সমৃদ্ধ এশিয়া গড়ে তুলতে নতুন চালিকাশক্তি যোগাবে 'এশীয় সভ্যতা সংলাপ'
  2019-05-13 15:30:29  cri
পাঁচ বছর আগে এশিয়া সভ্যতার সংলাপ আয়োজনের প্রস্তাব দেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। আগামী বুধবার এই প্রস্তাব বাস্তবে পরিণত হবে। এশিয়ার ৪৭টি দেশ ও বাইরের কিছু দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা এবারের সংলাপে অংশগ্রহণ করতে বেইজিংয়ে আসবেন। 'সমৃদ্ধ এশিয়া গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নতুন চালিকাশক্তি যোগাবে এশিয়ার সভ্যতা সংলাপ। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমি এ বিষয়েই কথা বলবো।

এবারের সংলাপের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'সভ্যতার বিনিময় থেকে পারস্পরিক শিক্ষা ও অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটির গড়ে তোলা'। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ইউনেস্কোর মঞ্চে প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে ভাষণ দেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তাঁর ভাষণে উল্লেখিত প্রাচীন চীনা কবিতার মাধ্যমে 'সমৃদ্ধ, সমান ও সহনশীল' সভ্যতার ধারণা প্রতিফলিত হয়। এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট সি বলেন,

'বিভিন্ন সভ্যতার প্রেক্ষাপটে আমাদের মনোভাবও বৈচিত্র্যময় হওয়া উচিত। সভ্যতা পানি প্রবাহের মতো; আমাদের উচিত সভ্যতাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও সুসংহত করার চেষ্টা করা। বিভিন্ন দেশের জনগণের মৈত্রীর সেতু হিসেবে কাজ করে সভ্যতা। সভ্যতা হবে মানবসমাজের অগ্রগতি অর্জনের চালিকাশক্তি ও বিশ্বের শান্তি রক্ষার বন্ধন'।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সভ্যতার বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষা সম্পর্কে আবারও প্রাচীন চীনা কবিতা থেকে ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট সি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'বিভিন্ন ইতিহাস ও দেশের অবস্থা এবং বিভিন্ন জাতি ও রীতিনীতির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে উঠেছে। বিশ্ব আরও বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে। সভ্যতার জন্য গুণগত মানের ব্যবধান নেই, শুধু বৈশিষ্ট্য ও অঞ্চলের পার্থক্য রয়েছে। সভ্যতার ব্যবধান বিশ্বে সংঘর্ষ তৈরি করে না। এটি হবে মানবসভ্যতার অগ্রগতি অর্জনের চালিকাশক্তি'।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা সভ্যতার ধারণা সম্পর্কে বহুবার ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি। এর মাধ্যমে চীনের কণ্ঠ অর্থাত্ সভ্যতার পারস্পরিক শিক্ষা সম্পর্কে চীনের ধারণা আন্তর্জাতিক সমাজের ব্যাপক প্রশংসা পায়। পাঁচ বছর আগে, প্রেসিডেন্ট সি'র সাক্ষাত্কার নিয়েছিলেন ইউনেস্কোর তত্কালীন মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'৫ বছর আগে আমি খুবই গর্ব করে চীনের প্রেসিডেন্ট সি'র সাক্ষাত্কার নিয়েছিলাম। বিভিন্ন সভ্যতার পারস্পরিক শিক্ষা সম্পর্কে তিনি চীনের মতামত তুলে ধরেছিলেন। পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট সি'র বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিশ্বের প্রতি চীনের সমর্থনের কথাও প্রকাশ পায়'।

২০১৪ সালের মে মাসে শাংহাইয়ের 'এশিয়ার পারস্পরিক সমন্বয় ও আস্থাবিষয়ক শীর্ষসম্মেলন' এবং ২০১৫ সালের মার্চ মাসে 'বোআও এশীয় ফোরামের' বার্ষিক সম্মেলনে দুইবার এশিয়ার সভ্যতা সংলাপ আয়োজনের প্রস্তাব দেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অভিন্ন স্বার্থের কমিউনিটি গড়ে তোলায় বিভিন্ন সভ্যতা থেকে পারস্পরিক শিক্ষা কাজে লাগাতে হবে। এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট সি বলেন,

'চীনের প্রস্তাবিত এশিয়া সভ্যতার এই সংলাপ যুবক, বেসরকারি কমিউনিটি, অঞ্চল ও গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলের বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদারে সহায়ক। এতে এশীয় জনগণের জীবন আরও সমৃদ্ধ হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সহযোগিতা আরও মজবুত হবে'।

উল্লেখ্য, আগামী বুধবার 'এশীয় সভ্যতার সংলাপ' বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট দুই সহস্রাধিক প্রতিনিধি এ সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/তুহিনা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040