চায়না মিডিয়া গ্রুপের নির্মিত 'প্যারেড-২০১৯' চলচ্চিত্রের আরবি ভাষার সংস্করণ ফিলিস্তিনে প্রচারিত
  2019-11-28 09:09:49  cri

চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-র উদ্যোগে নির্মিত 'প্যারেড-২০১৯' নামে চলচ্চিত্রের আরবি ভাষার সংস্করণ ১৩ নভেম্বর ফিলিস্তিনের মা'আন শহরে প্রথমবারের মতো প্রচারিত হয়। এরপর ১৪ ও ১৫ নভেম্বর পুনঃপ্রচারিত হয় চলচ্চিত্রটি। যা ফিলিস্তিনি জনগণের আন্তরিক স্বাগত পায়।

মা'আন টিভি কেন্দ্রের সদরদপ্তর জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের বেথলেহেম শহরে অবস্থিত। ১৪ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা এবং বেলা আড়াইটার সময় পৃথক পৃথকভাবে 'প্যারেড-২০১৯' এ চলচ্চিত্র প্রচার করে টিভি কেন্দ্রটি। টিভি কেন্দ্রের মহাপরিচালক রায়েদ অথমান বলেন, চলচ্চিত্রের দৃশ্য বা বিষয়, যাই হোক, এ চলচ্চিত্রটি অনেক চমত্কার। বলা যায়, এটি খুব সফল একটি চলচ্চিত্র। চীনা জনগণ হলো ফিলিস্তিনি জনগণের সেরা বন্ধু। তিনি চীনা জনগণকে ভালোবাসেন। চীনা বাহিনী হলো চীনা জনগণের একটি অংশ। তিনি চীনা বাহিনী নিয়ে গৌরব বোধ করেন। তিনি বলেন, 'প্রথমে এ চলচ্চিত্র নির্মাণের গুণগত মান উচ্চ মানের। এতে প্রকাশিত বিষয়ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এতে চীনের ইতিহাস ফুটে ওঠে। বড় একটি রাষ্ট্র হিসেবে চীনের শক্তিশালী বাহিনী আছে। প্রতিটি দেশের বাহিনী নিজের জনগণকে সুরক্ষা করে, তা অনেক সম্মানজনক। আমি বিশ্বাস করি, চীনা বাহিনী হলো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনীর মধ্যে অন্যতম একটি। যা শুধুমাত্র চীনের শান্তি রক্ষা করা ছাড়াও, বিশ্বের শান্তিও রক্ষা করতে সক্ষম। একজন ফিলিস্তিনি হিসেবে আমি চীনা বাহিনী নিয়ে গৌরব বোধ করি, আমি চীন ও ফিলিস্তিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে গৌরব বোধ করি। তাই আমরা চীনের এই চলচ্চিত্র প্রচার করি। ফিলিস্তিনিরা চীন সম্পর্কে আরো বেশি করে জানতে পারবেন বলে আমরা আশা করি।'

মা'আন টিভি কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আহমাদ তোহ মনে করেন, এ চলচ্চিত্র বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চায় যে, চীনা বাহিনী হলো শক্তিশালী বাহিনী এবং শান্তিপূর্ণ বাহিনী। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, চীন মহান একটি দেশ। 'প্যারেড-২০১৯' নামে এ চলচ্চিত্রের মতো চীনের শক্তি তুলে ধরা এমন ধরনের চলচ্চিত্র অন্যান্য ছোট দেশ, জাতিকে আশা ও শক্তি যুগিয়েছে। ৭০ বছর আগে নয়াচীন প্রতিষ্ঠার শুরুতে চীন দরিদ্র একটি দশ ছিলো। তবে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে চীনের বিশাল প্রভাব আছে। চীন শক্তিশালী বাহিনী অধিকার করে এবং প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের দক্ষতাও শক্তিশালী। এসব দক্ষতার কারণে চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের সম্মান অর্জন করে। চীনের এই দক্ষতা ও প্রভাব যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত নয়। চীন চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতান্ত্রিক উন্নয়নের পথে অটুট থাকে এবং অব্যাহতভাবে অগ্রগতি অর্জন করে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' এই মহান উদ্যোগ চীনের সঙ্গে বিশ্বকে সংযোগ করেছে।'

