চলতি বছর চীন ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দু'দেশের সরকার ৭০টি অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। এবারের বইমেলা চলাকালে চীন ও ভারতের প্রকাশকেরা চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী কেন্দ্র করে প্রকাশনা খাতে সাংস্কৃতিক বিনিময় করেন। ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূত সুন উই তোং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন,
'আমি খুব খুশি যে, নতুন বছরের শুরুতে দু'দেশের প্রকাশনা মহলের সহযোগিতামূলক অংশীদার তুলে ধরতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। এর মাধ্যমে চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তাই আমি আশা করি, এসব বই চীন ও ভারতের সভ্যতার সংযোগের সেতু হয়ে উঠবে।'
বইমেলায় সাংবাদিকরা দেখেন যে, 'চীনকে পড়া' শিরোনামে বইমেলা এবং চীন-ভারত সাংস্কৃতিক বিনিময়বিষয়ক ছবি প্রদর্শনীর স্থল আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী অঞ্চলে নয়, বরং নয়াদিল্লির বিশ্ব বইমেলা-২০২০য়ের নিজস্ব অঞ্চলে স্থাপন করা হয়েছে। উদ্যোক্তা জানায়, ভারতীয় জনগণ আরও ভালোভাবে চীনকে জানতে পারবেন এই আশায় তারা বিশেষ এ অঞ্চলে তা স্থাপন করেছেন। চীনের প্রদর্শনীস্থলের অবস্থা নিয়ে চীনের প্রকাশকের প্রতিনিধি ওয়াং ই সুয়েন বলেন,
'এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতীয় জনগণ চীনের শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক সাফল্য দেখা ছাড়াও, দু'দেশের প্রকাশনা মহল ও দু'দেশের জনগণের সুদীর্ঘকালীন মৈত্রী নিজ চোখে দেখেছে।'
তিনি আরও বলেন, প্রদর্শনীতে চীনের ৬০টিরও বেশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার ধরনের বই প্রদর্শিত হচ্ছে। দেশ প্রশাসন, চীনের চেতনা, চীনের সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভাষা শেখা, ঐতিহ্যবাহী চিকিত্সা, সাহিত্য ও শিল্পসংক্রান্ত নানা বই বইমেলায় দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে ওয়াং ই সুয়েন বলেন,
'এবারের বইমেলা, ছবি প্রদর্শনী এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের মাধ্যমে চীনের প্রকাশনা ও চীন-ভারত সাংস্কৃতিক বিনিময় ভারতের প্রকাশকদের ওপর আরও সুনির্দিষ্ট ও গভীর প্রভাব ফেলবে। ভবিষ্যতে দু'দেশের মধ্যে উভয়ের জন্য কল্যাণকর সুষ্ঠু ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তৈরি হবে বলে আমি আশা করি।'
জিবিডি নামে ভারতের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কাউশাল গোয়াল বলেন,
'আমরা বরাবরই চীনের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুষ্ঠু সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বজায় রেখে আসছি। এ পর্যন্ত আমরা চীন প্রসঙ্গে শতাধিক ইংরেজি ও হিন্দি ভাষার বই অনুবাদ ও প্রকাশ করেছি। এ ধরনের সুষ্ঠু সহযোগিতা চালানো গেলে, ভারত ও চীনের সাংস্কৃতিক বিনিময়ে আরও বেশি অবদান রাখা যাবে।'
ছবি প্রদর্শনীতে তিন শতাধিক ছবি প্রদর্শিত হয়। এবারের ছবি প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা, পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া কেন্দ্রের অধ্যাপক চিয়াং চিং কুই বলেন,
'বই অনুবাদের মাধ্যমে দু'দেশের পারস্পরিক বিনিময় ও সমঝোতা গভীর হবে। আমাদের আরও শ্রেষ্ঠ বন্ধু, সুপ্রতিবেশী ও অংশীদারের জন্য তা সহায়ক হবে।'
প্রদর্শনীস্থলটি ভারতের পাঠক ও মিডিয়ার উচ্চ পর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আরুশি সিং নামে দিল্লি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী বন্ধুর সঙ্গে বইমেলায় আসেন। তিনি বলেন,
'বই ও ছবির মাধ্যমে আমি সরাসরি চীন সম্পর্কে জেনেছি। ভারত ও চীন সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে আমি আশাবাদী।'
লিলি/তৌহিদ