বন্ধুরা, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখন বন্যা দেখা দিয়েছে। অনেক মানুষ এখন দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। এছাড়া, সম্প্রতি দেশটির বিভিন্ন জায়গায় বজ্রপাতে অনেক লোক নিহত হয়েছেন। এ খবর শুনে আমি মনে অনেক কষ্ট পেয়েছি।
টুটুল: হ্যাঁ। বাংলাদেশের গণমাধমের খবর অনুযায়ী, ১৩ জুলাই দেশটির পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, নেত্রকোনা অঞ্চলে ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে ১৪জন নিহত এবং একজন আহত হয়েছে।
জানা গেছে, এ বছরের মে এবং জুন মাসে দেশটিতে বজ্রপাতে ১২৬জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২১জন নারী এবং ৭জন শিশু। তাদের বেশিরভাগই মাছ ধরার সময় বা বাইরে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হয়। এ ছাড়া, এতে আরো ৫৩জন আহত হয়েছে।
আকাশ: বন্ধুরা, বজ্রপাতের সময় কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয়, সে বিষয়ে কিছু তথ্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো।
টুটুল:১. পাকা বাড়ির নীচে আশ্রয় নিন। ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনো দালানের নীচে আশ্রয় নিতে পারেন।
২. উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাত হলে উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সব জায়গায় যাবেন না বা কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় কোনো যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।
৩. জানালা থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।
৪. ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শে এসে অনেকে আহত হন।
৫. টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাস পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।
৬. বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তবে গাড়ি কোনো বারান্দা বা পাকা ছাউনির নীচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
৭. বজ্রপাত পড়া অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তাই কাছাকাছি কোথাও বজ্রপাত হলে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।
৮. বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি বের হতেই হয় তবে পা ঢাকা জুতো পড়ে বের হোন।
৯. বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন। যে দিকে বজ্রপাত পড়ার প্রবণতা বেশি সে দিক বর্জন করুন।
আকাশ: টুটুল ভাই, ছোটবেলায় একদিন বিকালে, বড় বৃষ্টির সময় আমি এবং আমার কাজিন সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে শুরু করি। তখন অনেক আনন্দ। কিন্তু এখন তোমার কাছ থেকে এ তথ্য জানার পর বুঝতে পারলাম তখন তা কতটা বিপজ্জনক ছিলো।
টুটুল: ভাই, আমারও এরকম অনেক অভিজ্ঞা আছে।....
আকাশ: বন্ধুরা, বজ্রপাতের সময় সবসময় সাবধানে থাকবেন, কেমন?
টুটুল:…
সংগীত
আকাশ: বন্ধুরা, তিন মাস পর, সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস ১৮ অক্টোবর চীনের হু পেই প্রদেশের উ হান শহরে আয়োজিত হবে। এ পর্যন্ত ১০৫টি দেশের ১০ হাজার ৭১৯জন মিলিটারি সদস্যের নিবন্ধন তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। নিবন্ধনের কাজ এখনও চলছে। জানা গেছে, এবারের বিশ্ব মিলিটারি গেমসের স্টেডিয়াম নির্মাণ, প্রতিযোগিতা সেবাসহ বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ এখন সুষ্ঠুভাবে চলছে। স্বাগতিক শহর উ হান বিশ্বের কাছে একটি অসাধারণ আন্তর্জাতিক মিলিটারি গেমস আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা এখন এ বিষয়-সম্পর্কিত খবর আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?
টুটুল: বিশ্ব মিলিটারি গেমস আন্তর্জাতিক মিলিটারি স্পোর্টস কাউন্সিল (সিআইএসএম) কর্তৃক আয়োজন করা হয়। তা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী মিলিটারিদের সবচেয়ে উচ্চ মানের বড় আকারের গেমস। প্রতি চার বছর পর এর এই গেমস আয়োজিত হয়। তা হচ্ছে অলিম্পিক গেমসের পর দ্বিতীয় বড় আকারের বিশ্ব গেমস। এ গেমস হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্মির নিজের ভাবমূর্তি প্রদর্শন, বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান ও আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এজন্য এ গেমসের অপর নাম হলো 'আর্মি ম্যান গেমস'।
