ডিজনির 'ফ্রোজেন ২' চলচ্চিত্র
  2019-12-12 14:10:19  cri

৬ বছর পর ডিজনির ইতিহাসে তথা বিশ্বের অ্যানিমেশন ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় কার্টুন চলচ্চিত্র হিসেবে 'ফ্রোজেন ২' অবশেষে এর পরিণাম বের করে।

প্রদর্শনের মাত্র তিন দিনের মধ্যে 'ফ্রোজেন ২' চলচ্চিত্রের বক্সঅফিস ৩৭ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি ছাড়িয়ে যায়। ডিজনির দোকানে এলসা রাজকুমারীর হ্রদ নীল রঙের স্কার্ট ভালোভাবেই বিক্রি হয় এবং যা ডিজনির দোকানে সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্যের প্রথম ৫টার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

বলা যায়, 'ফ্রোজেন' নামে ধারাবাহিক চলচ্চিত্র হলো সারা বিশ্বে শিশুদের 'সাধারণ ভাষা'। তারা প্রায়ই এ চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রকে পছন্দ করে।

শিশুদের বাবা মার প্রজন্মের মানুষের জন্য 'স্নো হোয়াইট' তাদের রাজকুমারীর স্বপ্ন পূরণ করেছে। তবে 'ফ্রোজেন' চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্র এলসা ও আন্না হলো নতুন যুগে রাজকুমারীর ভাবমূর্তি। তারা দু'জন শুধুমাত্র মিষ্টি ও সন্দরী এবং দয়ালুর অধিকারী নয়, বরং তারা স্বাধীন, সাহসী ও বুদ্ধিমতী নারীর শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে।

কেন 'ফ্রোজেন' নামে ধারাবাহিক চলচ্চিত্র এত বেশি জাদু অধিকার করে? সুন্দর সঙ্গীত, চমত্কার রাজকুমারীর পোশাক, বড় ও ছোট বনের ভাবানুভূতি, এসব উপাদান ছাড়াও, এ চলচ্চিত্র আকর্ষণীয় হয়ে ওঠার প্রধান কারণ হলো এতে রাজকুমার ও রাজকুমারীর ভালোবাসা নতুন করে ব্যাখ্যা করা হয় এবং নতুন যুগে প্রেমের ধারণা ও মূল্যবোধ প্রকাশিত হয়। নিষ্ক্রিয়ভাবে রাজকুমারের চুম্বন ও উদ্ধারের অপেক্ষা করার দরকার নেই রাজকুমারীর।

'ফ্রোজেন ১' চলচ্চিত্রের শেষে বলা হয় যে, রাজকুমার আন্না ও তার প্রিয় মানুষ এবং বড় বোন এলসা ও ছেলেবন্ধু একসঙ্গে হাসিখুশিতে অ্যারেন্ডেলে রাজ্যে বাস করেন। আসলে 'ফ্রোজেন ১' চলচ্চিত্রে কয়েকটি সমস্যা সমাধান হয়নি। যেমন, আন্না এবং এলসার বাবা মা কিভাবে প্রাণ হারান? এলসা কেন তুষার সৃষ্টির জাদু অধিকার করেন? এসব প্রশ্ন 'ফ্রোজেন ১' নামে চলচ্চিত্রে যথাক্রমে নিষ্পত্তি করা যাবে। 'ফ্রোজেন ১' চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রগুলোর কাজের প্রতি প্রতিজ্ঞা এবং নিজের মন অনুযায়ী সঠিক কাজ করার গল্প তুলে ধরা হয়। পুরো চলচ্চিত্র মজা এবং কৌতুকরসবোধে ভরপুর এবং এটি নিজেকে অনুসন্ধানের মুগ্ধকর গল্পও বটে। প্রথম চলচ্চিত্রের ঘটনার তিন বছর পর, এলসা উত্তর দিক থেকে একটি অদ্ভুত শব্দ শুনতে শুরু করে।রানী এলসা, তার বোন আনা, ক্রিস্টোফ, ওলাফ এবং সভেন এলসার ক্ষমতার উৎস খুঁজতে এবং তাদের রাজ্যকে রক্ষা করতে তাদের স্বদেশ, অ্যারেন্ডেলের বাইরে একটি নতুন যাত্রা শুরু করে।

আসলে বিস্তারিত তথ্য একটি ঘটনার সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ধারণ করতে সক্ষম। 'ফ্রোজেন ১' চলচ্চিত্রে গল্প ঘটার প্রেক্ষাপট গরমকালে নির্ধারিত হয় এবং দ্বিতীয় চলচ্চিত্রের গল্প ঘটার প্রেক্ষাপট শরত্কালে পরিবর্তিত হয়। তবে ঐতিহ্যবাহী শরত্কালের রঙ চলচ্চিত্রের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই নির্মাণের সময় চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত কর্মীরা হলুদ রঙয়ের ব্যবহার কমিয়ে বেশি করে কমলা রঙ, কমলা লাল রঙ ও লাল বেগুনি রঙ ব্যবহার করেন।

সঙ্গীত, গল্প, চিত্রশিল্প বা বিশেষ প্রভাবসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে 'ফ্রোজেন ২' চলচ্চিত্রটি সার্বিকভাবে উন্নত হয়। সঙ্গীতের দিক থেকে বলা যায়, 'ফ্রোজেন ১' ও 'ফ্রোজেন ২' উভয়ই কার্টুন চলচ্চিত্র এবং মিউজিকাল ফিল্ম।

'ফ্রোজেন ১' চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের পর 'লেইট ইট গো' নামে গানটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাই প্রথম চলচ্চিত্র ছাড়িয়ে যাওয়া দ্বিতীয় চলচ্চিত্রের কাছে সহজ ব্যাপার নয়।

৬ বছরের প্রস্তুতির পর 'ফ্রোজেন ২' চলচ্চিত্রে সঙ্গীতের ভূমিকা দুর্বল হয় নি, বরং গল্পের উন্নয়নকে বেগবান ও প্রধান চরিত্রের মনের কথা প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । আসলেই চলচ্চিত্রের দৃশ্য এবং সঙ্গীত এ দুটি উপাদানের মাধ্যমে গল্প বলা অনেক কঠিন একটি ব্যাপার। মিউজিকাল ফিল্ম নির্মাণ করা এবং তৈরি করা অনেক কঠিন। এ ক্ষেত্রে পরিচালককে কার্টুন ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি সঙ্গীত সম্পর্কেও জানতে হবে।

(লিলি/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040