লিউ হ্য বলেন, এবারও চীন আন্তরিকতা নিয়ে ওয়াশিংটনে আলোচনার টেবিলে বসেছিলো। আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তরিক ও গঠনমূলক মত বিনিময় হয়েছে। সংলাপ অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও একমত হয়েছে দু'পক্ষ। আলোচনায় চীনা রফতানিপণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের মার্কিন সিদ্ধান্তের দৃঢ় বিরোধিতা করেছে চীন। কারণ, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত চীন, যুক্তরাষ্ট্র, তথা গোটা বিশ্বের জন্য কল্যাণকর নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চীন বাধ্য হবে।
সাক্ষাত্কারে লিউ বলেন, দু'পক্ষের মধ্যে যে-কোনো সম্ভাব্য চুক্তি সমান ও পারস্পরিক কল্যাণকর হতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত ইস্যুতে চীন রফা করবে না। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্যে পৌঁছেছে। তা ছাড়া, চীনের তিনটি কেন্দ্রীয় উদ্বেগকে আমলে নিতে হবে। প্রথমত, চীনের রফতানিপণ্যের ওপর আরোপিত সকল অতিরিক্ত শুল্ক বাতিল করতে হবে। অতিরিক্ত শুল্ক হলো দু'পক্ষের বাণিজ্যিক বিতর্কের সূচনা। চুক্তিতে পৌঁছাতে হলে আরোপিত সকল অতিরিক্ত শুল্ক অবশ্যই তুলে নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, দু'দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। আর্জেন্টিনায় এ ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছায় দু'পক্ষ। তাই এতে পরিবর্তন আনা উচিত নয়। তৃতীয়ত, সম্ভাব্য চুক্তিতে ভারসাম্য থাকতে হবে। যে-কোনো দেশের নিজস্ব মর্যাদা ও সম্মান আছে। চুক্তিতে একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে, অন্যদিকে তেমনি চীনের প্রস্তাবও থাকতে হবে। তা ছাড়া, চুক্তির ভাষাও চীনা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। চুক্তির ভাষা যেন কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব ও সম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত না-করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে যদি চুক্তি হয়, তবেই তা সত্যিকারভাবে কার্যকর করা যাবে। বর্তমানে চুক্তির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে আরও আলোচনাও হওয়া দরকার। গত বছরের পর থেকে দু'দেশের সংলাপে বেশ কয়েকবার মতবিরোধ দেখা দিয়েছে, যা স্বাভাবিক। দু'পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনার প্রক্রিয়ায় কখনও কখনও পারস্পরিক সমালোচনা হবেই।
লিউ হ্য বলেন, চীনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নিজের কাজ ভালোভাবে করা। চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা বিশাল। সরবরাহ-ব্যবস্থার কামাঠামোগত সংস্কারের পথে এগিয়ে যাওয়ার ফলে, পণ্যের মান বাড়বে ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষমতার সার্বিক উন্নতি ঘটবে। তা ছাড়া, আর্থিক নীতি ও মুদ্রানীতি আরও বিকাশের সুযোগ আছে। চীনের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল। বড় দেশের উন্নয়ন-প্রক্রিয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দেওয়া আসলেই ভালো ব্যাপার। তখন সমস্যা মোকাবিলায় নিজেদের সামর্থ্যের পরীক্ষা হয়ে যায়। কমরেড সি চিন পিংকে কেন্দ্র করে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় পলিট ব্যুরোর দৃঢ় নেতৃত্বে আস্থা বাড়ালে এবং সম্মিলিতভাবে পরিশ্রম করে গেলে, চীন যে-কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে পারবে এবং অর্থনীতির অব্যাহত ও স্থিতিশীল উন্নয়নের সুষ্ঠু গতিও ধরে রাখতে পারবে। (লিলি/আলিম)