ম্যাকাও চীনের মূলভূভাগে ফিরে আসার ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠান
  2019-12-23 15:07:58  cri

 


২০ ডিসেম্বর চীনের ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল মূলভূভাগের কোলে ফিরে আসার ২০তম বার্ষিকী পালিত হয়। আজকের অনুষ্ঠানে ম্যাকাওতে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বড় হওয়ার গল্প এবং দেশপ্রেম শিক্ষাদান সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।

১৯৯৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ২০ বছর বয়সী চীন-পর্তুগাল মেয়ে ছে স্যুয়ে ফেন ম্যাকাও চীনের কোলে ফিরে আসার উদযাপনী অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। স্বচোখে চীনের কোলে ম্যাকাওয়ের ফিরে যাওয়ার দৃশ্য দেখা তাঁর জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

ম্যাকাওতে জন্মগ্রহণ করা মেয়ে ছে স্যুয়ে ফেন ছোটবেলা থেকে বারবার পিতার মুখ থেকে একটি কথা শুনেন, তা হল 'তুমি মনে রাখো আমরা চীনা নাগরিক।' মাতৃভূমি ও স্বদেশভূমির ভালোবাসায় তিনি বিদেশে লেখাপড়া শেষ করে ম্যাকাওতে ফিরে আসেন। চীনের কোলে ফিরে আসার আগে ম্যাকাও ছিলো শুধু একটি ছোট শহর, তখন আর্থিক অবস্থা ছিলো দুর্বল এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতিও ছিলো অস্থিতিশীল। তাঁর অনেক আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু তখন ম্যাকাও ত্যাগ করতে চান, তবে পিতা সেখানে থাকতে চান। তখন মাত্র ২০ বছর বয়সী মেয়ের চোখে এ শহরের ভবিষ্যত অনিশ্চিত।

১৯৯৯ সালে গোল্ডেন লোটাস চত্বরের অদূরে একটি পরিবারে এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মেয়ের বাবা মা তাকে ছাই সিয়াও লিন বলে ডাকেন। মেয়ে ছাইয়ের স্মরণে ম্যাকাও একটি সরল, শান্ত ও আন্তর্জাতিক শহর।

মূলভূভাগে ফিরে আসার পর 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থার' নির্দেশ আর চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় ম্যাকাওয়ের অর্থনীতি দ্রুতভাবে উন্নত হয়েছে, স্থানীয় জিডিপি ১৯৯৯ সালের ৫১.৯ বিলিয়ন ম্যাকাও ইউয়ান থেকে ২০১৮ সালের ৪৪৪.৭ বিলিয়ন ম্যাকাও ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে।অবকাঠামো নির্মাণে বরাদ্দ ব্যাপক বেড়েছে, শিল্পজাত কাঠামো সমৃদ্ধ হয়েছে এবং শিক্ষাদান ও নিরাপত্তার প্রশাসনও জোরদার করা হয়েছে।

৩ বছর বয়স থেকে মেয়ে ছাই সিয়াও লিন সংগীত শিখতে শুরু করে। প্রথম দিকে সে ম্যাকাওয়ের অন্যান্য বাচ্চাদের মতো পাশ্চাত্য বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শেখে, পরে নানার প্রভাবে 'কুজেং' নামের তারের বাদ্যযন্ত্রবিশেষ শিখতে শুরু করে।তখন চীনের ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপক স্বীকৃতি পায় নি, তবে মূলভূভাগ ও ম্যাকাওয়ের সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারের সাথে সাথে অনেক পেশাগত সংগীতজ্ঞ ম্যাকাওতে আসেন। চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির উত্তরাধিকারে গুরুত্ব দেয় ম্যাকাও এবং বর্তমানে ঐতিহ্যিক চীনা বাদ্যযন্ত্র শেখা ম্যাকাওয়ের যুবকদের মধ্যে অনেক প্রচলিত হয়ে উঠেছে।

যদিও পিতামাতা মনে করেন, অর্থ বা ব্যবসা-সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা করলে ভালো চাকরি পাওয়া যাবে, তবে মেয়ে ছাই তার প্রিয় লোকসংগীত বাছাই করে বেইজিংয়ের সেন্ট্রাল কনজারভেটরি অফ মিউজকে ভর্তি হন।

 

বেইজিংয়ে আসার পর শুকনো আবহাওয়ায় খাপ খাওয়াতে পারেন না ছাই সিয়াও লিন এবং তাঁর বাদ্যযন্ত্র বাজানোর দক্ষতাও ক্লাসের সহপাঠীদের সাথে অনেক ব্যবধান রয়েছে। তিনি বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে বড় চাপের সম্মুখীন হই এবং প্রতিদিন ৭,৮ ঘন্টা সময় দিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজাই"।

