১. অবশেষে চীনকে 'কারেন্সি ম্যানিপুলেটর' নয় বলে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদনে বলেছে, চীন মুদ্রার বিনিময়হার নিয়ন্ত্রকদেশ নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরে মন্ত্রণালয় চীনকে পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু চীন মুদ্রার বিনিময়হার নিয়ন্ত্রণ করছে বলে কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
এক বিবৃতিতে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুচিনও একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা থেকে চীন বিরত আছে এবং এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করেছে।
এদিকে, অর্থনীতিবিদ মার্ক সোবেল এক টুইটার-বার্তায় যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক চীনকে 'কারেন্সি ম্যানিপুলেটর নয়' বলে দেওয়া স্বীকৃতিকে 'ভালো খবর' বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, এতোদিন চীনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে 'কারেন্সি ম্যানিপুলেটর' বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত অগাস্টে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় চীনকে 'কারেন্সি ম্যানিপুলেটর' বলে চিহ্নিত করে। মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরে ও বাইরে তীব্রভাবে সমালোচিত হয়।
২. চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের 'সরকারি কর্ম-প্রতিবেদন, ২০২০' অনুসারে, ২০১৯ সালে সিনচিয়াংয়ের হতদরিদ্রদের অবস্থার উন্নয়নে ৩৭৫৭ কোটি ইউয়ান বিশেষ বরাদ্দ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত এক বছরে সিনচিয়াংয়ে আবাসন ও নিরাপদ পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়। এতে ৯ হাজার ৩৫৫টি দরিদ্র পরিবার দারিদ্র্যমুক্ত হয়। দরিদ্রদের আবাসন সমস্যারও পুরোপুরি সমাধান হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালে সিনচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বাকি এক লাখ ৬৫ হাজার দরিদ্র মানুষ সময়মতো দারিদ্র্যমুক্ত হবে। পাশাপাশি, ৫৬০টি দরিদ্র গ্রাম ও ১০টি দরিদ্র জেলাও দারিদ্র্যমুক্ত হবে।
৩. ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সিনচিয়াংয়ে প্রায় ৩০,০০০ পরিবারিক ডাক্তার মোট ৭১ লাখ ৩০ হাজার লোককে চিকিত্সাসেবা দিয়েছে।
২০১৬ সাল থেকে সিনচিয়াং সার্বিক স্বাস্থ্য প্রকল্প বাস্তবায়নকাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর বিনামূল্যে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন বাসিন্দারা। এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৭ কোটি স্বাস্থ্য-পরীক্ষা হয়েছে। প্রকল্পে মোট ৮৩০ কোটি ইউয়ান বিনিয়োগ করা হয়।
৪. তিব্বতে শহরাঞ্চলের লোকসংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে চীনের এই বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের শহরাঞ্চলের লোকসংখ্যা ১০ লাখ ৭০ হাজারের বেশি। সম্প্রতি তিব্বতের এক কর্মসভায় এ তথ্য প্রকাশ কর হয়।
কর্মসভায় তিব্বতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, ভবিষ্যতে শহরাঞ্চলের অবকাঠামোব্যবস্থা ও উন্মুক্ত স্থাপনাগুলো আরও উন্নত এবং নগরায়ণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হবে।
উল্লেখ্য, নগরায়ণ ত্বরান্বিত করা ও বৈশিষ্ট্যময় জেলা উন্নয়নের জন্য তিব্বতের ২৬টি জেলায় ৮৬০ কোটি ইউয়ান বিনিয়োগ করা হয়েছে।
৫. ২০১৯ সালে চীনের ইনার মঙ্গোলিয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ৫.৫ শতাংশ, যা আগের বছরের চেয়ে ০.২ শতাংশ বেশি। সম্প্রতি এই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ত্রয়োদশ গণকংগ্রেসের তৃতীয় অধিবেশনে পেশ করা এক সরকারি কর্মপ্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালে ইনার মঙ্গোলিয়ায় স্থাবর সম্পত্তিতে বিনিয়োগ বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে অঞ্চলটির শহর ও গ্রামের মানুষের মাথাপিছু ব্যয়যোগ্য আয় বেড়েছে যথাক্রমে ৬.৫ ও ১০ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালে ইনার মঙ্গোলিয়ার শহরাঞ্চলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে দুই লাখ ৬৩ হাজার। সে বছর শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার নেমে দাঁড়ায় ৩.৭ শতাংশে।
এদিকে, চলতি বছর ইনার মঙ্গোলিয়ার জিডিপি ৬ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছর অঞ্চলটির শহরাঞ্চলে প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
৬. ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মিসরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ৫.৬ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ০.৩ শতাংশ বেশি।
সরকারি ওয়েবসাইটের প্রকাশিত তথ্যানুসারে, কয়েকটি সেক্টরে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়ায় দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সবচেয়ে ভালো করেছে টেলিযোগাযোগ খাত।
প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মিসরের টেলিযোগাযোগ খাতে ১৬.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। আর কৃষি ও শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় যথাক্রমে ৩.৩ ও ২.৮ শতাংশ।
ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগও দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারি হিসাব অনুসারে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে ২৭.৯ শতাংশ।
এদিকে, ২০১৯ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে মিসরে বেকারত্বের হার কমে দাঁড়ায় ৭.৮ শতাংশে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০ শতাংশ। আর ২০১৯ সালে শহরাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.২ শতাংশ, যা আগের বছরে ছিল ১৪.৪ শতাংশ।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে পর্যটন খাতে রাজস্ব ২৮.৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১২৬০ কোটি মার্কিন ডলারে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৯৮০ কোটি মার্কিন ডলার।
এদিকে, ২০১৯ সালের শেষ দিক পর্যন্ত মিসরের বিদেশি মুদ্রার মজুত ৬.৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫৪২ কোটি মার্কিন ডলারে, আগের বছরে যা ছিল ৪২৫৫ কোটি মার্কিন ডলার।
৭. ২০১৯ সালে ইসরাইলের পণ্য-রফতানি ৪.৮ শতাংশ কমেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ সালে দেশটি পণ্য রফতানি করেছে ৫৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। এ বছর দেশটির পণ্য-আমদানিও কমে ০.৯ শতাংশ।
৮. রফতানির গতি কমে আসায় চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)-তে প্রবৃদ্ধি ৭.২ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্ভাবাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৮.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, যা ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। মূলত রফতানি-আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবৃদ্ধিও অনেক বেশি হয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরের শুরুতে রফতানি আগের চেয়ে কমেছে।
৯. গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৫.৭৫ শতাংশে, যা আগের মাস নভেম্বরে ছিল ৬.০৫ শতাংশ। তবে এ সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমলেও, কিছুটা বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, মূলত খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমে আসায় সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। বিবিএস-এর তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৫.৮৮ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.৪১ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ৫.৫৫ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৫.৪৭ শতাংশ।
বিবিএস-এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাকসবজি যেমন—বেগুন, শিম, গাঁজর, শসা, টমেটো, ফুলকপি, লাউ, পেঁয়াজ ও আদার মূল্য নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে কিছুটা কমে আসে। ডিসেম্বরে গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৫.৭৬ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.০১ শতাংশ। আর শহর পর্যায়ে ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫.৭৩ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৬.১২ শতাংশ।
১০. ২০২০-২১ অর্থবছরে পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৫০০০ কোটি মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।
সম্প্রতি সচিবালয়ের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান। 'জাতীয় বস্ত্র দিবস' এবং আগামী ৯ থেকে ১১ জানুয়ারি বহুমুখী বস্ত্র মেলাকে কেন্দ্র করে এই সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এসময় বস্ত্রসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ৯ জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী এই বস্ত্র মেলার উদ্বোধন করবেন। বস্ত্রখাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষ সাধন ও রফতানি বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৯টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে মেলায় সম্মাননা প্রদান করা হবে।
সচিব বলেন, অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনায় বস্ত্রখাত দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। এ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে বস্ত্র শিল্পখাতকে স্থিতিশীল রাখার কার্যক্রম গ্রহণ ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা প্রদান করে আসছে সরকার।
১১. বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। একদিকে সরকারি খাতে বেশি ঋণ যাচ্ছে, অন্যদিকে আগে বিতরণ হওয়া ঋণ আদায় হচ্ছে না। এতে ওই সব খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনও রাখতে হচ্ছে। এর ফলে মূলধন ঘাটতিতে পড়ছে ব্যাংকগুলো। ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুসারে, খেলাপি ঋণ কমাতে দেদার ঋণ পুনঃতপশিল করছে বেশিরভাগ ব্যাংক। এরপরও তা না-কমে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এর প্রভাবে মূলধন-ঘাটতি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে ১২টি ব্যাংক। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরশেষে এসব ব্যাংকের প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার মূলধন-ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ হিসাবের তিন মাস আগেও ব্যাংকিং খাতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার কম মূলধন-ঘাটতি ছিল।
(আলিমুল হক)