একই দিন প্রেসিডেন্ট সি সফররত লাওসের প্রধানমন্ত্রী থোংলোন সিসাউলিথের সঙ্গে বৈঠক করেন।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ হিসেবে কিরিবাতি চীনের সঙ্গে ১৬ বছর ধরে বিচ্ছিন্ন থাকা কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করে।
২০২০ সালের শুরুতে কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট তানেতি মামাউ নতুন বছরে নিজের প্রথম সফরে বেইজিংয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠককালে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, প্রেসিডেন্ট মামাউ ও কিরিবাতি সরকার সঠিক অবস্থান নিয়েছে। এতে কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক সাহস প্রতিফলিত হয়। চীন এর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে। তিনি প্রেসিডেন্ট মামাউকে লক্ষ্য করে বলেন,
"আপনার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পেরে আমি খুব খুশি। নববর্ষের শুরুতে চীনে আপনাকে স্বাগত জানাই। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চীন ও কিরিবাতি 'একচীন নীতি'র ভিত্তিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করে এবং দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে নতুন অধ্যায় উন্মোচন করে। কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ও বিভিন্ন পর্যায়ে দু'দেশের সহযোগিতা ও বিনিময় প্রাণবন্তভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক অগ্রগতিও অর্জিত হয়েছে। বাস্তবতা থেকে প্রমাণিত হয় যে, দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা দু'দেশের জনগণের অভিন্ন স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং দু'দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎঅত্যন্ত উজ্জ্বল।"
প্রেসিডেন্ট সি আরও বলেন, দু'দেশের পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা গভীরতর করা উচিত। বড় বা ছোট, চীন সকলের সঙ্গে সমান আচরণ করার নীতিতে অবিচল থাকবে। চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে চলছে এবং কখনও আধিপত্যবাদ অনুসরণ করবে না। কিরিবাতিতে পুঁজি বিনিয়োগ করতে আরো বেশি চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উত্সাহ দিয়ে যাবে বেইজিং।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মামাউ বলেন, কিরিবাতি নানা হস্তক্ষেপ উপেক্ষা করে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেয়। চীনের ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন,
"আমি খুব খুশি এ কারণে যে, আমার এই সফরকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের স্বার্থে আমরা ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল স্বাক্ষর করবো, যা দু'দেশ ও দু'দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।"
দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা জোরদার করতে এবং কিরিবাতির মতো মাঝারি ও ছোট আকারের উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট মামাউ। চীনের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক, পুঁজি বিনিয়োগ, পর্যটন, মত্স্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করার প্রতাশ্যাও ব্যক্তি করেন তিনি।
বৈঠকের পর দু'নেতা 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়াসহ বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক দলিলের স্বাক্ষর উপস্থিত থাকেন।
।
তা ছাড়া, প্রেসিডেন্ট সি গণমহাভবনে লাওসের প্রধানমন্ত্রী থোংলোন সিসাউলিথের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠককালে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব এবং সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা হলো চীনের রাজনৈতিক চরিত্র। দু'দেশের উচিত হাতে হাত রেখে উচ্চ পর্যায়ের বিনিময়ের ঐতিহ্য বজায় রাখা, দেশ-প্রশাসনের অভিজ্ঞতা বিনিময় জোরদার করা, এবং দু'দেশ ও উন্নয়নশীর দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ সুরক্ষা করা। (লিলি/আলিম)