সেপ্টেম্বর মাসে মস্কোতে "চীনা উত্সব" সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সাফল্যের সঙ্গে জাতীয় অর্থনৈতিক সাফল্য প্রদর্শনী হলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চীনের শানসি প্রদেশের শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন পেকিং অপেরা, গুজেং, থাইচি পুশ, এবং নর্দান শানসি গান ও নৃত্য রাশিয়ায় উপস্থাপন করেছিল। অনুষ্ঠানের সময় স্থানীয় লোকেরা খুব কাছে থেকে চীনা পেইন্টিংস এবং ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনগুলি দেখার সুযোগ পায়, বিশেষ খাবারের স্বাদ গ্রহণ করে এবং চীনা সিরামিক শিল্পের সৌন্দর্য উপভোগ করে। দুই দেশের সম্পর্ক বিকাশের বিষয়ে চীন-রাশিয়ান সাংস্কৃতিক বিনিময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে, রাশিয়ায় চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক পরামর্শদাতা, মস্কো চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রেরর পরিচালক খং চিয়া চিয়াং বলেন,
"আমি মনে করি, দু'দেশের সম্পর্কের দীর্ঘস্থায়ী, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী বিকাশ কেবল দু'দেশের প্রধান, সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের উপরই নির্ভর করে না। গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো দুই দেশের মানুষ একে অপরকে বুঝতে পারা এবং একে অপরকে সম্মান করতে পারা। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের ভিত্তি সুসংহত করা দু'দেশের সম্পর্কের টেকসই উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গ্যারান্টি।"
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, রাশিয়ায় চীনা সংস্কৃতি ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে। প্রধান শহরগুলিতে, লোকেরা কেবল চীনা খাবারই স্বাদ নিতে পারবেন তা নয়, চীন থেকে চা-ও কিনে নিতে পারেন এবং অনেক রাশিয়ান যুবক মার্শাল আর্ট ও থা্ইচির মতো চীনা ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি শিখছেন।
রাশিয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ বিভাগের পরিচালক মাসলভ চীনের অর্থনৈতিক গবেষণায় নিযুক্ত আছেন। রাশিয়ায় চীনা সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন:
"চীনা সংস্কৃতি রাশিয়ায় খুব জনপ্রিয়। সবাই চাইনিজ চা সম্পর্কে জানে, মার্শাল আর্ট ও থাই চি জানে এবং সুস্বাদু চাইনিজ খাবারের সঙ্গে পরিচিত। সুতরাং, রাশিয়ানদের কাছে চীন প্রথম এবং সর্বাগ্রে 'সুখের' প্রতীক, তারপরে এটি অর্থনীতি ও উন্নয়নের মডেল।"
এই বছর চীন ও রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেশ দুটি ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রমের আয়োজন করেছে। চীনামাটির বাসন প্রদর্শনী, ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী, ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প প্রদর্শনী, পাশাপাশি জাতীয় অর্কেস্ট্রাল সংগীত এবং লোকসঙ্গীত ও নৃত্যের মতো বড় আকারের পরিবেশনাও রয়েছে। কাউন্সিলার খং চিয়া চিয়া বলেন,
"কারণ এই বছর একটি বিশেষ স্মরণীয় বছর। শুধু গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ৭০তম বার্ষিকীই নয়, বরং দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বার্ষিকীও বটে। তাই, স্থানীয় সরকার বা সংস্থাগুলো অনেক উত্সাহ দেখিয়েছে। তারা আরও রাশিয়ানদের তাদের প্রদেশগুলোর সাংস্কৃতিক সম্পদ ও পর্যটন সম্পদ বুঝতে সক্ষম সংস্কৃতির মতো একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে খুব আগ্রহী।"
মস্কোর "চীন উত্সব" এর আয়োজক, রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের ফার ইস্ট ইনস্টিটিউট সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানে গবেষণা করছে। দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ভবিষ্যত্ বিকাশের বিষয়ে রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের ফার ইস্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক লু চিয়ানিং বলেন, দু'দেশের মধ্যে বেসরকারি সাংস্কৃতিক বিনিময়ের বড় সম্ভাবনা রয়েছে।
"চীন-রাশিয়া সাংস্কৃতিক বিনিময় সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। একদিকে, দুই দেশ সরকার পর্যায়ে অনেকগুলি সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, অন্যদিকে তাদের নাগরিক পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান জোরদার করা উচিত। আমি মনে করি সংস্কৃতি ও শিক্ষায় উভয় পক্ষের প্রচেষ্টা সবেমাত্র শুরু হয়েছে।"