তিন বছর আলোচনা ও প্রস্তুতির পর "চীনা শিল্পের ঐতিহাসিক বিকাশ" শীর্ষক প্রদর্শনী গত ৫ সেপ্টেম্বর ক্যানবেরাতে উদ্বোধন করা হয়। আপনি যখন প্রদর্শনী হলে প্রবেশ করবেন তখন প্রথম চোখে পড়বে 'সম্রাট ছিয়েনলংয়ের দক্ষিণ যাত্রা'র প্রথম ভলিউমের একটি চিত্র। ২০-মিটারেরও বেশি লম্বা চিত্রে সম্রাট ছিয়েনলং ও তার অনুসারীরা বেইজিংয়ের জাঁকজমক রাস্তাগুলি পার হয়ে দক্ষিণ যাত্রা শুরু করে। এটি প্রদর্শনীর উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মধ্যে একটি। বড় পর্দায় ১৫ মিটার দীর্ঘ "সম্রাট ছিয়েনলংয়ের দক্ষিণ যাত্রা" এর গতিশীল সংস্করণ প্রদর্শন করা হয়।
জুলি স্পেন্সর একজন তেল চিত্রশিল্পী। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে এ প্রদর্শনী দেখতে এসেছেন। তিনি চীনের কালি পেইন্টিংস দেখে অবাক হয়ে যান। তিনি বলেন, "আমি এটি বিশেষভাবে পছন্দ করেছি! এর কাজগুলো অনেক সুন্দর। আমিও একজন শিল্পী। (এই কাজগুলি) খুব স্বাভাবিক, প্রাণবন্ত এবং বেশ ভালো!"
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়ামের পরিচালক ম্যাথিউ টিচার বলেন, প্রদর্শনী হলটি প্রাচীন চীনা শিল্প এবং আধুনিক চীনা শিল্পের মধ্যে যোগাযোগ অনুভব করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আধুনিক শিল্পীদের কাজ এবং প্রাচীন চীনা কালি পেইন্টিংগুলির গতিশীল সংস্করণ একসাথে প্রদর্শিত হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, (চীনা ঐতিহ্যবাহী শিল্প) ইতিহাসে নয় বরং আধুনিক সমাজেও সক্রিয়।
অস্ট্রেলিয়ার দর্শকদের আরও ভালভাবে চীনা ক্যালিগ্রাফি বোঝানোর জন্য, প্রতিটি চীনা কর্মের সঙ্গে ইংরেজিতে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি সরবরাহ করেছে চীনের জাতীয় যাদুঘর। ইন্টারেক্টিভ সরঞ্জাম দিয়ে প্রদর্শনী হল সাজানো হয়। দর্শক টাচ স্ক্রিনে একটি ব্রাশ দিয়ে চীনা অক্ষরগুলো লিখতে পারেন।
অনেক অস্ট্রেলিয়ান চীনা ভাষা না বুঝলেও সংস্কৃতি ও শিল্প মানবজাতির সুন্দর সাধনাকে প্রকাশ করে এবং তারা যে কোনো দেশের হোক না কেন তারা কিছুটা বুঝতে পারে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ায় চীনের রাষ্ট্রদূত ছেং চিং ইয়ে উপস্থিত ছিলেন এবং ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক বিনিময় চীন-অস্ট্রেলিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি বলেন, "সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, পারফর্মিং আর্টস, ভিজ্যুয়াল আর্টস, সাহিত্য প্রকাশনা, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনসহ উভয় দেশের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।"
এবারের প্রদর্শনী হলো চীন ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় যাদুঘরের বিনিময় প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২৮ জুলাই এটি শেষ হবে। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় যাদুঘর বেইজিং ও শাংহাই শহরে অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসী বার্ক আর্ট প্রদর্শনী আয়োজন করবে; আর তৃতীয় প্রদর্শনী চীনের শেনচেন শহরে অনুষ্ঠিত হবে।