190326music
|
প্রতি সপ্তাহের এই সময় আমার কাছে খুব আনন্দের এবং সৌভাগ্যের। কারণ, এই সময় আপনাদের সঙ্গে সঙ্গীতের মাধ্যমে মনের কিছু কথা বলতে পারি। যদিও বেইজিং ও বাংলাদেশের মধ্যে ভৌগোলিক দূরত্ব অনেক বেশি, তবে সঙ্গীতের কোনো সীমানা নেই। আপনাদের সঙ্গে সুন্দর গান শুনতে শুনতে অনুভব করি যেন আমি আপনাদের সঙ্গেই আছি; এটি আমার জন্য খুব সুন্দর মুহূর্ত!
আচ্ছা, আপনারা কি প্রস্তুত? চলুন তাহলে, আমার সঙ্গে প্রবেশ করুন সঙ্গীতের পৃথিবীতে।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদেরকে চীনের খুব জনপ্রিয় গায়ক থাও চ্য-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো এবং তার কণ্ঠে কয়েকটি সুন্দর গান শোনাবো।
থাও চ্য, তার ইংরেজি নাম ডেভিড জি তাও। ১৯৬৯ সালের ১১ জুলাই চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হলেন চীনের তাইওয়ান প্রদেশের বিখ্যাত গায়ক এবং সুরকার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লস অ্যাঞ্জেলেস শাখা থেকে স্নাতক হন।
যদিও থাও চ্য চীনের হংকংয়ে জন্মগ্রহণ করেন, তবে তার ছোটবেলা কেটেছে চীনের তাইওয়ান প্রদেশে। ১৯৮৪ সালে থাও চ্য তাইওয়ান ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। যখন তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লস অ্যাঞ্জেলেস শাখায় পড়তেন, তখন তিনি প্রধানত মনস্তত্ত্ব শিখতেন। এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলচ্চিত্রও শিখেছেন।
১৯৮৬ সালে থাও চ্য ও তার সহপাঠী স্কুলে 'ইন্সট্যান্ট পিকচার্স' নামে একটি সঙ্গীত ব্যান্ড গঠন করেন। তখন থেকে সঙ্গীত ক্ষেত্রে তার আগ্রহ অনেক বেড়ে যায়। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থাও চ্য স্নাতক ডিগ্র লাভ করেন। তবে তিনি স্নাতক হবার পর সরাসরি সঙ্গীতের পথ বাছাই করেন নি, বরং লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ব্যুরোয় ১৮ মাস চাকরি করেন।
এরপর ১৯৮৮ সাল থেকে থাও চ্য অনেক চাকরি পরিবর্তন করেন, তিনি চিনি কারখানা, সঙ্গীত যন্ত্রের দোকান, জুতার দোকান এবং কাপড়ের দোকানে কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
থাও চ্য-এর বাবা থাও তা উই হলেন তাইওয়ানের বিখ্যাত একজন গায়ক, সুরকার এবং শিশু টিভি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। তার মা ওয়াং ফু রুং হলেন একজন বেইজিং অপেরার শিল্পী। তার নানাও একজন বেইজিং অপেরার শিল্পী এবং তিনি তাইওয়ানে একটি শিল্প স্কুলও স্থাপন করেন।
১৯৯৩ সালের বসন্তকালে থাও চ্য লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি সঙ্গীতের অ্যালবামের দোকানে তাইওয়ানের বিখ্যাত সুরকার ওয়াং জি পিং-এর সঙ্গে পরিচিত হন। ওয়াং-এর আমন্ত্রণে থাও চ্য তাওয়ানে ফিরে যান।
তাইওয়ানে ফিরে যাওয়ার পর থাও চ্য সঙ্গীত রচনায় যোগ দিতে শুরু করেন। একই বছর থাও চ্য তাইওয়ানের কন্ঠশিল্পী চৌ পাও ইউয়ানের জন্য অ্যালবাম 'এল্টন' তৈরি করেন। তিনি এই অ্যালবামের জন্য 'ভালোবাসা সহজ নয়'সহ বিভিন্ন প্রেমের গান রচনা করেন, এবং ঠিক এই বছর থাও চ্য সুরকার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে সঙ্গীত মহলে যোগ দেন।
১৯৯৪ সালে থাও চ্য তাইওয়ানের সবচেয়ে বিখ্যাত কন্ঠশিল্পী চাং সিন চ্য-এর জন্য ইংরেজি অ্যালবাম 'সাম হোয়ার ইন মাই ব্রোকেন হার্ট' প্রযোজনা করেন।
১৯৯৫ সালে থাও চ্য খুব জনপ্রিয় গায়িকা ছেন সু হুয়া-এর জন্য 'সুহুয়া ফুটেছে' নামে অ্যালবাম তৈরি করেন।
১৯৯৭ সালে তিনি সুরকার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গায়কে পরিণত হন। তিনি অন্যের জন্য আর গান রচনা না করে বরং নিজের জন্য প্রেমের গান রচনা শুরু করেন।
একজন গায়ক হিসেবে থাও চ্য তার প্রথম অ্যালবামের নাম রাখেন ঠিক তার নিজের ইংরেজি নাম 'ডেভিড থাও'। এই অ্যালবাম প্রকাশের পর পরই তা সঙ্গীত মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ।
২০০০ সালে থাও চ্য আরেকটি অ্যালবাম 'আই অ্যাম ওকে' প্রকাশ করেন। এই অ্যালবামের কারণে তিনি সেই বছর ১১তম তাইওয়ান সোনালী সঙ্গীত পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ অ্যালবামের পুরস্কার পান।
২০০৩ সালে থাও চ্য ২৫তম দশটি শ্রেষ্ঠ চীনা ভাষার সঙ্গীতের সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়কের রৌপ্য পদক লাভ করেন।
২০১৩ সালে থাও চ্য 'আবার তোমাকে দেখেছি, তুমি কি ভালো আছো?' নামে অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। ২০১৭ সালে থাও চ্য নতুন গান 'মার্স বেবি' প্রকাশ করেন।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে মূলত আপনাদেরকে চীনের জনপ্রিয় গায়ক থাও চ্য-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম এবং তার কণ্ঠে কয়েকটি সুন্দর গান শোনালাম। আশা করি গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে।
আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ হল, সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন, পরের আসরে আবার কথা হবে। (শুয়েই/টুটুল/সুবর্ণা)