চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পপতিদের সংলাপ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত
  2019-09-11 10:16:11  cri
চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময় কেন্দ্রের উদ্যোগে 'চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পপতিদের সংলাপ' গতকাল (মঙ্গলবার) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংলাপে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা মনে করেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্যিক বিরোধ দু'পক্ষ এবং বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক আলোচনায় ইতিবাচক ফলাফল অর্জনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রত্যাশা প্রকাশ করেন তারা।

শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।

চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময় কেন্দ্রের চেয়ারম্যান চ্যং ফেই ইয়ান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের বাড়তি প্রভাব আছে, যা দু'পক্ষের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাবই নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশাল অস্থিতিশীলতাও সৃষ্টি করেছে! এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'পর পর চতুর্থবারের মতো এ বছরের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। প্রবৃদ্ধির হার ৩.৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.২ শতাংশ করেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি এ বছর বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধির হারও ১.১ শতাংশ কমিয়েছে সংস্থাটি। ২০১৮ সালে বিশ্বে সরাসরি বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগের পাশাপাশি অন্যান্য পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ২০১৭ সালের তুলনায় ৪ শতাংশ কম ছিল। এ বছরও একই প্রবণতা বজায় রয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ শিল্পের সূচকও কমছে। গত অগাস্টে বৈশ্বিক নির্মাণ খাতের অর্থনৈতিক সূচক বা পিএমআই ছিল ৪৭। বাণ্যিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সুদ কমানোর চেষ্টা করছে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সত্ত্বাগুলো। নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট ধাপে ধাপে এগিয়ে আসছে"।

আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্সের স্থায়ী কমিটির মহাপরিচালক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের মহাব্যবস্থাপক মিরন ব্রিলিয়ান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, আর্থ-বাণিজ্যিক লড়াইয়ে কেউ বিজয়ী হয় না। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্যিক বিরোধের নেতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যেই দু'দেশের সম্পর্কের বাইরে অন্যান্য ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে। যেমন, শিক্ষা, মানবিক বিনিময় ও নতুন জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা। একই সঙ্গে বিশ্বের সরবরাহ চেইনের ওপর আর্থ-বাণিজ্যিক বিরোধের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ব্যবসায়ীদের আস্থাও কমেছে।'

তিনি আরো বলেন, আর্থ-বাণিজ্যিক আলোচনায় ইতিবাচক ফলাফল অর্জনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দু'দেশ চুক্তির বিষয়ে একমত হবে বলে তিনি আশা করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুটো দেশ হিসেবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আছে; যা বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা এগিয়ে নেবে। আর্থ-বাণিজ্যিক লড়াইয়ে কেউ বিজয়ী হবে না, এতে শুধু দু'পক্ষের ক্ষয়ক্ষতি হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দু'দেশের একটি সার্বিক ও কার্যকর দ্বিপাক্ষিক পুঁজি ও বাণিজ্যিক চুক্তির বিষয়ে একমত হতে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য দু'দেশের শীর্ষনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই আমরা'।

চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময় কেন্দ্রের চেয়ারম্যান চ্যং ফেই ইয়ান বলেন, ইতিহাস ও বাস্তবতা থেকে বোঝা যায় যে, আর্থ-বাণিজ্যিক লড়াইয়ে দু'পক্ষ ব্যর্থ ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া অতিরিক্ত শুল্ক এবং আধিপত্যবাদী আচরণ সমস্যা সমাধান করতে পারে না। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক খাতে উস্কানিমূলক অপচেষ্টা দিয়ে চীনের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা সম্ভব হবে না।

(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/ছাই)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040