প্রিয় শ্রোতা, আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় এ সম্পর্কে শুনবেন একটি প্রতিবেদন।
ওসাকায় অবস্থানকালীন দু'দিনে প্রেসিডেন্ট সি টানা ২০টিরও বেশি কার্যক্রমে অংশ নেন। তিনি বহুপক্ষবাদের পতাকা তুলে ধরে অংশীদারি সহযোগিতার চেতনায় পারস্পরিক কল্যাণকর চিন্তাধারার অনুশীলন করেন এবং অভিন্ন উন্নয়নের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে ওয়াং ই বলেন, সফরকালে প্রেসিডেন্ট সি জি-টোয়েন্টি শীর্ষসম্মেলনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশ নেন। চীন ও আফ্রিকার নেতৃবৃন্দের বৈঠক, ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের বৈঠক এবং চীন, রাশিয়া ও ভারতের বৈঠকসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সময় তিনি যৌথ আলোচনা, নির্মাণ ও সমন্বিত অর্জনের প্রতি আহ্বান জানান।
জি-টোয়েন্টি গোষ্ঠীর শীর্ষসম্মেলন চলাকালে চীন, ফ্রান্স ও জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ছোট আকারের সম্মেলন আয়োজন করে। চীন অব্যাহতভাবে বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলার প্রক্রিয়ায় সমর্থন জানায় বলে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট সি। বিভিন্ন পক্ষের প্রচেষ্টায় শীর্ষসম্মেলনে বহুপক্ষবাদ সমর্থনের মূল কণ্ঠস্বর প্রকাশিত হয়, যা আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে স্থিতিশীলতা ও ইতিবাচক শক্তি প্রদান করে। চীন বহুপক্ষবাদে যে সমর্থন করে তা আন্তর্জাতিক মঞ্চে অনেক বেশি সমর্থন ও সমঝোতা অর্জন করছে বলে জানান ওয়াং ই।
ওয়াং ই আরো বলেন, শীর্ষসম্মেলনের অবকাশে প্রেসিডেন্ট সি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক উন্নয়নসংক্রান্ত মৌলিক ইস্যুতে চীনের অবস্থান তুলে ধরেন। তাঁরা বর্তমানের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আন্তরিকভাবে যোগাযোগ করেন। অব্যাহতভাবে সমন্বয়, সহযোগিতা ও স্থিতিশীলতাকে মূল সুর হিসেবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং সমতা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে আর্থ-বাণিজ্যিক সংলাপ আবারও শুরু করার ব্যাপারে একমত হন। তাঁদের উপনীতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সমাজ ও বিশ্ব বাজারে ইতিবাচক সংকেত দিয়েছে বলে মনে করেন ওয়াং ই।
ওয়াং ই বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নানা দ্বন্দ্ব ও মতভেদ থাকা সত্ত্বেও দু'দেশের নেতাদ্বয়ের নির্ধারিত নীতি ও মতৈক্য অনুযায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সঠিক খাতে অবিচল থাকলে, পারস্পরিক উপকারিতার ভিত্তিতে সহযোগিতা চালালে, পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে মতভেদ নিয়ন্ত্রণ করলে এবং সঠিকভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সমস্যা সমাধান করলে দু'দেশের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে বলে আশা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ওয়াং ই বলেন, প্রেসিডেন্ট সি'র এবারের ওসাকা সফরকে উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্ব দিয়েছে জাপান। চীন ও জাপানের নেতারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে দশটি মতৈক্যেও পৌঁছেছেন। তা ছাড়া, প্রেসিডেন্ট সি পৃথক পৃথকভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মার্কেলসহ বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে মতবিনিময় করেন।
ওয়াং ই বলেন, সফরকালে প্রেসিডেন্ট সি প্রকাশ্য ভাষণে ও বৈঠকসহ বিভিন্ন জায়গায় চীনের উন্নয়নের চিন্তাধারা ও প্রস্তাব ব্যাখ্যা করেন। তিনি চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে ভালো দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা ও যৌথভাবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণের চিন্তাধারা তুলে ধরেন। তাঁর এসব কথা সারা বিশ্বে একই আবেদন সৃষ্টি করেছে।
অবশেষে ওয়াং ই বলেন, চলতি জুন মাসের পর প্রেসিডেন্ট সি টানা চার বার বিদেশ সফর করেছেন; যা গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কূটনীতির ইতিহাসে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এ চার কূটনৈতিক কার্যক্রম চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়াতে এবং কূটনৈতিক পরিস্থিতি পূর্ণাঙ্গ করে তুলতে সক্ষম বলে উল্লেখ করেন ওয়াং ই।
(লিলি/তৌহিদ/ফেইফেই)