দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামের তথ্যমাধ্যম ও থিংক থ্যাংক প্রেসব্রিফিং ঢাকায় অনুষ্ঠিত
  2019-05-15 09:19:57  cri


বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের উদ্যোগে গত ৮ মে বিকেলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামের তথ্যমাধ্যম ও থিংক থ্যাংক প্রেসব্রিফিং। বাংলাদেশের ৪০টির বেশি তথ্যমাধ্যমের সাংবাদিক ও প্রধান থিংকট্যাংকের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এ প্রেসব্রিকিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চাং চুও দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামের ফলাফল এবং ' এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের আওতায় চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার অবস্থা তুলে ধরেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন,এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য হলো: "'এক অঞ্চল, এক পথ'-এর আওতায় যৌথ নির্মাণ এবং সুন্দর ভবিষ্যত উন্মোচন"। ১৫০টি দেশ ও ৯২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার ৬ হাজারের বেশি অতিথি এতে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন ও বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন দুটি শাখা ফোরামে অংশগ্রহণ করেন।

ফোরাম চলাকালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আরও বেশি সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্ট সি বলেন, চীন তার বাজারকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও সহজগম্য করবে, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ-ব্যবস্থা জোরদার করবে, পণ্য ও পরিষেসা আমদানি বাড়িয়ে দেবে, এবং বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ নীতির বাস্তবায়নের উপর বেশি করে গুরুত্ব দেবে।

নতুন পর্যায়ে চীন ও বাংলাদেশের বাস্তব সহযোগিতা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত ছাং চুও বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট 'এক অঞ্চল, এক পথ'-কে এশিয়ার উন্নয়নের দুটি ডানার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের প্রধান সহযোগী ও অংশীদার চীনের প্রতিবেশী দেশগুলো। এই দেশগুলো এ উদ্যোগ থেকে উপকৃত হবে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথমদিকে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ সমর্থন করে। দু'দেশের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে চীন ও বাংলাদেশ 'যৌথ আলোচনা, নির্মাণ ও ভোগ'-এর নীতি অনুসারে বেশ কয়েকটি সহযোগিতামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' দু'দেশের জনগণের জন্য সুযোগ ও উন্নয়নের পথে পরিণত হয়েছে। ইতিহাসের নতুন আরম্ভবিন্দুতে দাঁড়িয়ে দু'দেশের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে সার্বিক আন্তঃযোগাযোগ জোরদার করা হবে এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' কাঠামোতে বাস্তব সহযোগিতা গভীরতর করা হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন-বাংলাদেশ আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর ও উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়। রাষ্ট্রদূত ছাং চুও বলেন, গেল কয়েক বছরে, চীন ও বাংলাদেশ ১১টি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে এবং পদ্মা সেতু ও রেলপথ সংযুক্ত লাইন, দূষিত পানি পরিশোধন কারখানা, কর্ণফুলি সুরঙ্গ, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ণসহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়নকাজ শুরু করে। এ ১১টি প্রকল্পে চীন সরকার ১২৩০ কোটি ইউয়ানের সুযোগ-সুবিধার ঋণ দিয়েছে এবং প্রেফারেন্সিয়াল এক্সপোর্ট বায়ার ক্রেডিট দিয়েছে ৩৯০ কোটি মার্কিন ডলার।

দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রসঙ্গে ছাং চুও বলেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে তিনি খুব খুশি এটা দেখে যে, গেল এক বছরে চীন ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সফরদলের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। গেল বছর ৪৯টি দল পরস্পরের দেশ সফর করে। পাশাপাশি, গেল বছর চীনা দূতাবাস অল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ছাত্রভিসা ইস্যু করে ৪৪০০টির বেশি, যা আগের বছরের চেয়ে ১০০০টি বেশি। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ উন্নয়নের প্রবণতা এবং জনগণের ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং সবাই এ থেকে উপকৃত হতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন রাষ্ট্রদূত। (শিশির/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040