'বৃদ্ধ চমরী গাই'‑উ ইয়ু ছু'র তিব্বতের গল্প
  2019-12-20 13:55:32  cri

'বৃদ্ধ চমরী গাই' উ ইয়ু ছু'র তিব্বতের গল্প

এটি একটি দেশপ্রেম, সংগ্রাম ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের গল্প।

চীনের মূল ভূভাগের হান জাতির কর্মকর্তা উ ইয়ু ছু, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উন্নয়নে সহযোগিতা করার জন্য দুইবার তিব্বতে যান। প্রথমবার সেখানে ১৬ বছর থাকেন, দ্বিতীয়বার ৮ বছর থাকেন!

প্রথমবার তিব্বতে যাওয়ার সময় উ ইয়ু ছু'র বয়স ছিল ২২ বছর। তিনি বলেন, তিব্বতি জনগণের সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত হতে পেরে এবং চিরদিন আকর্ষণীয় স্মৃতি ধরে রাখতে পেরে আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি; তা আমার সারা জীবনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

দ্বিতীয়বার তিব্বতে যাওয়ার সময় উ ইয়ু ছু'র বয়স ছিল ৫৭ বছর, তিনি বেইজিং প্রকাশনা গ্রুপের সিপিসি শাখার সম্পাদক ছিলেন এবং সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে আবারও তাঁর প্রিয় মালভূমিতে ফিরে যান। সেখানে তিনি দেশের প্রথম চমরী গাই জাদুঘর গড়ে তোলেন।

'সরল ও সৎ, বিশ্বস্ত, দায়িত্বশীল' এটা হল চমরী গাই সম্পর্কে উ ইয়ু ছুর মূল্যায়ন

'ইয়া ক্য বো' হলো উ ইয়ু ছু'র তিব্বতি ভাষার নাম, এর অর্থ 'বৃদ্ধ চমরী গাই'।

'হান ও তিব্বতি জাতি একই পরিবারের: তার তিব্বতি মা আছে, তিব্বতি মেয়েও আছে'

ডিসেম্বর মাসে, তিব্বতের রাজধানী লাসায় সূর্যের প্রখর তাপ ও প্রচুর আলো থাকলেও তাপমাত্রা অনেক কম, আবহাওয়া প্রচণ্ড ঠান্ডা। তিব্বতের চমরী গাই জাদুঘরের কর্মীরা জাদুঘরের প্রদর্শনী সামগ্রী বাক্সবন্দী করার কাজে ব্যস্ত আছেন।

এখন তিব্বতে পর্যটনের অফ সিজন, ৮০০টিরও বেশি প্রদর্শনী সামগ্রী ৫০টি বাক্সে করে ৪ হাজার কিলোমিটার দূরে চ্যচিয়াং প্রদেশের প্রকৃতি জাদুঘরে পাঠানো হবে। এতে চীনের দক্ষিণাঞ্চলের দর্শক কাছ থেকে চমরী গাই এবং তিব্বতি মানুষের গল্প জানতে পারবে।

চমরী গাই জাদুঘর নির্মিত হওয়ার পর উ ইয়ু ছু জাদুঘরের প্রদর্শনী সামগ্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। তিব্বতি জনগণের চমরী গাই সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করা হলো উ ইয়ু ছু'র স্বপ্ন, এখন সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

২০১১ সালে উ ইয়ু ছু যখন বেইজিং প্রকাশনা গ্রুপের সিপিসি শাখার সম্পাদক এবং গ্রুপের প্রধান ছিলেন, তখন তিনি আবারও তিব্বতে ফিরে গিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য পদত্যাগের আবেদন জানান।

৫৭ বছর বয়সে আবারও তিব্বতে ফিরে যাওয়াটা, ১৯৭৬ সালে ২২ বছর বয়সে বাবা মা'র কাছ থেকে গোপনে তিব্বতে যাওয়ার তুলনায় কিছুটা ভিন্ন রকমের।

তবে, কিছু মিলও রয়েছে।

অভিন্ন বিষয় হলো, মাতৃভূমির পশ্চিমাঞ্চলের এই মালভূমি সবসময় তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। ৩৫ বছর আগে খুব তরুণ বয়সে, তিনি কোনো কিছুকেই ভয় পেতেন না। ৩৫ বছর পর তাঁর বয়স হয় ৬০ বছর। তাঁর তিব্বত যাওয়া মানে স্থায়ী এবং আরামদায়ক জীবনকে বিদায় দেওয়া এবং কঠিন ও অজানা ভবিষ্যতের পথে হাঁটা!

