বেইজিংয়ে চলছে ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন। ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)-র দ্বিতীয় অধিবেশ। দুই অধিবেশনে অংশগ্রহণকারীরা কীভাবে বেসরকারি খাতের সুষ্ঠু ও উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং করছেন। গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্যরা নিজেদের পরামর্শ দিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে যে, ব্যক্তি-উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করতে নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে।
ছোট ও ক্ষুদ্রাকৃতির কোম্পানিগুলোর আর্থিক-সংকট থাকে। এটা বিশ্বের যে-কোনো অঞ্চলের জন্যই প্রযোজ্য। চীনে ছোট ও ক্ষুদ্রাকৃতির কোম্পানিগুলোর বেশিভাগই বেসরকারি। চলতি বছরের সরকারি কর্মবিবরণীতে এই কোম্পানিগুলোর স্বার্থে একটা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, আর তা হচ্ছে: ২০১৯ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত বড় বাণিজ্যিক ব্যাকগুলোর ছোট ও ক্ষুদ্রাকৃতির কোম্পানিগুলোকে ৩০ শতাংশ বেশি ঋণ দেবে। গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য, চায়না ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক কনস্ট্রাকশান অ্যাসোসিয়েশানের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, অর্থনীতিবিদ কু সেং জু বলেন, চলতি বছরের সরকারি কর্মবিবরণীতে বেসরকারি কোম্পানি, ক্ষু ছোট ও ক্ষুদ্রাকৃতির কোম্পানিগুলোর উন্নয়নের সমস্যার বাস্তব সমাধান খুঁজে বের করা হয়েছে। তিনি বলেন,
"আমাদের চলমান আর্থিক ব্যবস্থা কোম্পানিগুলোর কাঠামোর সঙ্গে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এবার সরকারি কর্মবিবরণীতে কমিউনিটি ব্যাংক, বেসরকারি ব্যাংকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে; বলা হয়েছে, আরও বেসরকারি অর্থ দিয়ে কমিউনিটি ব্যাংক স্থাপন করা হবে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানিগুলোকে সমর্থন দেওয়া হবে।"
কেউ কেউ মনে করেন, ব্যাংকগুলো বেসরকারি কোম্পানিকে ঋণ দিতে চায় না এবং তার মূল একটি কারণ হল, বেসরকারি কোম্পানিগুলোর ক্রেডিট বাড়ানো এবং ঝুঁকি শেয়ারিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এ প্রসঙ্গে, গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য, কুই ইয়াং শহরের উপ-মেয়র ওয়ে তিং মেই বলেন, কুই ইয়াং শহরে জামানতের অর্থের জন্য নিশ্চয়তা তহবিল চালু হবে।
তিনি বলেন,
"আমরা এখন বেসরকারি কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি সমর্থন দিচ্ছি এবং সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা করছি। কুই ইয়াং সরকার, বিশেষ করে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর পুঁজির সমস্যা সমাধান করে থাকে। এখন আমরা বিশেষ একটি তহবিল স্থাপন করছি এবং এ তহবিলের মাধ্যমে ব্যাংক বেসরকারি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি কোম্পানিগুলোকে ঋণ দিতে পারে। এতে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তাও নিশ্চিত হতে পারে। আমরা সরকার ও কোম্পানির সঙ্গে ঝুঁকি ভাগাভাগি করছি।"
ধারাবাহিক নীতিমালার কারণে, বেসরকারি কোম্পানিগুলোতে অর্থের সরবরাহ বাড়ছে। এখন এ অর্থ কাজে লাগানো একটা সমস্যা। গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য, চায়না ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক কনস্ট্রাকশান অ্যাসোসিয়েশানের ফু চিয়ান প্রদেশের সদস্য উ চি মিং মনে করেন, বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সুষ্ঠু উন্নয়ন জরুরি। তিনি বলেন,
"ফাইন্যান্সিং কঠিন হয় অনেক সময় কোম্পানির নিজস্ব কারণেও। সাধারণত কোম্পানি মন দিয়ে একটি ব্যবসা করে এবং নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ব্যাংক থেকে অর্থ পেলে তা যথাযথভাবে ও যথাযথ খাতে ব্যবহার করা উচিত। অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা ঠিক না। কোম্পানিকে নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে।"
চলতি বছরের দুই অধিবেশন বেসরকারি উদ্যোক্তাদের জন্য উত্সাহব্যঞ্জক। সামুদ্রিক বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিষয়ক একটি কোম্পানিতে আছেন উ সিং। তিনি বলেন, শাংহাইয়ে চালু হবে সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনোভেশান সেকশান অব দা স্টক মার্কেট। এ ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। উ সিং বলেন, "এটা চালু হবার পর আমাদের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত কোম্পানিগুলো গবেষণা ও উত্পাদন খাতে অর্থ-সংকট কাটিয়ে উঠবে।"
চেইন শপ বিয়ানলিফেংয়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তি হ্য থাও সাংবাদিকদের জানান, ব্যবসা করার পরিবেশ এখন অনেক উন্নত। তাই বেসরকারি কোম্পানিগুলোর উন্নয়নের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, এবার দুই অধিবেশনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত উত্সাহজনক। (শিশির/আলিম)