সংবাদ পর্যালোচনা :'নতুন যুগে আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাবে চীনা বাহিনী'
  2019-08-01 15:01:41  cri

আজ পয়লা অগাস্ট। চীনের গণমুক্তি ফৌজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। চীন সবসময় আত্মরক্ষামূলক প্রতিরক্ষানীতি মেনে চলে। চীনা বাহিনী মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির ধারণা অনুসরণ করে, আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং নতুন যুগে আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শান্তিপূণ ও নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তুলতে অবদান রেখে চলেছে চীনের সশস্ত্রবাহিনী।

চীনা গণমুক্তি ফৌজ প্রতিষ্ঠার ৯২তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে, বিভিন্ন দেশের সামরিক মহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন সময়ে চীনা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন। তাদের মতে, চীনা বাহিনী বড় দেশের সশস্ত্রবাহিনীর দায়িত্ব পালন করে বিশ্বশান্তির পক্ষের দৃঢ় শক্তিতে পরিণত হয়েছে। চীনের বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা গভীরতর করে বিশ্বশান্তি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় আরও বড় অবদান রাখতেও তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

চীন-জার্মানি 'যৌথ ত্রাণ-২০১৯' মেডিকেল ও লজিস্টিক যৌথমহড়া ১২ জুলাই শেষ হয়। চীনের মেডিকেল ও লজিস্টিক বাহিনী প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপে গিয়ে যৌথ মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। জার্মান ফেডারেল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা থমাস সিলবারহর বলেন, কার্যকর একটি মহড়ার জন্য উন্নত সরঞ্জাম এবং পেশাদার গ্রুপের সহযোগিতা প্রয়োজন। দীর্ঘ সময়ের বিনিময়ের মাধ্যমে চীনা ও জার্মান বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এখন দু'পক্ষ পরস্পরের জরুরি ত্রাণ-প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানে। দু'বাহিনীর সহযোগিতা উভয়ের জন্য কল্যাণকর এবং আন্তর্জাতিক মানবিক ত্রাণ ও সহায়তা কর্তব্য বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে চীন ৩০টির বেশি দেশের সঙ্গে শতাধিক যৌথ মহড়া ও প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশগ্রহণ করেছে। এসব মহড়ার কোনো কোনোটি অনুষ্ঠিত হয়েছে চীনের নিকট সমুদ্রে, কোনো কোনোটি দূর সমুদ্রে; কোনো মহড়ায় চীনা স্থলবাহিনী অংশ নিয়েছে, আবার কোনো মহড়ায় বিমান ও নৌবাহিনী অংশ নিয়েছে। পাশাপাশি, চীন বড় দেশ হিসেবে নিজের আন্তর্জাতিক দায়িত্ব ইতিবাচকভাবে পালন করে যাচ্ছে।

জাতিংসঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অর্থায়নে অগ্রগামী দেশগুলোর অন্যতম চীন এবং সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী পাঠায় এই দেশ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, চীনা বাহিনী মোট ২৪টি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে অংশগ্রহণ করে এবং ৩৯ হাজার শান্তিরক্ষী পাঠায়। এর মধ্যে ১৩ জন চীনা সৈনিক শান্তিরক্ষা করতে গিয়ে জীবন উত্সর্গ করেন।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব অনুযায়ী, গেল ১০ বছরে চীন এডেন ও সোমালি সমুদ্রে শতাধিক জাহাজবহর পাঠিয়েছে এবং ৬৬০০টির বেশি দেশি-বিদেশি জাহাজকে সুরক্ষা দিয়েছে; ৭০টির বেশি জাহাজকে উদ্ধার করেছে, ত্রাণ সরবরাহ করেছে, বা এসকর্ট সুবিধা দিয়েছে।

এ পর্যন্ত চীন ১৫০টির বেশি দেশের সঙ্গে সামরিক বিনিময় করেছে এবং ৪১টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ৫৪টি প্রতিরক্ষাবিষয়ক আলোচনাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। ২০১২ সাল থেকে, শতাধিক দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানরা চীন সফর করেছেন। চীনা বাহিনী পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতামূলক নতুন ধরনের নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত 'নতুন যুগে চীনের প্রতিরক্ষা শেত্বপত্র'-এ আবারও জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে, চীন কখনও আধিপত্যবাদী আচরণ করবে না এবং নিজের সামরিক প্রভাববলয় বিস্তারের চেষ্টা করবে না। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ ছিয়ান বলেছেন, চীন একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ। চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে চলে এবং স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক নীতি মেনে চলে। এ কারণে চীন সবসময় আত্মরক্ষামূলক প্রতিরক্ষানীতিতে অবিচল থাকবে। (শিশির/আলিম/লিলি)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040