সপ্তম মিলিটারি গেমসের নির্বাহী কমিটির উপ-পরিচালক কুও চিয়ান চোং সম্প্রতি বেইজিংয়ে জানান, সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস ১৮ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত চীনের হু পেই প্রদেশের উ হান শহরে আয়োজন করা হবে। দশ দিনব্যাপী এ গেমসের মধ্যে শুটিং, সুইমিং, ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড, বাস্কেটবলসহ অলিম্পিক গেমসের ইভেন্টস এবং আরো কিছু সামরিক বৈশিষ্ট্যময় ইভেন্ট থাকবে। কুও চিয়ান চোং বলেন,
আকাশ: এ গেমসের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সামরিক ইভেন্টের প্রতিযোগিতা। যেমন-প্যারাস্যুট। ওই সামরিক ইভেন্ট হলো সত্যিকারের সামরিক কমব্যাট ও প্রশিক্ষণ। মিলিটারি গেমসের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হচ্ছে ওই সামরিক বৈশিষ্ট্যের ইভেন্ট।
টুটুল: সামরিক বৈশিষ্ট্য ছাড়াও এবারের মিলিটারি গেমসের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে 'জনগণের জন্য উন্মুক্ত'। জানা গেছে, আগের মিলিটারি গেমসগুলো জনগণের জন্য উন্মুক্ত ছিলো না। বেশিরভাগ প্রতিযোগিতা তখন মিলিটারি ক্যাম্পে আয়োজিত হতো। একটু রহস্যময়। এবারের মিলিটারি গেমস উ হান শহরে আয়োজিত হবে। কুও চিয়ান চোং বলেন,
আকাশ: "এ ধরনের ধারণা অনুসারে, এবারের মিলিটারি গেমসের সামরিক ইভেন্টগুলো জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সবাই বিশ্ব মিলিটারি গেমসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কিনতে পারবেন। সবাইকে আসার জন্য স্বাগত জানাচ্ছি। সবাই আসুন। সেনা খেলোয়াড়দের খেলার সৌন্দর্য উপভোগ ও অনুভব করুন। সবাইকে স্বাগতম।"
টুটুল: জানা গেছে, এবারের গেমসের প্রতিটি সাধারণ টিকিটের মূল্য রাখা হবে ৫০ ইউয়ান, সবচেয়ে সস্তা টিকিটের মূল্য রাখা হবে ১০ ইউয়ান, সবচেয়ে দামী টিকিটের মূল্য হবে ২০০ ইউয়ান। ৯০ শতাংশ টিকিটের মূল্য হবে ৮০ ইউয়ানের নিচে। জনগণের সুবিধা ও কল্যাণ বয়ে আনা হলো এবারের গেমসের একটি নীতি।
বর্তমানে এবারের এই মিলিটারি গেমসের স্টেডিয়াম নির্মাণ ও প্রতিযোগিতা সেবাসহ সব প্রস্তুতিমূলক কাজ সুষ্ঠুভাবে চলছে। ৩৫টি মিলিটারি গেমসের স্টেডিয়াম নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ৩৮টি টেস্ট ইভেন্টের ব্যবস্থা পরিকল্পনা এখন সুষ্ঠুভাবে চলছে। রেফারি নির্বাচন, এন্টি-ডোপিংয়ের কাজও এখন চলছে। খেলোয়াড় ভিলেজের অ্যাপার্টমেন্টভবন ও ক্যান্টিনের নির্মাণ প্রকল্প সব সমাপ্ত হয়েছে। সমস্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের কাজ শেষ হয়েছে, এখন প্রশিক্ষণ কাজ চলছে।
সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমসের নির্বাহী কমিটির উপ-পরিচালক হু ইয়া পো প্রতিশ্রুতি দেন যে, 'সবুজ, শেয়ারিং, উন্মুক্ত, পরিচ্ছন্ন'-র চেতনা নিয়ে উ হান একটি অসাধারণ তাত্পর্যসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মিলিটারি স্পোর্টসের সম্মিলনী আয়োজন করবে। তিনি আরো জানান, এবারের মিলিটারি গেমস আয়োজনের মাধ্যমে উ হান শহরের কাজ, চেহারা এবং নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার মান উন্নত করা হবে। তিনি বলেন,
আকাশ: "আমরা মিলিটারি গেমস আয়োজন উপলক্ষে, কিছু কিছু প্রয়োজনীয় শহরের কাজ উন্নত করেছি, সংস্কারের কাজও করেছি। মিলিটারি গেমসের দাবি পূরণ করা ছাড়াও, শহরের টেকসই উন্নয়নও আমরা বিবেচনা করছি। মিলিটারি গেমস আয়োজন শহরের ইতিবাচক পরিবর্তন বয়ে আনবে, তা আমাদের শহরের বাসিন্দারা অনুভব করতে পারবেন। যেমন- শহর আরো পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল হবে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার বন্ধুরা আসার পর উ হান শহরের প্রশংসা করবেন, জনগণ তখন গর্ব অনুভব করবেন।"
টুটুল: এবার মিলিটারি গেমসের মশাল প্রজ্বলন হবে ১ অগাস্ট চীনের গণমুক্তি ফৌজের জন্মস্থান- নান ছাংয়ে। তারপর দেশব্যাপী মশাল রিলে আয়োজন করা হবে।
আকাশ: টুটুল ভাই, আমি আসলে সব খেলাধুলার ইভেন্ট, বিশেষ করে বড় আকারের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা, যেমন- বিশ্বকাপ, অলিম্পিক গেমস ভীষণ পছন্দ করি। এজন্য এ বারের মিলিটারি গেমসের প্রতিও আমি ভীষণ আগ্রহী।
টুটুল: আমিও বিভিন্ন স্পোর্টসের প্রতি ব্যাপক আগ্রহী....