তিনি যে কাজ করতে যাচ্ছেন, তা হলো সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তিব্বতকে সাহায্য করা এবং তিব্বতে একটি চমরী গাই জাদুঘর স্থাপন করা। এর আগে তাঁর কখনওই জাদুঘরে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল না, নেতার পদ ত্যাগের পর তাঁর সঙ্গে কোনো কর্মী নেই, কোনো অর্থ নেই, প্রদর্শনীর জন্য কোনো সামগ্রীও নেই! তাঁর শুধু একটি পরিকল্পনা আছে।

এই পরিকল্পনা একটি স্বপ্ন থেকে এসেছে। স্বপ্নটি এমন:

২০১০ সালে শীতকালের এক রাতে, উ ইয়ু ছু একটি স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্নে তিনি দেখেন, কম্পিউটার স্ক্রিনে 'চমরী গাই' ও 'জাদুঘর' দুটি শব্দ পাশাপাশি বসে 'চমরী গাই জাদুঘর' বাক্যটি তৈরি করেছে!

এর পরের মাসে, তিনি প্রতিটি রাত জেগে সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র দেখেন এবং 'চমরী গাই জাদুঘর' আইডিয়া সম্পন্ন করেন।

তিনি জানেন, প্রায় ৩ হাজার বছর আগে, তিব্বতি জাতির মানুষ চমরী গাইয়ের লালন-পালন শুরু করে। বিপরীত দিকে চমরী গাই তিব্বতি জাতির মানুষের সেবা করেছে। তিব্বতি মানুষ চমরী গাইয়ের মাংস খায়, চমরী গাইয়ের দুধ পান করে, চমরী গাইয়ের চামড়া দিয়ে কাপড় তৈরি করে, চমরী গাইয়ের চামড়া দিয়ে তৈরি তাঁবুতে বাস করে।

অস্তিত্বের দিক থেকে হোক, সাংস্কৃতিক তাত্পর্যের দিক থেকে হোক চমরী গাই ও তিব্বতি জাতির সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ, যে কোনো পশুর সঙ্গে তা তুলনা করা যায় না। তবে দীর্ঘ সময় ধরে, বিশাল মালভূমিতে থাকা চমরী গাই-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কখনওই আনুষ্ঠানিকভাবে গবেষণা করা হয় নি।

উ ইয়ু ছু'র পরিচিত মানুষজন তাঁর এমন পরিকল্পনা সম্পর্কে জেনে অবাক হন না। কারণ, তারা জানেন তিব্বতের মালভূমিতে তাঁর তিব্বতি মা এবং তিব্বতি ভাই-বোন তাঁর কাছে সবচেয়ে আদরের মানুষ।

প্রথমবার তিব্বতে ১৬ বছর থাকার সময়, উ ইয়ু ছু একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ শুরু করেন। মালভূমিতে উ ইয়ু ছু যৌবনের দিনগুলো কাটিয়েছেন। তিনি সেখানে প্রচুর পাতা, তুষার, হাড়কাঁপানো শীত, ক্ষুধা এবং একাকীত্বের অনুভূতি উপভোগ করেছেন; তবে সবশেষে যে জিনিস তাঁর স্মৃতিতে রয়েছে, তা শুধুই তিব্বত সম্পর্কে গভীর ভালোবাসা।

উ ইয়ু ছু'র এখনও মনে আছে, এক শীতকালে, মালভূমির হাড়কাঁপানো শীতে তাঁর শরীর নাজুক ও ঠান্ডা হয়ে আসছিল, তিনি একটি তাঁবুর কাছে গিয়ে পড়ে যান! তাবুতে থাকা এক বৃদ্ধা উ ইয়ু ছুকে ভেতরে টেনে নেন, তাঁর জুতা খুলে নেন, তার বরফের মতো ঠান্ডা পা নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে শরীরের তাপমাত্রা দিয়ে উষ্ণ করেন! এভাবেই তাঁর পা'র ফ্রস্ট-বাইট হয়ে কেটে ফেলার মতো বিপদ থেকে রক্ষা পায়। উ ইয়ু ছু তখনকার কথা স্মরণ করে বলেন, আমি কখনই কোনো বইয়ে এমন প্রকৃত সরল মন পড়তে পারতাম না।

আর চমরী গাই। ১৯৭৭ সালের শীতকালে, উ ইয়ু ছু এবং তাঁর সহকর্মী মাইনাস ৩০ ডিগ্রির আইলা তুষারমৌলি পাহাড়ে আটকে পড়েন। ক্ষুধা এবং ঠান্ডায় তারা ৫ দিন ৪ রাত মন শক্ত করে টিকে থাকেন। স্থানীয় জেলার কর্মকর্তা এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে জেলার লোকজনকে তাড়াতাড়ি খাবার রান্না করান এবং উ ইয়ু ছু ও তাঁর সহকর্মীকে খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ত্রাণ গাড়ি পাহাড়ে যাওয়ার পথে আটকে পড়ে, তারপর ঘোড়া দিয়ে পাহাড়ে খাবার পাঠানো হয়। ঘোড়াও তুষারে আটকে পড়ে যায়! তারপর চমরী গাইয়ের মাধ্যমে অবশেষে উ ইয়ু ছু'র দলকে খাবার পাঠানো সম্ভব হয়।

