বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাসচিব রবার্তো আজেভেদো জেনিভার স্থানীয় সময় ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, বিরোধ নিরসনসংক্রান্ত আপিল বিভাগের সংস্কারের প্রশ্নে সদস্যরাষ্ট্রগুলো একমত হতে পারেনি। পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম কার্যকর থাকবে, অধিকাংশ সদস্যরাষ্ট্র সংস্থার মৌলিক আইনগত নীতিমালা মেনে চলবে, ও নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করে যাবে। সকল সদস্যরাষ্ট্র বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক বজায় রাখবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ২৫ বছরের ইতিহাসে বিরোধ নিরসনব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। এবারের সম্মেলনে, সদস্যরাষ্ট্রগুলো কয়েক মাসের আলোচনার ভিত্তিতে, বিরোধ নিরসনব্যবস্থা সংস্কারের একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাধার কারণে তা পাশ করা যায়নি। ফলে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরোধ নিরসনব্যবস্থা ১১ ডিসেম্বর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
আজেভেদো জানান, বিরোধ নিরসনব্যবস্থার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনার উপায় নিয়ে সদস্যরাষ্ট্রগুলো আলোচনা করছেন। এক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের একটি দীর্ঘমেয়াদি উপায় খুঁজে বের করা জরুরি।
তিনি বলেন, "বিরোধ নিরসনব্যবস্থার আপিল বিভাগের কার্যক্রম স্থগিত থাকার অর্থ এটা নয় যে, সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিরোধ নিরসনের সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে। সদস্যরাষ্ট্রগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ দূর করতে সচেষ্ট থাকবে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজে বের করা। আমি এরই মধ্যে সংস্থার সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি।"
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকেই 'আমেরিকা প্রথম' নীতি অনুসরণ করছে। বিগত দু'বছর ধরেই ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিরোধ নিরসনব্যবস্থার কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করে আসছে।
আজেভেদো বলেন, চীন ও অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্র আশা করে যে, সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করা যাবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সঠিক পথ বাছাই করে আন্তরিকতার সাথে আলোচনা করা।
এবারের সম্মেলনে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় নিযুক্ত চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি চাং সিয়াং ছেন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় বিরোধ নিরসনব্যবস্থার কার্যক্রম স্থগিত হওয়া বিশ্বের বহুপাক্ষিক বাণিজ্যব্যবস্থার ওপর মারাত্মক আঘাত।