হাইনান হলো চীনের বিখ্যাত ক্রান্তীয় দর্শনীয় পর্যটন স্থান। সেখানে পর্যটনের সম্পদ অনেক বৈচিত্র্যময়। বর্তমানে সেখানে চীনের বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর ও বিশ্বমুখী আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্বীপ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্বিতীয় হাইনান দ্বীপ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে অংশগ্রহণকারী আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মহাপরিচালক মিশেল এল্লিস বলেন, 'আমি লম্বা সময় ধরে চীনে আছি। হাইনান যেন চীনের হাওয়াই। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য সুন্দর এবং আবহাওয়াও মনোরম। চলচ্চিত্র শুটিং ও নির্মাণ করার জন্য খুব মানানসই একটি জায়গা হাইনান। গত বছরে প্রথম হাইনান দ্বীপ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে শতাধিক আন্তর্জাতিক নির্মাতা আকৃষ্ট হয়ে অংশ নেন। হাইনান প্রদেশে অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলের স্থায়ী উন্মুক্ততা ও ব্যাপক উন্নয়ন এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি প্রকল্প এখানে শুটিং করা যাবে বলে আমি আশা করি। তাই এখানে ঘুরে বেড়িয়ে আমি অনেক সুযোগ খুঁজে পেয়েছি। এসব সুযোগ অর্থনীতিও বেগবান করতে সক্ষম।'
হাইনান চলচ্চিত্র শিল্প হাইনান দ্বীপ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থিতিশীলভাবে উন্নয়ন হচ্ছে। দেশি-বিদেশি অতিথিরাও প্রস্তাব করেন যে, বৈশ্বিক চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে হাইনানকে সংযোগ করা উচিত্, চলচ্চিত্র ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ থেকে সিনেমা হলের নির্মাণ পর্যন্ত, চলচ্চিত্রের নির্মাণ থেকে এর প্রচারণা ও প্রকাশ পর্যন্ত, চলচ্চিত্র উত্সব ও প্রদর্শনী থেকে চলচ্চিত্র বাণিজ্য পর্যন্ত, চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে পুরো শিল্প চেইন সৃষ্টি হবে এবং হাইনান বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের রূপ খুঁজে বের করা যাবে। চলচ্চিত্র চ্যানেলের অনুষ্ঠানবিষয়ক কেন্দ্রের প্রধান ছাও ইন বলেন, 'ইতিহাসের অভিজ্ঞতা থেকে প্রমাণিত হয় যে, চলচ্চিত্র শিল্পকেন্দ্রিক বহুমুখী শিল্প ইকোলজিকাল চেইন হলো চলচ্চিত্র শিল্পের স্থায়ী উন্নয়নের শক্তিশালী নিশ্চয়তা। তা ছাড়া, এটি চলচ্চিত্র শিল্পকেন্দ্রিক আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও বেগবান করতে সক্ষম। হাইনান প্রদেশের ভৌগলিক সুবিধা এবং নীতিমালার কারণে হাইনান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চলে বৈচিত্র্যময় শিল্প পরিবেশগত চেইন সৃষ্টি করা সম্ভব হয়।'
বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র ব্যক্তিরা মনে করেন, হাইনান দ্বীপ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবের আয়োজন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক বিনিময় এগিয়ে নিয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অনারারি চেয়ারম্যান দেস পাউয়ার বলেন, 'এখন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল হলো সংস্কৃতি ও শিল্পের সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়নের অঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। চলচ্চিত্র, সংস্কৃতি, শিল্প ও বিনোদনের মানবজাতির কল্যাণ বয়ে আনার ভূমিকা পালন করা উচিত্। এ ক্ষেত্রে হাইনান নেতৃত্বাধীন ভূমিকা পালন করবে। হাইনান দ্বীপের ভবিষ্যত অবশ্যই উজ্জ্বল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এখানে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন প্রাণবন্ত হওয়া ছাড়াও, চলচ্চিত্র শিল্পেরও বসন্তকালকে স্বাগত জানানো যাবে।'
দ্বিতীয় হাইনান দ্বীপ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের অর্থ প্রসঙ্গে বেলারুশ জাতীয় চলচ্চিত্র স্টুডিওয়ের উপ-প্রধান ম্যাডাম একাতেরিনা তারাসোভা বলেন, 'আমি মনে করি, এই চলচ্চিত্র উত্সব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এখানে আমরা পরবর্তী উন্নয়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে পারি। আমি একাধিকবার চীনে এসেছি। আমি চীনের চলচ্চিত্র মহলের অনেক লোকের সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা দেখেছি, চীনের চলচ্চিত্র শিল্প কিভাবে প্রাণবন্তভাবে উন্নয়ন হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমাদের একযোগে আরো বেশি অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হবে।'
দেশি-বিদেশি অতিথিরা মনে করেন, আন্তঃসাংস্কৃতিক প্রচারে জনগণের জনপ্রিয় আধুনিক শিল্প হিসেবে চলচ্চিত্র বিভিন্ন দেশের জনগণের পারস্পরিক সমঝোতা ও মৈত্রী বাড়াতে সহায়ক হয়। জনগণের মন সংযোগ করা হলো সভ্যতার বিনিময় বাস্তবায়ন করা। চলচ্চিত্র হলো একে অপরের কাছ থেকে শেখা এবং মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক বহনকারী।
লিলি/টুটুল