উ ইয়ু ছু বলেন, 'যখন আমরা হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমরা হঠাত্ তুষারে কালো কালো ছায়া দেখতে পাই। আমরা বুঝতে পারি, জেলার সাহায্য এসে গেছে। আটকে পড়া লোকজন খাবারসহ চমরী গাই দেখে আনন্দে কেঁদে দেয়। চমরী গাই দিয়ে আমাদের প্রাণ রক্ষা পায়।

এরপর অনেক বছর পার হলেও উ ইয়ু ছু বার বার এই গল্প বলেন। তিনি বলেন, এটিই হলো চমরী গাই জাদুঘর নির্মাণের আগ্রহের কারণ।

তিব্বতের সঙ্গে মৈত্রী এভাবেই আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে। বেইজিংয়ে ফিরে আসার পর যত ব্যস্ততাই থাকুক-না-কেন, তিব্বতের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ কখনওই বিচ্ছিন্ন হয় নি। চীনাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বসন্ত উত্সবের সময় তিনি সবসময় তিব্বতি বন্ধুদের বাসায় আমন্ত্রণ জানাতেন। তাঁরা একসঙ্গে দিনটি উদযাপন করতেন।

২০০৮ সালে, তিব্বতে উ ইয়ু ছু'র ভালো বন্ধু এবং সহকর্মী ছিরেনলাদা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যান। সিরেনলাদার মেয়ে সাংতানলাচোকে উ ইয়ু ছু তাঁর তিব্বতি মেয়ে বলে মর্যাদা দেন। সাংতানলাচো বলেন, বাবা উ ইয়ু ছু আমাকে একেবারে নিজের মেয়ের মতো যত্ন নেন। তিনি সত্যিই আমার দ্বিতীয় বাবা।

উ ইয়ু ছু বলেন, 'আমি তিব্বতের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসি। আমার সবসময় এ অনুভূতি কাজ করে যে, আমি শুধু এই মালভূমির একজন পর্যটকই নই, আমার বাকি জীবন তিব্বতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকবে।

চমরী গাইয়ের মতো কাজ করা উচিত:

২০১১ সালে উ ইয়ু ছু বেইজিংয়ের চাকরি চেড়ে দিয়ে তিব্বতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, বেইজিং শহরের কিছু কর্মকর্তা তাঁর জাদুঘর স্থাপনের পরিকল্পনা শোনেন এবং তাতে স্বীকৃতি দেন। তারা মনে করেন, তিব্বতকে বেইজিংয়ের প্রদান করা সহযোগিতা আরও সমৃদ্ধ করবে এই জাদুঘর। বেইজিং প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় যে, চমরী গাই জাদুঘরকে তিব্বতে দেওয়া সহায়তা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যা উ ছু ইয়ু'র জন্য খুবই আনন্দের ব্যাপার।

২০১২ সালে, উ ইয়ু ছু স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে দেশের চমরী গাই উত্পাদন এলাকায় গিয়ে জরিপ করেন এবং বিভিন্ন পুরাকীর্তি সংগ্রহ করেন। এসময় তারা মোট ৩০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন!

সবচেয়ে মূল্যবান অর্জন হলো, তারা তিব্বতি জনগণের অনুভূতি জানতে পারেন এবং তাদের সমর্থন পান।

তিব্বতি ভাষায় এর আগে 'আধুনিক জাদুঘরের' ধারণা ছিল না। উ ইয়ু ছু বলেন, তিনি যা নির্মাণ করতে চান, তা তিব্বতি ভাষার 'ইয়াপোচাং', অর্থাত্ 'চমরী গাইয়ের প্রাসাদ'। এভাবে তিনি খুব দ্রুতই পশুপালকের হৃদয় জয় করে নেন।

শেনচা জেলার পশুপালক রিনো এই খবর জানতে পারেন। তিনি পরিবারের আট সদস্যসহ কয়েক মাস পরিশ্রম করে চমরী গাইয়ের লোম ও চামড়া দিয়ে বড় একটি তাঁবু তৈরি করেন। রিনোর ছেলে তিন দিন ধরে বাসভ্রমণ করে লাসায় পৌঁছায় এবং উ ইয়ু ছু'র হাতে সেই মূল্যবান উপহার সামগ্রী তুলে দেয়। এটি হলো উ ইয়ু ছু'র চমরী গাই জাদুঘরের জন্য পাওয়া প্রথম সামগ্রী।

