আমি সবসময় স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করি তাদের দৈনন্দিন জীবন কেমন? ৩৪ বছর বয়সী উইঘুর নারী মেহেরবা আবদুল ইয়িমু সিনচিয়াংয়ের কিতাই কাউন্টির চীনা মেডিসিন হাসপাতালের আকুপাংচার বিভাগের একজন নার্স। এই হাসপাতালে হান, উইঘুর, উজবেক, কাজাখ এবং হুই জাতীয়তার চিকিত্সক ও নার্সরা সারা বছর একসাথে কাজ করে, তাদের শিশুরাও একসাথে স্কুলে যায় এবং সব জাতির মানুষ একত্রে বাস করে। মেহেরবা বলেছিলে যে, সহকর্মীরা প্রায়শই একত্রিত হন।
লি ডিয়ান সিনচিয়াংয়ের আলতায় একটি হান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রতিবেশীরা মূলত কাজাখ। উচ্চ বিদ্যালয়ে, হান ও জাতিগত সংখ্যালঘুর বাচ্চারা রেডিও জিমন্যাস্টিকের সময় একসাথে একটি কাজাখ নৃত্য "ব্ল্যাক হর্স" নাচতো। লি ডিয়ান মনে করেন, নাচ তার আশাবাদ ও প্রফুল্ল মনোভাব এবং তার সরল চরিত্র তৈরি করেছে। একজন কাজাখ মেয়ে মারজান বলেন, কাজাখরা বিয়ে করলে ব্ল্যাক হর্স নাচবে। অতিথিদের যোগদানের আগে প্রথমে বর ও কনে নাচে। আমরা খুব ছোট থেকেই আত্মীয় এবং বন্ধুদের বিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নিতাম। বাবা মার মতো লাফিয়ে নাচতে পারি, তেমন কিছু শেখার দরকার নেই।
নাচ তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাজাখিদের ঘোড়ার প্রতি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে। আলপাইন ও তাজিক ঈগল পছন্দ করে তারা। ঈগল তাদের মনে স্বাধীনতার প্রতীক।
প্রতিবেদক: এর আগে আমি টিভিতে যে কণ্ঠশিল্পী ও নৃত্যশিল্পীদের দেখেছি তারা তরুণী ও সুন্দরী ছিল, সিনেমার তারকাদের মতোই দুর্দান্ত। এবার আমরা যে নৃত্যশিল্পীদের দেখেছি তাদের বেশিরভাগের বয়স প্রায় ৫০ বছর! তারা মঞ্চে প্রাণবন্ত, আত্মবিশ্বাসী ও সুন্দরী। তাদের নাচ দেখতে দেখতে হঠাৎ আমার চোখে অশ্রু চলে আসে। নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছার পর আগের জীবনকে বিদায় জানানোর নিয়মটি কে তৈরি করেছে?
উইঘুররা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নাচতে পারে।
উইঘুরে একটি প্রবাদ আছে: "কেবল গোবি মরুভূমি পার হয়েই মরূদ্যানে পৌঁছানো যায়।" গুরুতর প্রাকৃতিক পরিবেশে শুধু একে অপরকে যত্ন নেওয়ার মাধ্যমেই মরুভূমির মানুষ একসাথে বেঁচে থাকতে পারে। এটি তাদেরকে মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অনুভূতি ও অতিথিপরায়ণ করে গড়ে তুলেছে। যখন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না তখন সংগীতের মাধ্যমে একাকীত্ব, দুঃখ, নির্জনতা ও অন্যান্য জটিল আবেগ প্রকাশ করা যায় এবং বেদনাদায়ক মেঘগুলি তখন ছত্রভঙ্গ হয়। প্রতিটি গান ও নাচের নির্দেশনায় আমি সিনচিয়াংয়ের লোকদের আরও বেশি করে বুঝতে শুরু করি। এই অভিব্যক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে তাদের জীবনের প্রতি ভালবাসা ও বিভিন্ন জাতির লোকদের সহাবস্থান।