গতকাল (বুধবার) 'নভেল করোনা ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সাসংক্রান্ত পরীক্ষামূলক প্রস্তাব (পঞ্চম সংস্করণ)' প্রকাশ করে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন ও জাতীয় চীনা ওষুধ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো। প্রস্তাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত সাধারণ রোগীদের ক্লিনিকেল ব্যবস্থা তুলে ধরা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ব্যবস্থা ভাইরাস সংক্রমণের উত্স ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। 'ভাইরাসে আক্রান্ত অথচ শরীরে কোনো উপসর্গ নেই—এমন ব্যক্তিরা রোগ ছড়াতে পারেন কি না' শীর্ষক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ব্যক্তি থেকে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম; এতে আতঙ্কিত হবার দরকার নেই। এদিন প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহজনক রোগীদের সংখ্যা স্পষ্টভাবে কমেছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট প্রধান জানান, এর অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিত করার দক্ষতা বৃদ্ধি। এর ফলে রোগীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ায় অনেক সময় সাশ্রয় হয়েছে।
এই ভাইরাসের চিকিত্সা সম্পর্কে আগে প্রকাশিত চতুর্থ সংস্করণের তুলনায় এবারের পঞ্চম সংস্করণে তিনটি বিষয় উল্লেখ করে সংশোধিত হয়েছে। এর মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভাইরাসে আক্রান্ত সাধারণ রোগীদের ক্লিনিকেল ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ সম্পর্কে এদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় পরিষদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের চিকিত্সা ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর পর্যবেক্ষক কুও ইয়ান হুং বলেন,
'প্রথমত, মহামারীর বৈশিষ্ট্য আরও স্পষ্ট হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ক্লিনিকেল ব্যবস্থা থেকে এর উপসর্গ প্রমাণিত। তৃতীয়ত, ক্লিনিকেল ব্যবস্থার সাহায্যে ত্রাণকাজের মান অনেক উন্নত হয়েছে'।
পঞ্চম সংস্করণের প্রস্তাব অনুযায়ী, ভাইরাসে আক্রান্ত সাধারণ রোগীর শরীরে নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা যায়নি। চীনের জাতীয় চিকিত্সা বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য এবং বেইজিং 'তি থান' হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগের চিকিত্সা ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিশেষজ্ঞ লি সিং ওয়ানং বলেন, এবারের ক্লিনিকেল ব্যবস্থা নভেল করোনা ভাইরাসের উত্স সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'এই ব্যবস্থার দুটো উদ্দেশ্য রয়েছে। এক, কিছু রোগীকে আলাদা কক্ষে রাখা। দুই, রোগীর মৌলিক বৈশিষ্ট্য আরও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা'।
'ভাইরাসে আক্রান্ত অথচ শরীরে উপসর্গ নেই—এমন লোকেরা সংক্রামক রোগের উত্স হবে কি না' শীর্ষক আলোচনায় চীনের জাতীয় চিকিত্সা বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য এবং বেইজিং 'তি থান' হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিভাগের চিকিত্সা ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিশেষজ্ঞ লি সিং ওয়ানং বলেন, এমন রোগীদের শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকে। এগুলোর ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাও কম। সুতরাং, এটি নিয়ে জনগণের ভয় পাওয়ার দরকার নেই। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের যাদের শরীরে কোনো উপসর্গ নেই, তার গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, রোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে না গেলে, হালকা কাশির ব্যাপারে কোনো ভয় পাওয়ার দরকার নেই।'
এদিন জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের সংশ্লিষ্ট প্রধান আরও বলেন, নভেল করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানাশোনা যত বাড়বে, এর চিকিত্সা-ব্যবস্থাও তত সুসংহত হবে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)