সুরের ধারায়: তিং ওয়েই এবং তার গান
  2019-04-12 09:16:53  cri


প্রিয় শ্রোতা, আশা করি ভাল আছেন। বেইজিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান 'সুরের ধারায়' আপনাদের সবাইকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আমি ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা।

সংগীত কোনো দেশের সীমানা মানে না। আপনি কি এখন গাড়ি চালাচ্ছেন, নাকি বাসার কোনো কাজ করছেন? আপনি এখন একা, নাকি সাথে সঙ্গী আছে? আপনার মন আজকে বেইজিংয়ের শরত্কালের নীল আকাশের মতো স্বচ্ছ, নাকি ঢাকার কালবৈশাখী সময়ের মতো মেঘলা? যে যেখানে যেভাবেই থাকুন না কেন, আসুন সংগীত উপভোগ করি। সংগীতের জগতে ডুব দেওয়ার আনন্দই আলাদা।

সুপ্রিয় বন্ধু, আজকের সুরের ধারায় অনুষ্ঠানে আপনাকে গায়িকা তিং ওয়েই-এর কয়েকটি গান শোনাবো।

(গান ১, নিরীহ যুগ)

তিং ওয়েই চীনের চিয়াংসু প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন সুরকার, রচয়িতা ও গায়িকা। তিনি সংগীত রচনার বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত। প্রথম দিকে শুধু বিখ্যাত গায়ক-গায়িকার জন্য তিনি গান রচনা করতেন। ১৯৯৫ সালে তার নিজের প্রথম এ্যালবাম 'পাখা-ভাঙা প্রজাপতি' প্রকাশিত হয়। ২০০৪ সালে তার তৃতীয় এ্যালবাম 'প্রিয় তিং ওয়েই' দিয়ে তিনি বার্ষিক শ্রেষ্ঠ গায়িকার সুনাম অর্জন করেন। তিনি চীনের অনেক টিভি সিরিজের জন্যও গান রচনা করেছেন। তিং ওয়েই-এর গানে ফোক, ইলেকট্রনিক ও জ্যাজ... বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। 'নিরীহ যুগ' গানে বিভিন্ন দুঃখ কষ্ট নিয়ে তিং ওয়েই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, কষ্ট হলেও আগ্রহ ও উদ্যম নিয়ে জীবনের সব অনিচ্ছুক ব্যাপারে দেখা উচিত। গানে বলা হয়, 'ভাবছিলাম, আমাদের ভবিষ্যত খারাপ হবে না। কিন্তু আসলে নিজের প্রেমে ধুলো জমেছে। আমি জানি কাউকে দোষ দেওয়া উচিত না। সবাই অসহায়। এটা একটা 'পাগলের যুগ', সব কিছু অতি দ্রুত শেষ হয়ে যায়। আমি সেই যুগে ফিরে যেতে চাই। সেখানে কোনো কষ্ট ও বেদনা নেই। সেখানে সত্য ও নিরীহ ভালোবাসা নিয়ে তোমার জন্যে অপেক্ষা করতে পারি।'

(গান ২, ভ্রমণকারীর গান)

'ভ্রমণকারীর গান'-এ বলা হয়, 'কেন মেঘলা আকাশের জন্য মন খারাপ হয়? কেউ আমার মন খারাপ করতে চাইলে, আমি তা মানতে পারি না। আমাকে একদিন সময় দাও, সব কিছু মনে পড়বে অথবা সব কিছু ভুলে যাব। জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকব দিন-রাত!'

(গান ৩, মেয়ে ও চারটি বাদ্যযন্ত্র)

'মেয়ে ও চারটি বাদ্যযন্ত্র' হচ্ছে তিং ওয়েইয়ের ২০০০ সালে লেখা একটি গান। এ গানের মাধ্যমে তিং ওয়েইয়ের অনন্য বৈশিষ্ট্য বোঝা যায়। গানে বলা হয়, 'দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আমার পা অসাড় হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে আমার চোখ ফুলে গেছে। কেন আমাদের সম্পর্ক এমন হলো? রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশ থেকে হঠাত্ কেন বৃষ্টি পড়ছে? রাস্তার কোণায় দাঁড়িয়ে নিজেকে বোকা মনে হয়। আমি কেন বাচ্চার মত কান্নাকাটি করছি? আমার অহংকার নিয়ে হাসিমুখে থাকা উচিত। তুমি চলে গেলে- যাও; তবে অন্য কারও উপহাসের পাত্র হব না।'

(গান ৪, প্রিয়তম)

'প্রিয়তম' গানে বলা হয়, 'বৃষ্টির পর, দু'জন অনেকক্ষণ নীরব ছিলাম। তুমি যে বিষয় নিয়ে চিন্তা করছো, আমিও তাই ভাবছি। ভালোবাসা চিরকাল থাকবে? কেউ নিশ্চিত না! চিরকালের সখা, সবাই প্রত্যাশা করে কিন্তু, তাতে আছে ভয়। প্রিয়তম, আমি তোমার স্বপ্ন দেখতে পারি না; আর তুমি আমার গান বুঝতে পারো না।'

(গান ৫, বিদায়, তোমাকে ভালবাসি)

'বিদায়, তোমাকে ভালবাসি' গানে বলা হয়, 'প্রেমের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ! কারণ সে ভুল সম্পর্ক তৈরি করে। চিরকাল তো দূরের কথা; এতদিন কেউ বাঁচতে পারে? মন নিজের, ভালোবাসা নিজের, কেউই কারও জন্য নিজেকে ছেড়ে যাবে না। মন স্বাধীন, ভালোবাসা স্বাধীন, কেউই ভালোবাসার জন্য স্বাধীনতা ছাড়বে না। বিদায়, তোমাকে ভালোবাসি। অন্য মানুষ তোমাকে বলবে- বিদায়, তোমাকে ভালোবাসি। ভবিষ্যতে কার সঙ্গে থাকবো, তোমার জানা দরকার নেই।'

(গান ৬, যৌবনের সঙ্গী)

প্রিয় শ্রোতা, গান শুনতে শুনতে অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এলাম। তবে বিদায় নেওয়ার আগে তিং ওয়েইয়ের আরেকটি গান শোনাবো। 'যৌবনের সঙ্গী' গানে বলা হয়, 'সবুজ ঘাসের বনে, যুবকদের উজ্জ্বল চোখ দেখা যায়। যৌবনকালে কোনো দুঃখ নেই, হাসিখুশি সময় আমাদের স্বপ্নের মধ্যে ঢুকে যায়। যৌবনের সঙ্গীরা- রোদ-বৃষ্টিতে একসঙ্গে হাঁটি। আমরা স্বপ্নের মধ্যে প্রতিশ্রুত দিয়েছি, একই ভোরবেলায় জেগে উঠবো।'

(স্বর্ণা/তৌহিদ/মুক্তা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040