গত সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদে বেইজিং প্রদর্শনী হলে 'মহা যাত্রা, অসাধারণ অগ্রগতি' শীর্ষক প্রদর্শনী শুরু হয়, যা বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিগণকে আকর্ষণ করে। আগের মহাকারে প্রদর্শনীর তুলনায় এ প্রদর্শনী গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরের সময়কাল অনুযায়ী প্রদর্শিত হয়। অনেক দর্শক বলেন, প্রদর্শনী দেখতে গেলে মনে হয় ঐতিহাসিক করিডোরে হাটাহাটি করছি। প্রদর্শনী সম্পর্কে জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের উপ-মহাপরিচালক ও জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক নিং চি চ্য বলেন,
'প্রদর্শনীতে ১৭০০টিরও বেশি ঐতিহাসিক ছবি, ১৮০টিরও বেশি ভিডিও এবং ৬৫০টিরও বেশি আসল জিনিসপত্র প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে চীনের প্রথম 'মুক্তি' ব্র্যান্ডের গাড়ি, প্রথম হোং ছি ব্র্যান্ডের গাড়ি এবং ট্র্যাক্টর। এখানে আরও রয়েছে ১০০টি মডেল ও ২০টিরও বেশি প্রতিক্রিয়াকরণ প্রকল্প।
জাতীয় দিবসের প্রাক্কালে ১৩০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা এ প্রদর্শনী দেখতে যান। জাপানের রাষ্ট্রদূত চীনাদের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করে বলেন,
'বর্তমানে চীনাদের কেনাকাটার পদ্ধতির ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এটি গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরের একটি ছোট্ট প্রতিফলন। চীন অনেক বিশ্বকাড়া অগ্রগতি অর্জন করেছে। গত ৭০ বছর ধরে চীনা মানুষ বরাবরই কঠোর পরিশ্রম ও নব্যতাপ্রবর্তনশীল চেতনায় কাজ করে যাচ্ছেন, তা খুব প্রশংসনীয়'।
জাতীয় দিবসের ছুটির দিনগুলোতে চীনের জাতীয় জাদুঘরে 'প্রাচ্যে দাঁড়িয়ে আছে- উত্কৃষ্ট শিল্পকলা প্রদর্শনী' এবং 'ফিরে আসার পথ-গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে হারানো পুরাকীর্তি ফিরে আনার প্রদর্শনী' অনেককে আকর্ষণ করেছে।
চীনের চলচ্চিত্র জাদুঘরে ২০০টিরও বেশি চলচ্চিত্র এবং ৫০০টিরও বেশি জিনিসপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে চীনা চলচ্চিত্রের উন্নয়নের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়েছে। চীনা চলচ্চিত্র জাদুঘরের মহাপরিচালক ছেন লিং বলেন,
'গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আমরা এ প্রতিপাদ্যে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। আমরা চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে শতাধিক চলচ্চিত্র যুক্ত করে গত ৭০ বছরে চীনা মানুষের কঠোর পরিশ্রম তুলে ধরতে চাই। তাই এ প্রদর্শনীতে চীনা মানুষের দাঁড়িয়ে উঠা থেকে সমৃদ্ধ হয়ে উঠা, তারপর শক্তিশালী হয়ে ওঠা পর্যন্ত উল্লম্ফন অগ্রগতি প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রদর্শনীর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও অনেককে আকর্ষণ করে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে 'পরিশ্রম করুন, চীন জাতির ছেলেমেয়েরা' শিরোনামে মহাকারে সংগীত ও নৃত্য জাতীয় পরিবেশনা গণমুখী শুরু হয়েছে। দর্শক মাদাম হু বলেন,
'আমি খুব মুগ্ধ হয়েছি। দেখতে দেখতে চোখে পানি পড়ে। এ পরিবেশনায় সংগীত, নৃত্য ও গানের শব্দসহ সব কিছু অসাধারণ'।
তা ছাড়া, শাংহাই, কুয়াং চৌ ও ইনার মঙ্গোলিয়াসহ নানা স্থানে বেশ কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাংস্কৃতিক পর্যটন বর্তমানে জাতীয় দিবসের ছুটির দিনগুলোতে উপভোগের নতুন চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাতে চীনাদের আরও সুন্দর ও গুণগত জীবন-যাত্রার প্রত্যাশা প্রতিফলিত হয়েছে। (রুবি/টুটুল/শিশির)