বন্ধুরা, আমি চীনের দক্ষিণাঞ্চলের ফু চিয়ান প্রদেশে গিয়েছিলাম। কয়েকদিন আগে ফিরে এসেছি।
টুটুল: ভাই, ওই এলাকা কেমন ?
আকাশ: তুমি কুয়াং চৌ শহরে অনেক বার গিয়েছো, তাইনা? ফু চিয়ান প্রদেশ আসলে কুয়াং চৌ'র মতই। বলতে পারি আবহাওয়া অনেকটা বাংলাদেশের মতই। এখন দুপুরের সময় সেখানে টি-শার্ট পড়া যায়, মানে তেমন শীত নেই সেখানে।
টুটুল: তাই নাকি? তাহলে সত্যি আমাদের বাংলাদেশের মতই! ভাই, আপনি একদিনের মধ্যে গ্রীষ্মকাল থেকে শীতকালে চলে এসেছেন।
আকাশ: হ্যাঁ। অনেক মজার অভিজ্ঞতা।
টুটুল: ওখানে কি কি খাবার তারা বেশি পছন্দ করেন?
আকাশ: ওখানে তারা বেশি বেশি গরুর মাংস খান।
টুটুল: তাই নাকি?
আকাশ: হ্যাঁ। আমি আমাদের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফু চিয়ানের রীতিনীতি ও সংস্কৃতি শ্রোতাবন্ধুদের কাছে তুলে ধরবো, কেমন? তবে এখন খেলাধুলার জগতে ফিরে আসা যাক।
বন্ধুরা, সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস অক্টোবর মাসে চীনের উ হান শহরে আয়োজিত হয়। এ উপলক্ষে আমি উ হানে গিয়ে আপনাদের জন্য সংশ্লিষ্ট খবর ও প্রতিবেদন লিখেছি। আমরা আমাদের অনুষ্ঠানে অব্যাহতভাবে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?
টুটুল:
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এবারের বিশ্ব মিলিটারি গেমসে অংশগ্রহণকারীদের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
২৭ অক্টোবর সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস চীনের উ হান শহরে সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয়। বিশ্ব মিলিটারি গেমসের মশাল ইতোমধ্যে নিভে গেছে। কিন্তু যারা এই গেমসে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করেছেন তারা এ গেমস কখনো ভুলবেন না।
উ হান বিশ্ব মিলিটারি গেমসের ম্যারাথন প্রতিযোগিতার মাঠের পাশে একজন লম্বা কালো রংয়ের তরুণ স্বেচ্ছাসেবককে দেখা যায়। তিনি ফরাসি, ইংরেজি ও চীনা ভাষা ব্যাবহার করে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও দর্শকদের সেবা প্রদান করছেন। তিনি হচ্ছেন সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটির 'বিদেশি স্বেচ্ছাসেবক দল'-এর সাবেক প্রধান প্যাট্রিক সাদিমাকাঞ্জিলা।
২০১৩ সালে প্যাট্রিক তার মাতৃভূমি গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে চীনের উ হান শহরে আসেন। এখন তিনি সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটির বিদেশি ভাষা ইনস্টিটিউটে পিএইচডি করছেন। এবার তার নেতৃত্বে সেন্ট্রাল চায়না নরমাল ইউনিভার্সিটির 'বিদেশি স্বেচ্ছাসেবক দল'-এর বিশজনেরও বেশি সদস্য বিশ্ব মিলিটারি গেমসে বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদ ও বিদেশি দর্শকদের ১০টিরও বেশি ভাষায় সেবা প্রদান করেন।
প্যাট্রিক চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-র সাংবাদিকদেরকে বলেন, "যখন আমি শুনেছি উ হানে বিশ্ব মিলিটারি গেমস আয়োজন করা হবে, তখনই আমি ভেবেছি আমি আমার দল নিয়ে বিশ্ব মিলিটারি গেমসের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অংশ নেবো। ২০১৮ সালের মে মাসে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারপর তা আমার স্বপ্নে পরিণত হয়। আজ আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি। আমরা বিদেশিরা খুব কঠোর পরীক্ষায় পাস করে সার্টিফিকেট অর্জন করার পর স্বেচ্ছাসেবকের যোগ্যতা অর্জন করতে পারি। এজন্য আমি তার উপর অনেক গুরুত্ব দেই এবং গর্ব বোধ করি"।
এ কয়েকটি বছরে, প্যাট্রিক ও তার বন্ধুরা উ হানের কমিউনিটি, স্কুল, বয়স্কদের সেবাকেন্দ্র অর্থাত বৃদ্ধাশ্রম, মেট্রো স্টেশনে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম আয়োজন করেন। তিনি বলেন, "একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমি অত্যন্ত সম্মান বোধ করি। এর পাশাপাশি সমাজের প্রতি দায়িত্বও বোধ করি। আমি আমার আগ্রহ ব্যবহার করে আশেপাশের লোকজনদের উত্সাহিত করতে চাই"।
বিশ্ব মিলিটারি গেমস সমাপ্ত হওয়ার পর প্যাট্রিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাটের 'উইচ্যাট মোমেন্টে' লিখেছেন, "চীনকে ধন্যবাদ! তোমাকে সবসময় আলিঙ্গন করতে চাই! তোমার কারণে আমি এখনকার 'আমিতে' পরিণত হয়েছি। আমি আশা করি চীনের আগামীকাল আরো উজ্জ্বল হবে। বিশ্ব মিলিটারি গেমস আমি তোমায় ভালোবাসি! উ হান চা ইউ! অর্থাত উ হান এগিয়ে চাও"!