২০১৯ সালে পরিষ্কার বায়ু কর্মকাণ্ড ফোরাম অনুষ্ঠিত
  2019-07-09 14:03:09  cri
জুলাই ৯: ২০১৯ সালের 'আন্তর্জাতিক মহানগরের পরিষ্কার বায়ু কর্মকাণ্ড ফোরাম' গতকাল (সোমবার) বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ পরিকল্পনা বিভাগ এবং প্যারিস, লন্ডন, বার্লিন ও টোকিওসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহানগর ও শহরের পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কিত কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা ফোরামে বায়ুর মান উন্নতকরণ ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের ব্যবস্থা এবং মাঝারি ও স্থায়ী পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

চীনের প্রকৌশল একাডেমির বিদ্যানুরাগী ও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ একাডেমির প্রধান হ্যে খ্যে বিন ফোরামে গত ২০ বছরে বেইজিং শহরে বায়ুদূষণ মোকাবিলা ব্যবস্থার অনুশীলন ও সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বেইজিংয়ের অর্থনীতির স্থায়ী ও স্থিতিশীল বৃদ্ধির পরিস্থিতিতে পরিবেশের মান অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। কোনো কোনো দূষণের হার বড় শহরগুলোর চেয়ে কম।

তিনি জানান, ২০১৭ সালে বেইজিংয়ে প্রতি ঘনমিটারে সালফার ডাই অক্সাইড ছিল ৮ মাইক্রোগ্রাম। ২০১৮ সালে এ পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ মাইক্রোগ্রামে। জাতিসংঘ পরিবেশ বিভাগের বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২০ বছরে বেইজিংয়ে সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড ও পিএম১০-এর পরিমাণ যথাক্রমে ৯৩, ৩৮ ও ৫৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া, ওজন গ্যাস মোকাবিলা আন্তর্জাতিকভাবে কঠিন কাজ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু বেইজিং শহর ২০১৫ সালের পর উল্লেখযোগ্যভাবে ওজনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করেছে।

নীল আকাশ রক্ষার যুদ্ধ জয় করার জন্য চীনের প্রকৃতি ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে 'বেইজিং, থিয়ানচিন ও হ্যপেই এবং কাছাকাছি অঞ্চল ২০১৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শরত্কাল ও শীতকালে বায়ুদূষণ বহুমুখী মোকাবিলার কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা' প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছে। এতে বিশেষ সাফল্যও অর্জিত হয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ পরিকল্পনা বিভাগের জলবায়ু ও পরিষ্কার বায়ু ফেডারেশনের উচ্চপদস্থ বায়ু বিশেষজ্ঞ নাথান বারগফোর্ড-পার্নেল চীনের বহু অঞ্চলে একসাথে বায়ুদূষণ মোকাবিলার পদ্ধতির প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, চীন একটি জনবহুল দেশ হিসেবে মানবজাতির উন্নয়ন জোরদারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যেমন, জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ, বায়ুদূষণ মোকাবিলা, বায়ুর মান উন্নয়ন ও বিশেষ করে টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে। চীনের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কার্যকরী। এক্ষেত্রে চীনের প্রচুর বিজ্ঞান-প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও অনুশীলনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শুধু বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারের মধ্যেই নয়, বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৌর সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে চীন। চীন শুধু দেশের মধ্যে এসব ব্যবস্থা কার্যকর করেনি, বরং বিশ্বের সঙ্গেও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছে।

সম্প্রতি বায়ুদূষণ মানবদেহের জন্য একটি বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এশিয়ার ৯২ শতাংশ মানুষ গুরুতর বায়ুদূষণের সম্মুখীন। চীন বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে দৃঢ়ভাবে নীল আকাশ রক্ষার লড়াই বজায় রেখেছে। অংশগ্রহণকারীরা এজন্য চীনের প্রশংসা করেন। জাতিসংঘের পরিবেশ পরিকল্পনা বিভাগের চীনের প্রধান প্রতিনিধি স্যু রুই হ্য বলেন, ২০১৯ সালে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বৈশ্বিক অনুষ্ঠান হাংচৌতে অনুষ্ঠিত হয়। এ বছরে প্রতিপাদ্য 'নীল আকাশ রক্ষার লড়াই জয় করা, আমরা সবাই অংশগ্রহণকারী'। কার্যক্রমে বিশ্বের কাছে চীনের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার দৃঢ়তা ফুটিয়ে তুলেছে।

মহানগরী বেইজিং জাতিসংঘের পরিবেশ সুরক্ষা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী অংশীদার। চতুর্থ জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে পরিবেশ সুরক্ষা বিভাগ বেইজিং শহর ও ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে বেইজিং শহরের বায়ুদূষণ মোকাবিলার ২০ বছরের মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, বেইজিং শহরের বায়ুর মান ভীষণ উন্নত হয়েছে। বেইজিং নিজের অভিজ্ঞতা অন্যান্য শহরের সঙ্গে বিনিময় করতে চায়। (ছাই/তৌহিদ/ফেই)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040