শিক্ষকদের সহায়তায় ধাপে ধাপে তাঁর বাদ্যযন্ত্র বাজানোর দক্ষতা উন্নত হয়ে ওঠে। তাঁর দৃষ্টিতে যদিও বেইজিংয়ে লেখাপড়ার চাপ বেশি, তবে চীনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সংগীত একাডেমিতে ভর্তি হওয়া এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের কাছ থেকে সংগীত শেখা তাঁর জন্য অতি আনন্দের ব্যাপার।

ছাত্রী ছাইয়ের দৃষ্টিতে ম্যাকাও চীনের মূলভূভাগে ফিরে আসার পর স্থানীয় যুবকদের মাতৃভূমির কাছে ব্যাপক ভালবাসা পেয়েছে। ২০ বছরের মধ্যে ম্যাকাও একটি মত্স্য গ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক শহরে রূপান্তরিত হয়েছে। অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নে শহরের নির্মাণও সমৃদ্ধ এবং যুবকদের জন্য সুবিধাজনক নীতিও আরো বেশি হয়েছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের হংকং ও ম্যাকাও বিষয়ক কার্যালয়, ম্যাকাও তহবিল ও ম্যাকাও যুব ফেডারেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় প্রতি বছর সহস্রাধিক ম্যাকাও যুবক দেশ বিদেশ সফর করতে যান এবং বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

ম্যাকাও ও চীনের মূলভূভাগের মাধ্যমিক স্কুলের সাথে বিনিময় এবং নব্যতাপ্রবর্তনের বিনিময় পরিকল্পনা বিভিন্ন প্রদেশে আয়োজিত হয়। চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ও চীনের আন্তর্জাতিক মহাকাশ ও মহাশূন্য মেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সক্ষম ম্যাকাওয়ের যুবকরা, তার মাধ্যমে মাতৃভূমির উন্নয়নের পদক্ষেপ বিস্তারিতভাবে জানতে সক্ষম।

২০১৬ সাল থেকে ম্যাকাও তহবিল 'হাজার প্রতিনিধি পরিকল্পনা'র মাধ্যমে ৩০০০ জনেরও বেশি যুবককে মূলভূভাগে বিনিময়ে পাঠায় এবং ২০১৮ সালে ৪৪টি প্রতিনিধি দলের ১২৯১ জন যুবক চীনের বিভিন্ন শহরে সফর করে।

ম্যাকাও যুব ফেডারেশনের মহাপরিচালক মো জি ওয়ে মনে করেন, বহুমুখী যুব বিনিময় কার্যক্রম ম্যাকাওতে দেশপ্রেমের আবেগের উত্তরাধিকারে সহায়ক হবে।

২০১৯ সালে ম্যাকাও যুব ফেডারেশনের উদ্যোগে ২৫টি প্রতিনিধি দলের ৮০০ জনেরও বেশি ম্যাকাও যুবক প্রতিনিধি মূলভূভাগে বা বিদেশে সফর করতে যান। এ সম্পর্কে মো বলেন, ম্যাকাওয়ের উন্নয়নে ব্যাপক মনোযোগ দেয় চীন সরকার। ম্যাকাওয়ের এমন সাফল্য অর্জন মাতৃভূমির সহায়তায় বাস্তবায়িত হয়েছে, এমন বাস্তবতা যুবকদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।

বর্তমানে ম্যাকাওয়ের যুবকদের শিক্ষা গ্রহণে নানান নীতিমালা চালু হয়েছে। ১৫ বছর মেয়াদী বিনা খরচের বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ২০১৯ সালে ম্যাকাওয়ের জনসাধারণ শিক্ষার খরচ ২০ বছরের আগের চেয়ে ৮ গুণেরও বেশি।

ম্যাকাও উচ্চশিক্ষা ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বর্তমানে ম্যাকাওতে উচ্চবিদ্যালয়ের স্নাতকের পরিমাণ ৯৫ শতাংশেরও বেশি, বিভিন্ন দেশে লেখাপড়া করা ম্যাকাও শিক্ষার্থীদের স্নাতক হওয়ার অর্ধেক বছরের মধ্যে চাকরি পাওয়ার পরিমাণ ৮২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ সম্পর্কে ম্যাকাও উচ্চশিক্ষা ব্যুরোর প্রধান সু চাও হুই বলেন, এ প্রজন্মের যুবকদের জীবনযাপন খুবই সমৃদ্ধ।

