'মনের সংযুক্তি ও সাংস্কৃতিক সমন্বয়' চেতনায় বাংলাদেশের বাজার উন্নয়নে সচেষ্ট চীনের প্রতিষ্ঠান: ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রতিনিধি মাদাম ইয়ান পাও লিং
  2019-03-22 15:32:49  cri

(প্রতি বছরে দু থেকে তিন বার করে নানা উপহার দেয় ফেই তা কোম্পানি)

(বাংলাদেশের নানা উত্সবে স্থানীয় পোষাক পরে স্থানীয়দের সঙ্গে উত্সব উদযাপন করেন ইয়ান পাও লিং)

তাদের দয়াশীল কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের মন জয় করেছে। স্থানীয় শিশুরা ইয়ান পাও লিংকে মা বলে ডাকেন। একটি উদাহরণ দিয়ে ইয়ান পাও লিং বলেন, 'বাংলাদেশে প্রতিদিন ২০-৩০ বার বিদ্যুত্ যায় বা লোডশেডিং হয়। যার কারণে আমাদের অনেক কম্পিউটার নষ্ট হয়েছিল এবং হ্যাটের গুণগতমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। স্থানীয় একটি বিদ্যুত্ কোম্পানির প্রধান আমাকে বিনামূল্যে বিদ্যুত প্রদানের কথা বলেন। সে সময় আমি বিশ্বাস করিনি। কারণ, এক কিলোমিটারের বিদ্যুত্ লাইন স্থাপন করতে চাইলে কয়েক মিলিয়ন আরএমবি প্রয়োজন হয়। আমাদের চাহিদা মেটাতে এবং ৭-৮ কিলোমিটার পর্যন্ত এ লাইন স্থাপন করতে হবে এবং এতে কমপক্ষে ৪ কোটি আরএমবি দরকার! বিশ্বাসযোগ্য নয়, তবে তিনি সত্যি সত্যি বিনামূল্যে আমাদের বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করে বিদ্যুত্ সংযোগ প্রদান করেছেন।

ফেই তা কোম্পানির প্রভাবে স্থানীয় গ্রামে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ৫ বছর আগে এ গ্রামে অধিবাসীর সংখ্যা ৪০০ জনেরও কম ছিল। বর্তমানে এ গ্রামের জনসংখ্যা ২০ হাজার! স্থানীয় সরকার ফেই তা কোম্পানির প্রশংসা করে এ অঞ্চলকে 'ফেই তা উপজেলা' হিসেবে নামকরণ করেছে। স্থানীয় মানুষ নতুন কাপড় কিনতে, নতুন ঘরবাড়ি উঠতে এবং বাড়িতে নানা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে। ইয়ান পাও লিংয়ের নিজস্ব অনুশীলনের মাধ্যমে চীনা প্রতিষ্ঠানকে বৈদেশিক বাজারে প্রবেশ করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অর্থাত্ "এক অঞ্চল, এক পথ'' উদ্যোগের যৌথ নির্মাণের মৌলিক চিন্তাভাবনা নিয়ে অনুশীলন করা এবং 'মন সংযুক্ত ও সাংস্কৃতিক মিশ্রণ' চেতনায় অবিচল থাকার পাশাপাশি বিদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী উন্নত ভিত্তি এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গণজীবিকা উন্নত করে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ লাভের চাবিকাঠি। তিনি বলেন,'আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশের বাজারে প্রবেশ করার লক্ষ্য শুধু নিজের প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়ন নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করা। এটি আমাদের বড় অবদান।

"এক অঞ্চল, এক পথ" উদ্যোগে যৌথ নির্মাণ নিয়ে কিছু কিছু ব্যক্তির সন্দেহ নিয়ে ইয়ান পাও লিং বলেন, 'তারা মনে করে যে, আমরা অন্য দেশে কমমূল্যে জনশক্তি ব্যবহার করছি বা চীনের অতিরিক্ত ধারণক্ষমতা স্থানান্তর করছি, আসলে তা নয়। আমরা আমাদের অগ্রসর প্রশাসনের ভাবনা এবং গত ৪০ বছরে চীনের ব্যবহারযোগ্য অভিজ্ঞতা অন্য দেশে প্রচার করছি। আমি দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে হাইটেক ও আধুনিক সরঞ্জাম বাংলাদেশে স্থানান্তর করেছি।

বর্তমানে ফেই তা হ্যাট কোম্পানির বাংলাদেশের কারখানা সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ইয়ান পাও লিংয়ের আগের মতো সেখানে যাওয়ার দরকার হয় না। তবে তিনি প্রতিমাসে দু'বার বাংলাদেশে যান তিনি। কারণ বাংলাদেশের স্থানীয় মানুষের কথা সব সময় তার মনে পড়ে। পাশাপাশি তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আছে। বাংলাদেশের প্রবাসী চীনা অ্যাসোসিয়েশনের স্থায়ী প্রেসিডেন্ট মাদাম ইয়ান পাও লিং বলেন, 'বাংলাদেশের প্রবাসী চীনা অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠার দুটি লক্ষ্য আছে। এক, আমরা বিনিয়োগকারী প্রবাসী চীনাদের একত্রিত করেছি। সবাই পরস্পরকে সমর্থন করে, যাতে বিদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কঠিন পরিবেশ কাটিয়ে ওঠা যায় এবং স্থানীয় সরকারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগে সাহায্য করা যায়। দুই, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনে পিংয়ের "এক অঞ্চল, এক পথ" প্রস্তাবের আওতায় নানা নির্মাণকাজে বিদেশে বসবাসকালীন ৬ কোটি প্রবাসী চীনাদের ভূমিকা পালন করতে উত্সাহ দেওয়া এবং বিদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানের রূপান্তরে সাহায্য করা। জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রতিনিধি ও জাতীয় প্রবাসী চীনা অ্যাসোসিয়েশনের স্থায়ী সদস্য হিসেবে এটি আমার দায়িত্ব। আমাদের উচিত প্রবাসী চীনাদের একত্রিত করা, যাতে তারা নতুন যুগে "এক অঞ্চল, এক পথ" উদ্যোগের যৌথ নির্মাণে নির্ণায়ক শক্তিতে পরিণত হয়।

(রুবি/তৌহিদ)


1  2  3  4  
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040