বর্তমান ৭৫ বছর বয়সী কুহন বলেন, গত কয়েক দশক বছরে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যাওয়া আসা করতেন। তিনি সমসাময়িক চীনের উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছেন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি বলেন, চীন নিজের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন দিয়ে বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আবদান রাখতে থাকে। সারা বিশ্ব সাক্ষী করতে পারে। এ সম্পর্কে তিনি আরো বলেন,
'নয়া চীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরে বিশেষ করে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ কার্যকর হওয়ার ৪০ বছরে সমাজ ও অর্থনীতির বিরাট অগ্রগতি লাভ করেছে। গত ৭০ বছরে নয়া চীন উন্নয়নের অভিজ্ঞতা ও ৪০ বছরে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ কার্যকর হওয়ার পর চীনা অর্থনীতি অর্জিত সাফল্যের দিকে ফিরে তাকাই আমরা মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহত পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছি। এ কয়েক দশক বছরে চীনা অর্থনীতি ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে। অনেক বছর ধরে বিশ্বের অর্থনীতি বৃদ্ধিতে চীনের আবদান হার ৩০ শতাংশের ছাড়িয়ে যায়। চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাফল্য বিশ্বকে উপকৃত করে। চীনা অর্থনীতির বিকাশের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে চীন বিরাট সাফল্য লাভ করেছে। চীন জাতিসংঘকে দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ আবেদন রেখেছে। যেমনটি অনেকে বলেছেন, চীন সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আসলে বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আবেদন রেখে।'
চীনা প্রশ্নের বিশেষজ্ঞ হিসেবে কুহন চীনকে অনেক বুঝেন। তিনি হলেন বিশ্বের কাছে আধুনিক চীনা গল্প বলার একজন বিদেশী বন্ধু। কুহন বলেন, চীন হলো একটি বহুমুখী উন্নয়নশীল দেশ। চীনের সামাজিক কাঠামো খুবই জটিল এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়ন ভারসাম্যহীন। সেজন্য একতরফা চীনা সামাজিক উন্নয়ন ও সমস্যা ব্যাখ্যা করা যায় না।
পশ্চিমা দর্শকদের অভ্যাস একত্রিত করে কুহন উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি আসল চীন ব্যাখ্যা করতে থাকেন। তিনি অনেক পশ্চিমা মানুষের চীনের পক্ষপাত পরিবর্তন করেছেন। তিনি চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রের বিশ্ববিখ্যাত্ সাফল্য ছাড়াও পাহাড়ী এলাকা দারিদ্র্য বিমোচনের সাফল্য ব্যাখ্যা করতে থাকেন।
২০১৯ সালের ৩১ জুলাই মাসে কুথন পরিচালক ও অবদানকারী হিসাবে 'ফ্রন্টলাইনস কন্ঠ: চীনের দারিদ্র্য বিমোচন' শীর্ষক তথ্যচিত্র মার্কিন গণ টেলিভিশন নেট ক্যালিফোর্নিয়া টিভিতে প্রথম বারের মত সম্প্রচারিত হয়। তথ্যচিত্রে একজন বিদেশীর দৃষ্টিতে চীনের নির্মূল দারিদ্র বিমোচনের নীতি পরিচয় করা হয়। তিনি চীনের পাঁচটি দরিদ্র পরিচার দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হওয়ার গল্প দিয়ে চীন ২০২০ সাল দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের চেষ্টার তত্পরতা ব্যাখ্যা করেন। তথ্যচিত্রে সাফল্য ছাড়াও চীনের সম্মুখীন বিভিন্ন সমস্যা দেখায়।
এ তথ্যচিত্র তৈরীর জন্য ৭৫ বছর বয়সী কুহন দুই বছর দিয়ে চীনের গানসু, সিনজিয়াং, শানস্যি ও স্যিছুয়ানে দরিদ্র পরিবারগুলোয় পরিদর্শন করেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে এসব প্রচেষ্টা মূল্যাবান। কারণ নির্মূল দারিদ্র্য বিমোচন হলো চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী গল্পের একটি। তিনি বিশ্বের কাছে পরিচয় করতে চান। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
'তথ্যচিত্রটি কার্যকরভাবে বিশ্বের কাছে একটি আসল চীন প্রদর্শনীত হয়। কোন কোন বিদেশী মানুষের চীনের পক্ষপাত পরিবর্তন করেছে। কোন কোন মার্কিন দশর্ক বলেন, আমার তথ্যচিত্র দেখার তাঁদের ভীষণ হতবাক। কারণ তাঁরা ভেবেছেন না যে, চীন এত বেশি শক্তি দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টা করছে। আসলে আমি চীনের সাফল্য ছাড়াও সম্মুখীন সমস্যা জানিয়েছি তথ্যচিত্রে। আপনারা আমার তথ্যচিত্রে চীনের দারিদ্র্য বিমোচনের পরিকল্পনা ও চীনা সমাজ উন্নয়নের মৌলিক নীতি দেখতে পারেন। আসলে চীন একটি কার্যকর নির্মূল দারিদ্র বিমোচনের প্রাকৃতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এটি একটি মহা কাজ। বিশ্বের এ ধরণের আসল গল্প পড়ার জন্য গর্ব করি।'
কুহন বলেন, চীন শুধু যে নিজের উন্নয়ন দিয়ে বিশ্বের সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীলতার জন্য অবদান রাখছে তা নয় ইতিবাচকভাবে বিশ্বব্যাপী মোকাবিলায় অংশ নেয়। চীন বিশ্বব্যাপী চ্যালেন্ঞ্জ মোকাবিলার জন্য চীনা বৃদ্ধি ও শক্তি সরবরাহ করছে। এ সম্পর্কে তিনি আরো বলেন,
'চীন বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। চীন ইতিবাচকভঅবে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষী অভিযানে অংশ নিতে থাকে। চীন ইতিবাচকভাবে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় অংশ নেয়। চীন মাদক ও সংগঠিত অপরাধ দমন, মহামারী প্রতিরোধ এবং বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা সুরক্ষা করতে থাকে। পাশাপাশি চীন 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরো বেশি উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।'
তিনি বলেন, নয়া চীনের উন্নয়ন অর্জনগুলি মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর হিসাবে বিবেচিত হবে। চীনা জনগণের ইতিবাচক পরিশ্রমের আত্মা চীন উন্নয়নের সকল প্রক্রিয়ায় উজ্জ্বল হবে।