একইদিন বিকেলে বেথলেহেম শহরের একটি রেস্তোরাঁর কয়েকটি টেলিভিশনে একই সঙ্গে 'প্যারেড-২০১৯' নামে এই চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। রেস্তোরাঁর মালিক আদনান জি থালিজেহ বলেন, চীনের বাহিনী দেখে তার মন অনেক উদ্দীপ্ত হয়ে যায়।

তিনি বলেন, 'আমরা চীনা বাহিনী নিয়ে গৌরব বোধ কারি। তারা শান্তিপূর্ণ বাহিনী, তারা জীবন ও শান্তিকে ভালোবাসা বাহিনী, জনগণ এবং অর্থনীতির উন্নয়নকে সেবা করা বাহিনী। তারা শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে চলার কারণে চীনে উন্নয়নের বিশাল পরিবর্তন বাস্তবায়িত হয়।'

হুসাম গুবার নামে একজন ব্যবসায়ী প্রতি বছর চীনের কুয়াংচৌ ও ইউসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পণ্য আমদানি করেন। তিনি মনে করেন, চীনের দ্রব্যের গুণগত মান অনেক ভালো এবং চীনের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিস্তিনের টিভি কেন্দ্রে চীনের কুচকাওয়াজ বিষয়ক চলচ্চিত্র দেখে তিনি অনেক আনন্দ বোধ করেন। তিনি বলেন, 'আমাদের দেখা এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান অনেক গুরুগম্ভীর। চীনের বাহিনী সুশৃঙ্খল। চীনা বাহিনী কখনও যুদ্ধ সৃষ্টি করে না।'

মেদাল কুজমার নামে একজন ফিলিস্তিনি আসবাবপত্র প্রস্তুতকারক বলেন, কুচকাওয়াজ সংক্রান্ত এই চলচ্চিত্রের দৃশ্য অনেক উপভোগযোগ্য। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমরা নয়াচীনের ৭০ বছরের মধ্যে সংঘটিত বিশাল পরিবর্তন অনুভব করেছি, যা খুবই মুগ্ধকর।

কুজমার বলেন, 'চলচ্চিত্রের দৃশ্য অনেক সুন্দর। কুচকাওয়াজ খুবই সুশৃঙ্খল। দেখে আমি অনেক উদ্দীপ্ত হয়ে যাই। কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত অস্ত্রশস্ত্র বৈচিত্র্যময়। প্রত্যেক চীনা এ চলচ্চিত্র দেখে অবশ্যই গর্বিত হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।'

মা'আন টিভি কেন্দ্রের মহাপরিচালক রায়েদ অথমান বলেন, 'প্যারেড-২০১৯' নামে এ চলচ্চিত্রের প্রচার চীনের সঙ্গে মা'আন টিভি কেন্দ্রের প্রথম সহযোগিতা নয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মা'আন টিভি কেন্দ্র চায়না মিডিয়া গ্রুপের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ চুক্তি অনুযায়ী মা'আন টিভি কেন্দ্রে 'চীনের থিয়েটার' এই অনুষ্ঠান চালু করা হয়। তা ছাড়া, 'অড টু জয়' সহ চীনের চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক প্রচারিত হয়। ফলে ফিলিস্তিনের দর্শকদের স্বাগত পাওয়া যায়। ভবিষ্যতে চীন প্রসঙ্গে আরো বেশি চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রচারিত হবে এবং চীনের সঙ্গে আরো বেশি সাংস্কৃতিক বিনিময় চালানো হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অথমান বলেন, 'আমরা চীনের সংস্কৃতিকে সম্মান করি। ফিলিস্তিনি জনগণ চীনের সংস্কৃতি জানার পাশাপাশি আরো জানতে পারবেন যে, চীন কেন স্বল্প ৭০ বছরের মধ্যে দ্রুত গতিতে শক্তিশালী একটি দেশে পরিণত হয়েছে। চীনের বন্ধু হিসেবে আমরাও গর্বিত। আমরা বিশেষ করে 'চীনের থিয়েটার' এই অনুষ্ঠান চালু করেছি এবং এর উদ্দেশ্য হলো চীন প্রসঙ্গে আরো বেশি তথ্য ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।'

(লিলি/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040