ন মানুষ এবং মৃত্যু বরণ করেছেন ৮ হাজারেরও অধিক।
সংবাদ সম্মেলনে চীনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হৌলং ইয়ান উপস্থিত ছিলেন।
###
মোঃ এনামুল হাসান, ঢাকা।