ওইসিডি'র বিশেষজ্ঞরা চীনা অর্থনীতির ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী
  2019-05-27 15:09:58  cri
মে ২৭: সম্প্রতি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা-ওইসিডি'র বিশেষজ্ঞরা 'বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যতে দৃষ্টিপাত রিপোর্ট-২০১৯' প্রকাশ করেছেন। রিপোর্টে বলা হয়, আগামী কয়েক বছরে কাঠামোগত সংস্কারসহ বিভিন্ন কারণে চীনা অর্থনীতি মন্থর হতে পারে; তবে ভবিষ্যতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে।

বর্তমানে ফ্রান্সে অবস্থিত ওইসিডি 'বৈশ্বিক অর্থনীতির ভবিষ্যতে দৃষ্টিপাত রিপোর্ট-২০১৯' প্রকাশ করে। এতে চলতি ও আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতি এবং প্রধান অর্থনৈতিক সত্তার প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। চীনের অর্থনীতি প্রসঙ্গে ওইসিডি'র রিপোর্টে পূর্বাভাস দেওয়া হয় যে, ২০১৯ সালে চীনের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির হার ৬.২ শতাংশ এবং ২০২০ সালে তা ৬.০ শতাংশ হতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চিত উপাদান বেড়ে যাওয়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হওয়া এবং চীনে চলমান কাঠামোগত সংস্কারসহ বিভিন্ন উপাদান সত্ত্বেও রিপোর্টে বলা হয়, চীনের মাথাপিছু নিষ্পত্তিযোগ্য আয়ের স্থিতিশীল বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা- বিশেষ করে শক্তিশালী ভোক্তারা চীনের অর্থনীতি স্থিতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠছে।

সম্প্রতি চীন সরকারের প্রকাশিত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের প্রথম কোয়ার্টারে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ভোক্তার ব্যয়ের হার ছিল ৬৫.১ শতাংশ। তাই ওইসিডি'র চায়না ডেস্কের মহাপরিচালক মার্গিট মলনার বলেন, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ভোক্তার হার বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন,

'এটি সঠিক দিক। চীনের ধাপে ধাপে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়ায় ভোক্তার হার বাড়বেই। ভোক্তার ক্ষেত্রে আরও অনেক সম্ভাবনা থাকবে বলে আমি মনে করি।'

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই উত্থাপিত কাঠামোগত নীতি অব্যাহতভাবে বাস্তবায়ন করা অর্থনীতিতে ভোক্তার অবদান চাঙ্গা করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন,

'শহরায়ন সংক্রান্ত নতুন নীতিমালায় কয়েকটি নীতি উত্থাপিত হয়েছে। প্রথমত ১০ কোটি লোক গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে স্থানান্তরিত হবে; তারপর শহরে থাকা কৃষি-শ্রমিকরা শহরবাসী ও জেলাবাসীর মতো সমান অধিকার পাবে। এ দু'টি নীতির ফলে ২০২০ সালে ১১ শতাংশ ভোক্তা বেড়ে যাবে।'

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ অব্যাহত থাকায় বহির্বিশ্ব চীন থেকে বিদেশি পুঁজির সরিয়ে নেওয়ায় কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের প্রথম ৪ মাসে চীনে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩০৫.২৪ বিলিয়ন ইউয়ান। যা গত বছরের অনুরূপ সময়ের তুলনায় ৬.৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে যন্ত্রনির্মাণ শিল্পে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের হার গত বছরের অনুরূপ সময়ের তুলনায় ১১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে মার্গিট বলেন, চীনের অর্থনীতিতে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের ভালো অবস্থান হলো প্রবৃদ্ধির প্রধান কারণ। তিনি বলেন,

'অন্যান্য দেশের তুলনায় চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার উচ্চ পর্যায়ের। শুধু চলতি বছর নয়, হয়তো স্বল্প ও মাঝামাঝি সময়েও এই অবস্থা পরিবর্তিত হবে না। বিশেষ করে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের পরিবেশও উন্নত হওয়ায় এই হার আরও বাড়বে বলে আমি মনে করি।'

বর্তমানে আর্থিক শিল্পে দ্রুত উন্মুক্তকরণ এবং মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ জোরদারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা রক্ষা করা এবং আরও ব্যাপকভাবে পণ্য ও সেবা রপ্তানি বাড়ানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ চীনের অর্থনীতির সুদূরপ্রসারী উন্নয়নে সহায়ক হবে। চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন প্রসঙ্গে মার্গিট আশাবাদী। তিনি বলেন,

'আমি মনে করি, চীনের অর্থনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্র বিশাল। কমপক্ষে আগামী ১০ বা ২০ বছরের মধ্যে উন্নয়নের বিশাল জায়গা তৈরি হয়েছে। কাঠামোগত সংস্কারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।'

(লিলি/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040