বিরু জেলার ছাই বেং নামে এক তিব্বতি পশুপালক আছে। তিনি নিজের বাসা থেকে এবং অন্যান্য পশুপালকের কাছ থেকে চমরী গাই-সম্পর্কিত জিনিস সংগ্রহ করে ট্রাকে করে লাসায় পাঠান। তারা উ ইয়ু ছু'র দেওয়া গাড়ির জ্বালানি গ্যাসের টাকা নিতেও রাজি হননি।

২০১৩ সাল পর্যন্ত এই চমরী গাই জাদুঘর বিভিন্ন স্থান থেকে ২ সহস্রাধিক সামগ্রী পায়। এর মধ্যে সাধারণ মানুষের প্রদান করা জিনিস ৪০ শতাংশেরও বেশি। যা দেশের অন্যান্য জাদুঘরে কখনওই ঘটে নি।

২০১৪ সালের ১৮ মে, তিন বছর কষ্টের পর তিব্বতের চমরী গাই জাদুঘর লাসায় উদ্বোধন করা হয়। এর মোট আয়তন ৮৮০০ বর্গমিটারেরও বেশি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তখনকার চীনের রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের প্রধান শান জি সিয়াং বলেন: 'আমি দশ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় পুরাকীর্তি ব্যুরোর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছি, আমি অনেক জাদুঘরের নির্মাণ স্বচখে দেখেছি, কিন্তু আমি কখনই দেখি নি যে, কোনো জাদুঘর তৈরির কাজ এত আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর হতে পারে! শান জি সিয়াং আরও বলেন, আমি জানি এই কাজ সম্পন্ন করতে উ ইয়ু ছু কত কষ্ট পেয়েছেন, কত পরিশ্রম করেছেন! জাদুঘর সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি, তিব্বতি সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর অনুধাবন এবং তিব্বতকে ভালোবাসার কারণেই তিনি এই অসাধারণ কাজটি সম্পন্ন করতে পেরেছেন।

উ ইয়ু ছু'র তিব্বতি নাম 'ইয়া ক্য বো', যার নাম 'প্রবীণ বা বৃদ্ধ চমরী গাই'। তিনি এই নামটি খুবই পছন্দ করেন। তিনি মনে করেন, তাঁর জীবন যেন চমরী গাই সংস্কৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে গেছে।

উ ইয়ু ছু'র চোখে, চমরী গাই সংস্কৃতি হলো সবচেয়ে প্রবীণ এবং সবচেয়ে প্রচলিত তিব্বতি জাতির বেসরকারি সংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম। এই জাদুঘর চালু হওয়ার ৫ বছর পর, দর্শকের সংখ্যা দশ লাখ ছাড়িয়ে যায়। যা জনগণকে তিব্বতকে জানার একটি জানালায় পরিণত করছে।

উ ইয়ু ছু বলেন, চমরী গাই মালভূমির অমূল্য সম্পদ। হাজার হাজার বছর ধরে তা মালভূমির জনগণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। এটি তিব্বতি জাতির জনগণের পোশাক, খাদ্য, থাকা, যাতায়াত এবং কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি মালভূমির একটি বিশেষ প্রতীক।

এই কারণে তিনি আশা করেন, অন্যান্য জাতির মানুষ এই চমরী গাই জাদুঘরের মাধ্যমে তিব্বতকে আরও ভালোভাবে জানতে পারবে। প্রতিবার অন্য প্রদেশে প্রদর্শনী আয়োজনের পর তারা অনেক সাড়া পান। যেমন, কেউ লাসায় সেনা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং তার সংশ্লিষ্ট পুরোনো ছবিগুলো জাদুঘরে দিয়ে দিতে চান, তিব্বতের কাজে সহযোগিতা করেছেন এমন কিছু মানুষ প্রদর্শনী দেখে অনেক খুশি হয়েছেন। কেউ তিব্বতে কখনওই যান নি, তারা এমন প্রদর্শনী দেখে তিব্বতের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। কিছু তরুণ জানায় যে, তারা এর মাধ্যমে একটি ভিন্ন তিব্বতকে দেখেছে। অন্যদিকে, বেশিরভাগ মানুষ বলেছে, আমি নিশ্চয়ই তিব্বতে গিয়ে এই জাদুঘরটি দেখবো।

মাঝে মাঝে উ ইয়ু ছু ভাবেন, মানুষের জীবন কখন এবং কীভাবে সফল হয়। তিনি মনে করেন, বেশি টাকা অর্জন করা বা বিখ্যাত হওয়ার মাধ্যমে সফলতা আসে না। সফলতার সূত্র হলো- জীবনে কোনো একটি উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা। তিনি তার জীবনে একটি চমরী গাই জাদুঘর স্থাপনের কাজ করেছেন এবং তাই যথেষ্ট বলে তিনি মনে করেন।

(শুয়েই/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040