সংস্কার ও উন্মুক্ততা এবং নব্যতাপ্রবর্তন চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে শক্তিশালী চালিকাশক্তি প্রদান করবে
  2019-03-21 13:10:19  cri
মার্চ ২১: সম্প্রতি চীনের জাতীয় গণকংগ্রেস (এনপিসি)-র বার্ষিক অধিবেশনে পেশ করা চীনের সরকারি কর্ম-বিবরণীতে স্পষ্টভাবে চলতি বছর অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নের সামষ্টিক চাহিদা এবং নীতিমালার দিক নির্ধারণ করা হয়। গতকাল (বুধবার) বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদ এ কর্ম-বিবরণী বিশ্লেষণ করার সময় বলেন, চলতি বছর চীনা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার ৬-৬.৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অব্যাহতভাবে সংস্কার, উন্মুক্তকরণ ও নব্যতাপ্রবর্তন গভীরতর করা চীনের অর্থনীতির উন্নয়নে শক্তিশালী চালিকাশক্তি প্রদান করবে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন।

আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় এ নিয়ে শুনবেন একটি প্রতিবেদন।

চলতি বছর সরকারি কর্ম-বিবরণীতে নির্ধারিত অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নের প্রধান প্রত্যাশিত লক্ষ্য প্রসঙ্গে চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিনিময় কেন্দ্রের উপ-প্রধান হুয়াং ছি ফান বলেন, কর্মসংস্থান, আর্থ এবং বৈদেশিক বাণিজ্য ও পুঁজি স্থিতিশীল করে তোলার ব্যবস্থা কার্যকর করার সঙ্গে চীনের অর্থনীতি অবিচল ও স্থিতিশীলভাবে সামনে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন,

'বৈদেশিক মুদ্রা, স্টক ও মুদ্রা এ তিনটি মূলধন বাজার এবং পুঁজি বিনিয়োগ, ভোগ এবং রপ্তানি ও আমদানি এ তিনটি সূচক চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পায়। সরকারি কর্ম-বিবরণীতে অর্থনীতি স্থিতিশীল করে তোলার আরো অনেক ব্যবস্থা আছে। এসব ব্যবস্থা সংস্কার, উন্মুক্ততা, নব্যতাপ্রবর্তন ও বাজারায়নের পদ্ধতিতে চালানো হয়। সারা বছর চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার ৬.৪ শতাংশ হতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

চলতি বছর বাজারের প্রাণশক্তি চাঙ্গা করতে চীন আরো অনেক ব্যবস্থা নেবে। ব্যবসা চালানোর পরিবেশ সুবিন্যাস্ত করা দশটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে অন্যতম একটি বলে ধারণা করা হয়।

চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিনিময় কেন্দ্রের উপ-প্রধান হান ইয়োং উয়েন মনে করেন, কর্ম-বিবরণীতে প্রশাসন সহজ করে তোলা ও ক্ষমতা রিলিস করা, রিলিস ও পরিচালনার সমন্বয় করা এবং সেবা সুবিন্যাস্ত করার সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। তিনি বলেন,

'গত বছর চীনের ব্যবসা চালানোর পরিবেশের র‍্যাঙ্কিং সারা বিশ্বের আওতায় ৩০টিরও বেশি আসন বেড়েছে। বাজারের প্রাণশক্তি জোরদার করতে চাইলে ব্যবসা চালানোর পরিবেশ অবশ্যই সুবিন্যাস্ত করতে হবে। কর্ম-বিবরণীতে কয়েকটি বিষয়ের সঙ্গে আমি দারুণ একমত। প্রথমত, অনুমোদনের প্রক্রিয়া সহজায়ন করা ও সেবা সুবিন্যাস্ত করা, পুঁজি বিনিয়োগ করে শিল্প সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া। দ্বিতীয়ত, ন্যায়সঙ্গত তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেগবান করা, সংস্কার গভীরতর করা, বাজারের একত্রীকরণ এবং ন্যায়সঙ্গত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাধা সৃষ্টি করা নানা নিয়ম ও আচরণ দূর করে দেওয়া। তৃতীয়ত, তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার একই ধরনের নিয়ম ও মানদণ্ড প্রণয়ন করা। আঞ্চলিক সরকারের ন্যায়সঙ্গতভাবে তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত্।'

চলতি বছর চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন প্রসঙ্গে চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিনিময় কেন্দ্রের উপ-প্রধান হুয়াং ছি ফান বলেন,

'২০১৯ সালে চীনের উন্মুক্ততা নিয়ে কর্ম-বিবরণীতে বলা হয়, আমদানির শুল্ক আরো কমিয়ে দেওয়া এবং আমদানির মোট পরিমাণ বাড়ানো, চীনে বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ-বান্ধবসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর সমান আচরণ পাওয়া, এসব ক্ষেত্রে কর্ম-বিবরণীতে ধারাবাহিক চাহিদাও উত্থাপন করা হয়। এসব চাহিদা চীনের জাতীয় গণকংগ্রেসে পেশ করা 'বিদেশি বিনিয়োগ আইনে' প্রতিফলিত হয়। এই আইনের মাধ্যমে বিদেশি পুঁজি সুরক্ষা ও আকর্ষণ করা এবং সরকারের অযুক্তিযুক্ত আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সংস্কার ও উন্মুক্ততা এবং নব্যতাপ্রবর্তনের কারণে চলতি বছর চীনের অর্থনীতি গত বছরের তুলনায় আরো ভালো হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

(লিলি/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040