টুটুল: বন্ধুরা, সম্প্রতি ডেঙ্গু প্রকোপের পরিস্থিতি বাংলাদেশে অনেক মারাত্মক। আমার বোনের বাসার কাছাকাছি এক মা ও তার সন্তান ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আমি এ খবর শুনে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েছি।....
বন্ধুরা, আমরা প্রথমে ডেঙ্গু সংশ্লিষ্ট খবর আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। …
আকাশ: বন্ধুরা, ডেঙ্গু প্রকোপের কারণে আমরা অনেক চিন্তিত। আমাদের বাংলাদেশের ভাইবোনের কথা মনে পড়ে।
টুটুল: বন্ধুরা, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিত্সা সংক্রান্ত কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করি তা থেকে আপনারা উপকৃত হবেন।
জ্বর হওয়া, অতিরিক্ত মাথা ব্যথা, চোখের চারপাশে ব্যথা, পেশিতে ও হাড়ের গিটে ব্যথা, বমি ও বমি বমি ভাব, ত্বকে লাল ছোপ ছোপ দাগ, নাক থেকে রক্তপাত ইত্যাদি হচ্ছে ডেঙ্গুর উপসর্গ। ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম ১০ দিনের মধ্যে এই লক্ষণগুলি দেখা যায় এবং কিছু ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগে শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে ।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা: বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা দরকার। ডাক্তারের দেওয়া টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিৎ। নিজে থেকে ঔষধ খাওয়া উচিৎ নয়। অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া উচিৎ নয়, এগুলি রক্তকে পাতলা করে দেয়।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচার উপায়: ঘিঞ্জি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় না থাকার চেষ্টা করুন। বাড়িতে মশারি, মশা তাড়ানোর ঔষধ ব্যবহার করুন। বাইরে যাওয়ার সময় ফুলহাতা জামা ব্যবহার করুন। মোজা পরুন। জানালায় নেট লাগান অথবা দরজা জানালা বন্ধ করে রাখুন। এয়ারকন্ডিশন থাকলে ব্যবহার করুন। ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখান। দিনের বেলা ও সন্ধ্যার সময় ডেঙ্গু মশা কামড়ায়, এ সময়টা অতিরিক্ত সাবধান থাকুন।
ডেঙ্গু রোগীর যত্ন: তরল জাতীয় খাবার খাওয়া উচিৎ; যেমন- পরিষ্কার পানি, আখের রস, ডাবের পানি, লেবুর পানি, গ্রীন টি, কমলালেবুর রস ইত্যাদি। দুগ্ধজাতীয় ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিৎ। নিরামিষাশীদের জন্য শাকসবজি ও ফল খাওয়া দরকার। তেল মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সঠিক পরিমাণ প্রোটিন খান। মাছ, মাংস, ডিম এবং সয়াবিন, চিস,পনির জাতীয় খাবার খান।
আকাশ: বন্ধুরা, ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য দয়া করে সবাই সাবধানে থাকুন।
টুটুল: মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাক্সিন নেই। যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাস চার টাইপের, তাই চারটি ভাইরাসের প্রতিরোধে কাজ করে, এমন ভ্যাক্সিন এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। তাই ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের মূলমন্ত্রই হলো এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। মনে রাখতে হবে এডিস একটি ভদ্র মশা, অভিজাত এলাকায় বড়ো বড়ো সুন্দর সুন্দর দালানকোঠায় এরা বসবাস করে থাকে। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এই মশা ডিম পাড়ে। ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দসই নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থানগুলোকে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং একই সাথে মশক নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো ব্যক্তিগত সতর্কতা এবং এডিশ মশা প্রতিরোধ করা। আগেই বলেছি, এডিস মশা মূলত দিনের বেলা, সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায়। তবে রাত্রে উজ্জ্বল আলোতেও এডিস মশা কামড়াতে পারে। যেহেতু এডিস মশা মূলত এমন বস্তুর মধ্যে ডিম পাড়ে যেখানে স্বচ্ছ পানি জমা হয়ে থাকে, তাই সবার আগে ঘরে সাজানো ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, বাড়িঘরে এবং বাড়ির আশপাশে যেকোনো পাত্র বা জায়গায় জমে থাকা পানি ৩ থেকে ৫ দিন পরপর ফেলে দিলে এডিস মশার লার্ভা মারা যায়। পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ঘরের বাথরুমে কোথাও জমানো পানি ৫ দিনের বেশি যেন না থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ঘরের এ্যাকুরিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচে এবং মুখ খোলা পানির ট্যাংকে যেন পানি জমে না থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ির ছাদে অনেকেই বাগান করে থাকেন। সেখানে টবে বা পাত্রে যেন কোনো ধরণের পানি ৫ দিনের বেশি জমে না থাকে সেদিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাড়ির আশ-পাশে ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আকাশ: বন্ধুরা, আশা করি এসব তথ্য আপনাদের জন্য সহায়ক হবে। সবসময় সাবধানে থাকবেন। নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষা করবেন।
সংগীত
আকাশ:টুটুল ভাই, বেইজিংয়ে এখন গ্রীষ্মকাল, আমার সবচেয়ে প্রিয় ঋতু। এ সময় সন্ধ্যায় বাতাসের মধ্যে যদি ১০ কিলোমিটার রানিং করতে পারি, তাহলে ভীষণ ভালো অনুভূতি কাজ করে। মনে হয়, যদি সবসময় এভাবে সময় কাটাতে পারতাম। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
টুটুল:...
আকাশ: বন্ধুরা, এ সুন্দর ঋতুতে, এখন আমি একটি কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। এই কথাটি আমি একটি ওয়েবসাইটে দেখেছি। তা হলো: জীবনে কাউকে দোষারোপ করবেন না, ভালো মানুষ আপনাকে সুখ দেবে, খারাপ মানুষ আপনাকে অভিজ্ঞতা দেবে। আর সবচেয়ে বাজে লোক আপনাকে কিছু শিক্ষা (শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা) দেবে, সবচেয়ে ভালো লোক আপনাকে কিছু সুন্দর স্মৃতি দেবে। টুটুল ভাই, এ কথা কেমন?
টুটুল:....