পরিসংখ্যান বলছে, চীনের অনেক পাঠক এখন ডিজিটাল বই পড়েন। এদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এরা এখন সময় করে প্রায় প্রতিদিন বই পড়েন।
'সময় পেলেই বই পড়ি। এখন ডিজিটাল বই বেশি পড়া হয়। কারণ ডিজিটাল বই দ্রুত আপডেট করা হয়।'
'বাসার বাইরে আমি ডিজিটাল বই পড়তে পছন্দ করি। তবে, বাসায় আমি মুদ্রিত বই পড়তেই বেশি পছন্দ করি'।
'আমার মনে হয় বই সঙ্গীর মতো। লেখক তার মনের শ্রেষ্ঠ ভাব বইয়ের মাধ্যমে আপনার সঙ্গে শেয়ার করেন।'
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৮ সালে মুদ্রিত বই, পত্রিকা, ও ডিজিটাল বই পড়ুয়া চীনাদের সংখ্যা ছিল ৮০.৮ শতাংশ। আগের বছরের ৮০.৩ শতাংশের তুলনায় যা কিছুটা বেশি। এর মধ্যে ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন এবং ডিজিটাল রিডারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ডিজিটাল বই পড়ুয়ার হার ৭৬.২ শতাংশ, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৩.২ শতাংশ বেশি।
অনস্বীকার্য বিষয় হল, ডিজিটাল পঠন উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রিত বই পড়ার হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। মুদ্রিত বই বিক্রির জায়গা তথা বইয়ের দোকানগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীনও হচ্ছে। তবে ভালো খবর হচ্ছে, কিছু বইয়ের দোকান নিজেদের ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছে।
সন্ধ্যায় চীনের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা সান লি থুনে অবস্থিত সান লিয়ান থাও ফেন বইয়ের দোকানে অনেক তরুণ পাঠক সময় কাটায়। এই বইয়ের দোকান হল সান লিয়ান থাও ফেন বইয়ের দোকানের চতুর্থ শাখা। এটি পুরোনো ও বিখ্যাত বই-দোকান। এই দোকান ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। মাঝে মাঝে কিছু ছোট আকারের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় এখানে। এ ছাড়া তরুণ-তরুণীরা এখানে আসে নতুন বন্ধুর খোঁজে। এভাবেই দোকানটি নিজেকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়। সান লিয়ান থাও ফেন বই-দোকানের উপ-ব্যবস্থাপক চেং ই বিন বলেন, তাদের উদ্দেশ্য, বই-দোকানকে বহুমুখী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি বলেন,
"কেউ হয়তো একইসঙ্গে বই পড়তে ও বন্ধুর সঙ্গে গল্প করতে চান। তারা আমাদের বইয়ের দোকানের কফি কর্নারে বসতে পারেন। এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা-সভা ইত্যাদি আয়োজনের ব্যবস্থাও আছে। কেউ যখন বন্ধু বা আত্মীয়স্বজনকে উপহার দিতে চান, তারাও বই দোকানে আসতে পারেন। তাদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা আছে। আশা করি, বই-দোকান আস্তে আস্তে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। বইয়ের দোকান হবে একটি সাংস্কৃতিককেন্দ্র।"
২০১৬ সাল থেকে চীনে বইয়ের দোকানের উন্নয়নকে সমর্থন করার ধারাবাহিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এমন নীতির ফলে ২০১৮ সালে চীনে বইয়ের দোকানের সংখ্যা ৪.৩ শতাংশ বেড়েছে। এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।
(শুয়েই/আলিম)