ব্রাজিল সময় ২৫ জুন বেইজিং পৌরসভা পিপলস সরকার, রিও স্টেট গভর্নমেন্ট সাংস্কৃতিক অফিস, পর্যটন অফিস, স্পোর্টস অফিস এবং রিও দি জেনিরোয় চীনের কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে প্রথম চীন-ব্রাজিল সাংস্কৃতিক পর্যটন সেমিনার রিও দ্য জেনিরোয় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠককালে অতিথিরা চীন ও ব্রাজিলের মধ্যে রেডিও, চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে মতামত বিনিময় করেছেন এবং ভবিষ্যতে সর্বাত্মক গভীর সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বেইজিং ব্রডকাস্টিং অ্যান্ড টেলিভিশন ব্যুরোর পরিচালক ইয়াং শুও তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, এবার সেমিনারে বেইজিং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন অর্গানাইজেশন এবং নেটওয়ার্ক অডিও ভিজুয়াল প্ল্যাটফর্মের প্রধানের সঙ্গে রিওতে এসেছিলাম। আমি ব্রাজিলীয় শিল্পকর্মীদের সঙ্গে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন উন্নয়ন ও উদ্ভাবন এবং ডিজিটাল তথ্য যুগে নেটওয়ার্ক অডিও ভিজুয়াল বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে এবং গভীর বিনিময় ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি; যাতে দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও জনগণ আরও ঘনিষ্ঠ হয়। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কে ইয়াং শুও বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন,
"প্রথমে, উন্মুক্তকরণ ও সহনশীলতা মেনে চলা উচিত। বিষয়বস্তু বিনিময়ের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনাও জরুরি। নীতি, পুঁজি ও প্রশিক্ষণের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা দুই দেশের মধ্যে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করবো। একই সঙ্গে, সামগ্রিক উদ্ভাবনের মাধ্যমে চীন ও ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক সম্পদের ব্যবহার করব। দ্বিতীয়টি হলো, যৌথ নির্মাণ ও বিনিময় করা এবং প্রযুক্তিগত বিনিময়ের নতুন চ্যানেল তৈরি করা। আমরা ব্রাজিলের সঙ্গে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও নেটওয়ার্ক অডিও ভিজ্যুয়ালের জন্য নতুন প্রযুক্তি বিকাশ ও প্রয়োগে ডকিং সহযোগিতা শক্তিশালী করতে এবং ডিজিটাল যুগে একে অপরের ক্ষমতায়ন করতে ইচ্ছুক। তৃতীয়টি, পারস্পরিক শিক্ষা মেনে চলতে এবং ব্যাপক বিনিময়ের জন্য একটি বিস্তৃত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। বেইজিংয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন সংস্কৃতি উৎসব এবং প্রদর্শনীগুলিতে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে স্বাগত জানাই। এতে বিনিময় ও সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হয় এবং সমতা সংলাপের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়।"
রিও দি জেনিরোয় চীনের কন্সুলার জেনারেল লি ইয়াং বলেন, এই সেমিনারের উদ্যোগের একাধিক অর্থ আছে। এটি কেবল চীন-ব্রাজিল অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিনিময় ও সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতার মধ্যে ভারসাম্যের জন্যই নয়, বরং একে অপরের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর সহযোগিতা উন্নয়নের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে।
লি ইয়াং বলেন,
"চীন ও ব্রাজিলের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সীমিত। মানবিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা তুলনামূলকভাবে কম এবং বর্তমান বিনিময়গুলি যথেষ্ট নয়। মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক দেশের মধ্যে অন্য সহযোগিতার ভিত্তি ও প্রেরণা। যদি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও ব্যাপক ও টেকসই উন্নত হয়, তাহলে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিনিময় অপরিহার্য।"
সেমিনারে, চীন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব চমৎকার টিভি অনুষ্ঠান নিয়ে আসে এবং আশা করে যে তারা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের ক্ষেত্রে চীন ও ব্রাজিলের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতা উন্নত করতে পারবে। এর মধ্যে, আইসিই'র চীফ কনটেন্ট অফিসার ওয়াং সিয়াওহুই ব্রাজিলের একই বাণিজ্যের বন্ধুদের কাছে পাঁচটি অসাধারণ চীনা টিভি নাটক, বিভিন্ন শো এবং ডকুমেন্টারি কর্ম উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি আশা করেন যে, দুই কোম্পানি সৃষ্টি এবং সম্প্রচারের মতো সমগ্র শিল্প চেইনগুলির পরিচয় দেবে এবং সহযোগিতা করবে।
রিও স্টেটের সংস্কৃতি ও উদ্ভাবন বিভাগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালক মার্কো ক্যাসিমিরো এ সেমিনারের উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ন করেছেন। তিনি বলেন, রিওতে সাংস্কৃতিক জনপ্রিয়তা প্রচার করা রিও স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ কালচার অ্যান্ড ইনোভেশন অর্থনীতির লক্ষ্য। তিনি বলেন, আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার চীনসহ কিছু আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা করবো।
তিনি বলেন,
"আমি মনে করি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিনিময়কে প্রথম স্থান দেওয়া উচিত। শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক বিনিময় গভীর হলে আমাদের সম্পর্ক আরও নিকটবর্তী হবে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও সহজ ও সুষ্ঠু হবে। আমরা এখন আশা করি বিশ্বের অনেক মানুষ সিনেমা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলির মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলি চালুর মাধ্যমে রিও সংস্কৃতি বুঝতে পারবে। বিশেষ করে, আমি আশা করি যে, আরও বেশি চীনা জনগণ রিও সংস্কৃতির প্রশংসা করবে।"
সেমিনারে বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরোর উপ-পরিচালক কুয়ান ইয়ু, রিও ক্রিয়েটিভ সম্মেলনের সভাপতি রাফায়েল লাজারিনি, চীন-ব্রাজিল সংস্কৃতি, পর্যটন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং উভয় দেশের সাংস্কৃতিক ও পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করেন। তাদের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন। সেমিনারের দিনটি ফলপ্রসূ ছিল এবং উভয় পক্ষ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রদর্শনী, নতুন মিডিয়া ও টিভি স্টেশনগুলির মাধ্যমে সহযোগিতা করে।