0330jingji
|
১. চীনের প্রস্তাবিত 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে যোগ দিল ইতালি। স্থানীয় সময় গত শনিবার (২৩ মার্চ) রোম শহরের উপকণ্ঠের ভিলা মাদামাতে এ-সংক্রান্ত এক স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন চীন ও ইতালির সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা। এসময় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুজেপে কন্তে উপস্থিত ছিলেন। জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইতালিই প্রথম এই উদ্যোগে যোগ দিল।
চীন ও ইতালির পক্ষ থেকে প্রকাশিত যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তঃসংযোগ ও আন্তঃযোগাযোগের ক্ষেত্রে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে দু'পক্ষ বিশ্বাস করে।
২০১৩ সালে 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রস্তাব প্রথমবারের মতো উত্থাপন করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এর পর থেকে এ পর্যন্ত চীনের সঙ্গে দেড় শতাধিক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের আওতায় সহযোগিতাচুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
প্রেসিডেন্ট সি'র ইতালি সফরের প্রাক্কালে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে রোমের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বেশি আলাপ-আলোচনা হয়। সফরকালে চীনা প্রেসিডেন্ট সি'র সঙ্গে বৈঠককালে ইতালির শীর্ষনেতৃবৃন্দও 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রস্তাব সমর্থনের কথা বলেন। তাঁরা জানান, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে অংশগ্রহণ ইতালির জন্য একটি ভাল সুযোগ।
উল্লেখ্য, চীন হচ্ছে এশিয়ায় ইতালির বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। আর ইতালি হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-তে চীনের পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০১৮ সালে দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৫০০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি।
২. গত মঙ্গলবার সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া ও চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের মধ্যে একটি 'মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি' ও একটি 'বিনিয়োগ চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয়।
হংকংয়ের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সচিব এডওয়ার্ড ইয়াও চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, হংকং ও অস্ট্রেলিয়া মুক্তি বাণিজ্যের পক্ষের শক্তি। নতুন চুক্তির ফলে দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে; বাড়বে পারস্পরিক বিনিয়োগ।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিবেশে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে নয়া দুই চুক্তি দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা নিয়ে আসবে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নতুন চুক্তি থেকে তাঁর দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে লাভবান হবেন।
৩. ২০১৮ সালে নামিবিয়া একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি পণ্য রফতানি করেছে চীনে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, গেল বছর দেশটি তার রফতানিপণ্যের ১৮ শতাংশ রফতানি করেছে চীনে।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, চীনে কপার ও আকরিকের মতো পণ্যের রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে বেশি। তিনি আরও জানান, চীনের পরে নামিবিয়া সবচেয়ে বেশি পণ্য রফতানি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় নামিবিয়া মোট রফতানিপণ্যের ১৬ শতাংশ রফতানি করেছে। এর পরেই আছে যথাক্রমে বেলজিয়াম, বতসোয়ানা ও যুক্তরাজ্যের স্থান।
কর্মকর্তা জানান, নামিবিয়া মূল্যবান পাথর ও ধাতু, আকরিক, মাছ ইত্যাদি রফতানি করে থাকে।
এদিকে, নামিবিয়া সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। এর পরেই আছে বাহামাস, জাম্বিয়া, চীন ও বতসোয়ানার স্থান।
৪. কেনিয়াভিত্তিক আঞ্চলিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান 'ইকুইটি ব্যাংক' আফ্রিকায় চীনের উইচ্যাট পে ও আলি পে'র কর্মতত্পরতার আওতা বাড়াতে সচেষ্ট হবে। ইকুইটি ব্যাংকের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ফিনসার্ভ-আফ্রিকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জ্যাক নারে সম্প্রতি নাইরোবিতে সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এ কথা বলেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যেই তারা কেনিয়া, উগান্ডা, তাঞ্জানিয়া ও রুয়ান্ডায় চীনা আর্থিক-প্রযুক্তি সেবা সহজলভ্য করেছেন। চলতি বছরের শেষ নাগাদ কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রেও ইউাচ্যাট পে ও আলি পে'র সেবা পাওয়া যাবে।
