লন্ডন কুয়াংহুয়া বুকস্টোর: অর্ধ শতাব্দী ধরে চীনের সংস্কৃতি প্রচার করছে
  2019-05-13 13:38:09  cri

দুই রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ অনুভূতি হলো 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণের সামাজিক ভিত্তি। আর জনগণের পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ অনুভূতির সংযুক্ত করার সেতু হলো সাংস্কৃতিক বিনিময়। লন্ডন কুয়াং হুয়া বুকস্টোর এ ধরনের একটি 'সেতু'। ব্রিটেনের লন্ডন কুয়াং হুয়া বুকস্টোর গত শতাব্দীর ৭০ দশকে প্রতিষ্ঠিত হয়। বেশ কয়েক দশক ধরে লন্ডনের কুয়াং হুয়া বুকস্টোর চীনা সংস্কৃতির প্রচারে কাজ করছে।

লন্ডনের কুয়াং হুয়া বুকস্টোর লন্ডনের চায়নাটাউনে অবস্থিত। বইয়ের দোকানের দরজায় ইংরেজি ও চীনা শব্দ দেখা যায়। দোকানটি সাজানো হয়েছে চীনা স্টাইলে। দোকানের একজন তরুণ দায়িত্বশীল ব্যক্তি সিয়ে সংবাদদাতাকে বলেন, বই দোকানটি ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন ব্রিটেনের একমাত্র চীনা ভাষার বই বিক্রির বুকস্টোর এটি। গত কয়েক দশকে চীন ও ব্রিটেনের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য চমত্কার অবদান রেখেছে লন্ডনের কুয়াংহুয়া। ২০০৬ সালে, বুকস্টোরের প্রতিষ্ঠাতা জনাব তেং চিয়া সিয়াং কুয়াংহুয়া বুকস্টোরকে এক পাউন্ডের বিনিময়ে চীন ইন্টারন্যাশনাল বুক ট্রেড গ্রুপ কর্পোরেশনে হস্তান্তর করেন।

জনাব সিয়ে বলেন, দোকানে প্রথমে চীনা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিবিষয়ক বই বিক্রি হতো। যেমন, ঐতিহ্যবাহী চীনা মেডিসিন আকুপাংচার, ক্যালিগ্রাফি পেন্টিং এবং চীনা ভাষা শিক্ষা। বর্তমানে চীনা সাহিত্য, বিশেষ করে আধুনিক ও সমসাময়িক সাহিত্যিক কর্মবিষয়ক বইগুলো যোগ করা হয়েছে। তা ছাড়া, শিশুদের বই এবং পর্যটনবিষয়ক বইও রয়েছে।

যেসব ব্রিটিশ মানুষের চীন ভ্রমণের পরিকল্পনা আছে, চীনের কোম্পানিতে কাজ করার চিন্তা আছে বা চীনাদের সঙ্গে বিনিময় করতে চান, তারা লন্ডন কুয়াংহুয়া বুকস্টোরে যান। তা ছাড়া, চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে ব্রিটিশ জনগণকে জানাতে বইয়ের দোকানে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

চীন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিনিময়ের পাশাপাশি ব্রিটেনের লোকেরা চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও বেশি মনোযোগী হয়ে উঠছেন। মূলত, প্রতি মাসে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যা চীনের সংস্কৃতিকে ফোকাস করার জন্য ব্রিটেন বা চীন থেকে লেখকদের আমন্ত্রণ জানায়। এই ধরনের অনুষ্ঠান খুবই জনপ্রিয়।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক চীনা-সংস্কৃতি-ভক্ত লন্ডন কুয়াংহুয়া বুকস্টোর সম্পর্কে জানতে পারেন। বুকস্টোরটি বর্তমানে নিজস্ব বইও প্রকাশ করে। চলতি বছর চীনা সংস্কৃতিবিষয়ক চারটি বই প্রকাশিত হয়েছে। চীনা ও ইংরেজি দ্বিভাষিক, প্রভাব খুব ভালো। শুধু শিশুরাই নয়, প্রাপ্তবয়স্করাও চীনা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি, রীতিনীতি, অভ্যাস ইত্যাদি জানতে পারেন।

ইতিহাসে লন্ডন কুয়াংহুয়া বুকস্টোরটি ব্রিটিশ চীনাতত্ত্ববিদদের একটি সম্পদ সংগ্রহশালা। ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে ব্রিটিশ গ্রন্থাগারের ৯০ শতাংশ চীনা বই লন্ডন কুয়াংহুয়া বুকস্টোরের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ব্রিটিশ সংস্কৃতি শেখানোর জন্য এবং ব্রিটিশ লাইব্রেরির চীনা বিভাগের শিক্ষকরা সবসময় লন্ডন কুয়াংহুয়া বুকস্টোরের নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন।

বইয়ের দোকানের ভবিষ্যত উন্নয়ন সম্পর্কে সিয়ে বলেন, প্রায় ১০০ বর্গমিটার বইয়ের দোকানটি এখন আর যথেষ্ট নয়। আশা করা হচ্ছে যে ব্যবসার এলাকা প্রসারিত করা হবে। ঐতিহ্যবাহী বইগুলির পাশাপাশি, এটি আরও ভালোভাবে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং প্রদর্শনী বহন করতে পারে যা চীনা সংস্কৃতির বিস্তারকে আরও প্রসারে সহায়তা করবে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040