বর্তমানে আরো বেশি ম্যাকাও যুবক বিশ্বের মঞ্চে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে

সম্প্রতি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)-র প্রকাশিত ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর পর্যালোচনা প্রকল্পে বিশ্বের ৭৯টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ম্যাকাওয়ের ১৫ বছর বয়সী ছাত্রছাত্রীদের পঠন, গণিত ও বিজ্ঞানের র‍্যাঙ্কিং তৃতীয়, যা ইতিহাসে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জন করেছে। ম্যাকাওয়ের শিক্ষার মান অব্যাহত ও দ্রুতভাবে উন্নত হয়েছে বলে মনে করে ওইসিডি।

ম্যাকাও শ্রম ব্যুরোর উদ্যোগে ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০৪ জন ম্যাকাও যুবক বিশ্বের কারিগরি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। এমন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ যুবকদের পেশা জীবনে আরো বেশি সুযোগ বয়ে আনবে বলে আশা করে স্থানীয় সরকার।

ম্যাকাও শ্রম ব্যুরোর নির্বাচন ও প্রশিক্ষণে ২৩ বছর বয়সী ছেলে ফেং স্যুয়ে চিয়ান ২০১৭ সালে ওয়েবসাইট ডিজাইনের স্বর্ণপদক লাভ করেন এবং ২১ বছর বয়সী স্যু চিয়া ছি ম্যাকাওয়ের ঐতিহ্যিক মিষ্টি 'আঠাল ডালপালা'র নতুন রান্নায় ২০১৯ সালে বিশ্বের বেকিং প্রতিযোগিতার চমত্কার পদক লাভ করেন।

এ সম্পর্কে উচ্চশিক্ষা ব্যুরোর প্রধান সু বলেন, ম্যাকাওয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা বহুমুখী।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসে শিক্ষার্থী ছাই সিয়াও লিন এবং 'এরহু' বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষার্থী ফাং থেং ম্যাকাও আন্তর্জাতিক সংগীত উত্সবে বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন করেন। নিজের জন্মস্থানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়েছে মেয়ে ছাই। বেইজিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে লেখাপড়া করে আরো বড় বিশ্বকে দেখবে বলে আশা করে ছাই।

ম্যাকাওয়ের শিল্প কাঠামোর সমৃদ্ধি আর উন্নয়ন স্থানীয় যুবকদের পেশাগত পরিকল্পনায় বেশি সুযোগ প্রদান করে। ছাই সিয়াও লিনের সহপাঠী ফাং থেং লোকসংগীত শিক্ষাদানের ওপর মনোযোগ দেন। স্নাতক হওয়ার পর ম্যাকাওতে লোকসংগীত বাদ্যযন্ত্রের প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন বলে পরিকল্পনা করেন।

আগামী ২০ বছরে ম্যাকাওয়ের যুবকদের জন্য সুযোগ আরো বেশি থাকবে, স্থানীয় পর্যটন শিল্প উন্নয়নের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের জন্য আরো বেশি সুযোগ তৈরি করবে বলে কামনা করেন জনাব মো চি ওয়ে।

২০ বছর পর ২০ বছর বয়সী মেয়ে থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তায় পরিণত হয়েছেন ম্যাডাম ছে স্যুয়ে ফেন। মাতৃভূমির প্রতি স্বীকৃতি ও ভালোবাসা তাঁর শক্তি। ভবিষ্যতে ম্যাকাও ও মাতৃভূমির উন্নয়নে অবদান রাখবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ম্যাকাওতে দেশপ্রেম শিক্ষা গ্রহণ

প্রতি সপ্তাহের সোমবার সকালে ম্যাকাওয়ের হাওচিয়াং মাধ্যমিক স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। 'জাতীয় পতাকা উত্তোলন করো! জাতীয় সংগীত বাজাও'! স্কুলের শিক্ষকের নির্দেশ অনুসারে জাতীয় পতাকা ধীরে ধীরে উত্তোলন করা হয়।

১৯৪৯ সালের পয়লা অক্টোবর ম্যাকাওয়ে প্রথম চীনের পতাকা উত্তোলন করেন স্কুলের প্রবীণ প্রেসিডেন্ট তু লান। তখন থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান অব্যাহতভাবে আয়োজিত হয়।