৫. গত ফেব্রুয়ারিতে সিঙ্গাপুরের কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ০.৫ শতাংশ। জানুয়ারিতে এই বৃদ্ধির হার ছিল ০.৪ শতাংশ। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং সিঙ্গাপুর মুদ্রা কর্তৃপক্ষ এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
৬. চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরশেন (সিএমসি) থেকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) জন্য আরও ছয়টি জাহাজ আনা হবে। এর আগে সিএমসি থেকে বিএসসির জন্য ছয়টি জাহাজ সংগ্রহ করা হয়।
সম্প্রতি চীনের বেইজিংয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে সিএমসির ভাইস প্রেসিডেন্ট খ্যাং হুপাইও'র বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য-কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ-বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চীন সফররত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বেইজিংয়ে সিএমসি অফিস পরিদর্শন করেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানান সিএমসির ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেখানে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ঢাকার চারপাশের বৃত্তাকার নৌপথ, বৃত্তাকার সড়ক, এবং মেরিন একাডেমিতে বিশ্বমানের নাবিক গড়ে তুলতে চীনের সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া, চীন থেকে বিএসসির জন্য আরও ৬টি জাহাজ সংগ্রহের বিষয়েও আলোচনা হয়।
অতীতে বিএসসিকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে ১,৫৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চীন থেকে ছয়টি জাহাজ সংগ্রহের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে চীন আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এক হাজার কোটি টাকা, বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকারের। এ পর্যন্ত পাঁচটি জাহাজ বিএসসি'র বহরে যুক্ত হয়েছে। জাহাজ 'এমভি বাংলার অগ্রগতি'-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রতিমন্ত্রী ২১ মার্চ রাতে চীন যান। বিএসসির বহরে ছয়টি জাহাজ যুক্ত করার জন্য আড়াই কোটি মার্কিন ডলার একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে সংগৃহীত জাহাজগুলো হলো, এমভি বাংলার জয়যাত্রা, এমভি বাংলার সমৃদ্ধি, এমভি বাংলার অর্জন, এমভি বাংলার অগ্রযাত্রা এবং এমভি বাংলার অগ্রদূত।
৭. বাংলাদেশে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানির মাধ্যমে গত অর্থবছরে ৪৩১০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সম্প্রতি এ তথ্য জানানো হয়। সভায় বলা হয়, জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৫৭ শতাংশ।
সভায় জানানো হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয় এবং সাদু পানির মাছ উৎপাদনে দেশ ৫ম স্থানে রয়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশে মৎস্য উৎপাদন ছিল ৪২ লাখ ৭৭ হাজার মেট্টিক টন, যার মধ্যে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্টিক টন।
সভায় আরও জানানো হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুধ উৎপাদন ছিল ৯৪ লাখ ৬ হাজার মেট্টিক টন এবং ডিম উৎপাদন ছিল ১৫৫২ কোটি।
৮. বাংলাদেশে আশ্রয়-নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্ব ব্যাংক ও কানাডা সরকার ৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে। সম্প্রতি ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সংক্রান্ত এক সমঝোতাস্মারক স্বাক্ষরিত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ইউএনএফপিও, আইএমও এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত সমঝোতাস্মারকে স্বাক্ষর করে।
সমঝোতাস্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানানা, রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি সমঝোতাচুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৪১.৬৭ মিলিয়ন ডলার। আর কানাডা সরকার দিচ্ছে ৮.৩৩ মিলিয়ন ডলার।
মন্ত্রী আরও জানান, বিশ্ব ব্যাংক ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে। ব্যাংকটি আরও ৩০০ মিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা জানিয়েছেন। শিগগিরি এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাষানচরে স্থানান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।