'প্রথমত, রোগীদের নেতিবাচক মেজাজ গ্রহণ করতে হবে; তাদের অনুভূতি বুঝতে হবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে যে, এ রোগ চিকিত্সায় ভালো হয়। চিকিত্সকদের উচিত এসময় রোগীদের মনে আশার সঞ্চার করা। আরেকটি ব্যাপার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকর ওষুধ নেই। তাই রোগীদের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ ভাইরাস প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে হবে। আমরা জানি, মানুষের শরীরের রোগ-প্রতিরোধক ব্যবস্থা মানসিক অবস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। শক্তিশালী মানসিক অবস্থা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। আশা ও দৃঢ় মনোভাব শরীরের রোগ-প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে। তাই ইতিবাচক মানসিকতা রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।'
বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকেও আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। কারণ, রোগীদের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে; তারাও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। এ অবস্থায় রোগীরা স্বজনদের নিয়েও উদ্বেগে ভোগেন। এ সম্পর্কে অধ্যাপক চিয়াং বলেন,
'করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ না-হলেও, আক্রান্তদের মনে অপরাধবোধ জাগতে পারে। তারা মনে করতে পারেন যে, স্বজনদের বর্তমান অবস্থার জন্য তারাই দায়ী। তাদের মনে স্বজনদের জন্য উদ্বেগও কাজ করে। তাই আমরা এমন লোকদের মধ্যে বিশেষ জরিপ চালাচ্ছি। কয়েক দিনের মধ্যে অনলাইনে এই জরিপ করা হবে। জরিপ থেকে রোগীদের মানসিক অবস্থা বা চাপ সম্পর্কে জানা যাবে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মানসিক অবস্থা অনুযায়ী পরামর্শ দেওয়া হবে। কেউ কেউ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়তে পারেন। আমরা তাদের জন্য বিশেষ টেলিফোন লাইন চালু করেছি। তারা ফোনে আমাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন।'
হাসপাতালে ব্যস্ততার মধ্যে চিকিত্সকরাও নতুন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এবং বড় মানসিক চাপের সম্মুখীন হন। রোগীদের যত্নে তারা নিরলস প্রচেষ্টা চালান। চিকিত্সকদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষাও অনেক জরুরি। তবে তাদের মানসিক সমস্যা সাধারণত উপেক্ষা করা হয়। এ সম্পর্কে অধ্যাপক চিয়াং বলেন, যত দ্রুত সম্ভব চিকিত্সকদের মানসিক অবস্থা উন্নত করতে হবে এবং তাদেরকে যথেষ্ট বিশ্রাম দিতে হবে। তিনি বলেন,
'বর্তমানে চিকিত্সকদের সামনে বড় সমস্যা নিজেদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা। তারা নিয়মিত উত্তেজনাময় ও উদ্বিগ্ন অবস্থায় থাকেন এবং নিজেদের স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেন। তাদের কাজের চাপ বেশি। বিশেষ করে গুরুতর রোগীদের সাথে সহাবস্থানকালে তাদের মানসিক সমস্যা আরও বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। তাই যথাযথভাবে তাদের চাপ কমিয়ে দিতে হবে এবং তাদের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। এভাবে তাদের মানসিক অবস্থা উন্নত ও কার্যকরভাবে প্রশমন করা সম্ভব।' (সুবর্ণা/আলিম/আকাশ)