বর্তমানে ম্যাকাওয়ের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে প্রতি সোমবার জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উত্সব বা দিবসে স্কুলে জাতীয় পতাকা উড়ানো হয়। জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় প্রতীক চেনাসহ বিভিন্ন দেশপ্রেম-বিষয়ক শিক্ষাদান ম্যাকাওতে চালু হয়েছে।

বিভিন্ন নীতিমালা সঠিকভাবে বোঝার জন্য স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ মূলভূভাগের সাথে পাঠ্যপুস্তক রচনা করে। যেমন- 'নৈতিকতা ও নাগরিক' নামের বই প্রাথমিক স্কুল থেকে উচ্চবিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ানো হয়, প্রকাশনার সংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পায় এবং ম্যাকাওয়ের অধিকাংশ স্কুলে তা ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া, ম্যাকাওয়ের মাধ্যমিক স্কুল ও উচ্চবিদ্যালয়ে চীনের ইতিহাস সম্পর্কে ক্লাস স্থাপন করা হয়েছে, যাতে চীনের ইতিহাস সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারে শিক্ষার্থীরা।

২০১৮ সালে চীনের শিক্ষামন্ত্রী ছেন বাও শেং প্রতিনিধি দল নিয়ে ম্যাকাওতে সফর করেন এবং ম্যাকাওয়ের ৭৭টি স্কুলের কাছে 'আমি চীনের সন্তান', 'প্রাচীন কবিতা ও কথা' এবং 'চীনা অক্ষর শেখা'সহ বিভিন্ন বই প্রদান করেন।

এ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী ছেন বলেন, এমন লেখার মাধ্যমে চীনের সুন্দর পাহাড় ও নদী এবং রীতিনীতি অনুভব করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। ম্যাকাওয়ের যুবকরা মাতৃভূমির সংস্কৃতি ও ইতিহাস জানার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে পারবে এবং চীনা সংস্কৃতিও উত্তরাধিকার করতে পারবে।

ম্যাকাওয়ের শিক্ষা মহল চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতির সম্প্রচারে মনোযোগ দেয়। শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে চীনের ইতিহাস ও সংস্কৃতি জানার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে মাতৃভূমিকে জানতে সক্ষম। অনেক স্কুলে ঐতিহ্যিক হস্তলিপি ক্লাস,চীনা ভাষার ক্লাসে প্রাচীন কবিতা আবৃত্তি এবং চীনা মার্শাল আর্টসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

ম্যাকাওয়ের চিয়াওইয়ে মাধ্যমিক স্কুলে হস্তলিপি ক্লাস স্থাপিত হয়েছে, এ ক্লাস স্কুলের বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের হস্তলিপি প্রতিযোগিতায় পদক অর্জন করে। এ সম্পর্কে স্কুলের প্রেসিডেন্ট হো ছেং বলেন, দীর্ঘকাল ধরে হস্তলিপি প্রশিক্ষণ চালু করা হয় এবং ব্যাপকভাবে হস্তলিপি চর্চা করা হয়, এর মূল উদ্দেশ্য যুবকদের ছোটবেলা থেকে শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যিক চীনা সংস্কৃতি বোঝা, মাতৃভাষার আমেজ অনুভব করা এবং দেশপ্রেমে উত্সাহ দেওয়া।

বিভিন্ন স্কুলে দেশপ্রেম শিক্ষাদান চালু করার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের ম্যাকাওয়ের বাইরে চীনের বিভিন্ন শহরে বেড়াতে উত্সাহ দেয়া হয়, যাতে নিজস্বভাবে চীনের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতি দেখতে পারে।

২০১৬ সালের শুরুতে ম্যাকাওয়ের বিভিন্ন সামাজিক কমিউনিটি যুবক প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে 'হাজার প্রতিনিধি পরিকল্পনা' চালু করে। তার মাধ্যমে ম্যাকাওয়ের মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা চীনের বিভিন্ন শহর ও প্রদেশে লেখাপড়া ও বিনিময়ের সুযোগ পায়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, সৃজনশীলতা ও যুবকদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতের আদান-প্রদানে ম্যাকাও যুবকদের চীনকে জানা ও ভালোবাসায় সুযোগ প্রদান করা হয়েছে।

প্রিয় শ্রোতা, সময় দ্রুত চলে যায়। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও এখানেই শেষ করতে হবে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানাben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

সময় মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ঠিকানা: www.bengali.cri.cn

তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, থাকুন সুন্দর ও আনন্দে। আগামী সপ্তাহের একই দিনে একই সময়ে আবারো কথা হবে। যাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল/মুক্তা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040