প্রসঙ্গ: 'এক অঞ্চল, এক পথ' শীর্ষ ফোরামের প্রাক্কালে বিদেশি অতিথিদের সঙ্গে সি চিন পিং
  2019-04-25 14:52:23  cri

দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরাম বেইজিংয়ে শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল (বুধবার) চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ফোরামে অংশগ্রহণ করতে আসা বিভিন্ন দেশের অতিথিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, বর্তমানে আরও বেশি দেশ 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে সামিল হতে চাচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয় যে, 'এক অঞ্চল, এক পথ' বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং ব্যাপক জনপ্রিয়।

প্রাচীন সামুদ্রিক রেশমপথে মোজাম্বিক একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় এ দেশ। দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে চীনা প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, চীন ও মোজাম্বিকের উচিত পারস্পরিক সহযোগিতার গুণগত মান ও দক্ষতা উন্নয়নে সচেষ্ট হওয়া। তিনি বলেন,

"এবার ফোরামে বিভিন্ন দেশের নেতারা যৌথ আলোচনা, যৌথ নির্মাণ ও যৌথ শেয়ারিংয়ের নীতির ভিত্তিতে অবকাঠামো, টেকসই উন্নয়নসহ অভিন্ন স্বার্থের বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করবেন, যাতে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতায় আরও বেশী অবদান রাখা যায়।"

এসময় মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট বলেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ' বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের জন্য কল্যাণকর। আফ্রিকার উপ-আঞ্চলিক উন্নয়নের জন্য 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে যেতে ইচ্ছুক তার দেশ।

ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, ইথিওপিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক চীন। ইথিওপিয়ার উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে যেতেও ইচ্ছুক তার দেশ।

জবাবে ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতার যে 'চীননীতি' পেশ করেছেন, আফ্রিকার দেশগুলো তার উচ্চ মূল্যায়ন করে। আফ্রিকার দেশগুলো আরও দৃঢ়ভাবে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।

এদিন সি চিন পিং এশিয়ার দুটি প্রতিবেশীদেশের অতিথিদের সঙ্গেও দেখা করেন। এর মধ্যে জাপানের বিশেষ দূত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের একটি চিঠি প্রেসিডেন্ট সি'র হাতে তুলে দেন। প্রেসিডেন্ট সি জাপানি প্রধানমন্ত্রীর চিঠি গ্রহণ করে বলেন,

"বর্তমানে চীন-জাপান সম্পর্ক স্বাভাবিক পথে পুনরায় ফিরে এসেছে। দু'দেশের উচিত চীন-জাপান চারটি রাজনৈতিক দলিলে নির্ধারিত বিভিন্ন নীতি মেনে নেওয়া, অব্যাহতভাবে পারস্পরিক সহযোগিতা গভীরতর করা, এবং দু'দেশের সম্পর্ক সুস্থ ও স্থিতিশীলভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।"

তা ছাড়া 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে জাপান অংশগ্রহণ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট সি। তিনি বলেন, দু'দেশের উচিত পারস্পরিক বিনিময় ও সমন্বয় জোরদার করা, বহুপক্ষবাদ ও অবাধ্য বাণিজ্যব্যবস্থা রক্ষা করা, এবং এক উন্মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতি নির্মাণে কাজ করে যাওয়া।

মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দ্বিতীয় 'এক অঞ্চল, এক পথ' আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামে অংশ নিচ্ছেন। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়নবিষয়ক নেতৃত্ব কমিটি গঠন করেছে মিয়ানমার সরকার। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মিয়ানমারের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাতে বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করে 'চীন-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর' নির্মাণকাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক চীন। তিনি আরও বলেন, শুরু থেকেই 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগকে সমর্থন দিয়ে এসেছে এবং এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে মিয়ানমার। এতে দু'দেশের সহযোগিতা ও মৈত্রীর সম্পর্ক গভীরতর হয়েছে।

এদিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধানের সঙ্গেও প্রেসিডেন্ট সি'র সাক্ষাৎ হয়। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তিনি বলেন, বহুপক্ষবাদ রক্ষায় চীনের নেতৃত্বের ভূমিকার উচ্চ মূল্যায়ন করে থাকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। বিশ্বের চীনকে প্রয়োজন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে চীনের টেকসই উন্নয়ন থেকে পৃথক করা যাবে না।

এদিন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন প্রেসিডেন্ট সি। সাক্ষাতে তিনি বলেন, আজারবাইজানের সঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের আওতায় অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা গভীরতর করতে এবং সংস্কৃতি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমঝোতা ও মৈত্রী বাড়াতে ইচ্ছুক চীন। (জিনিয়া/আলিম/লিলি)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040