পরিবেশ সংরক্ষণে চীনের পরিকল্পনা
  2019-03-13 09:01:16  cri

স্থানীয় সময় ৯ মার্চ জাতিসংঘ পরিবেশ কার্যক্রমের উদ্যোগে দ্বিতীয় জাতিসংঘ পরিবেশবিষয়ক বৈজ্ঞানিক নীতি-ফোরাম কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীরা পরিবেশ সংরক্ষণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। চীনা জ্বালানি সংস্থাও এ ফোরামে অংশ নেয় এবং পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক চীনা পরিকল্পনা তুলে ধরে।
\জাতিসংঘ পরিবেশ কার্যক্রমের পরিচালক জয়েস মুইয়া ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর মানবজাতি নির্ভর করে। অথচ  প্রাকৃতিক পরিবেশের ৬০ শতাংশ ক্ষয় হয়ে গেছে। ২০৫০ সালে মানবজাতির প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের পরিমাণ ৬ গুণ বাড়বে। এমন প্রেক্ষাপটে তিনি মনে করেন, পরিবেশ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি, নীতি ও ব্যবসার ব্যপক ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ।  আগের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় যে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমন্বিতভাবে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য কাজ করা অধিক কার্যকর। তিনি বলেন
"চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের টেকসই উন্নয়নের জন্য আরও পরিষ্কার, পরিবেশবান্ধব, এবং কার্যকর উপায় উপহার দিয়েছে এবং আমরা বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছি। গেল ২০ বছরে নবায়নযোগ্য সম্পদ খাতে বিশ্ব বিনিয়োগ করেছে ৩ ট্রিলিয়ান ডলারের বেশি। এসময় সবুজ পরিবহনবিষয়ক নানান মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও চালু হয়।"
\তিনি আরও বলেন, এর ভিত্তিতে টেকসই উন্নয়নে আরও সম্ভাবনা দেখত চাইলে নানা পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তিনি আশা করেন, এবার ফোরামে মাধ্যমে আরও বেশি স্মার্ট পরিকল্পনা উত্থাপন করা হবে। \আমাদের পৃথিবী দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং মানবজাতি পরস্পরের উপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। আমরা একটি অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি। বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীন সবুজ উন্নয়নের ধারণাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয়।  গেল ১৫ বছরে চীনা প্রতি ইউনিট জিডিপিতে কার্বন ডাই অক্সাইডের নির্গমন ৪৫.৮ শতাংশ হ্রাস করেছে এবং ২০১৮ সালে প্রথম জ্বালানিতে অজীবাশ্ম জ্বালানির অনুপাত বেড়েছে ১৩.৮ শতাংশ এবং ২০২০ সালে তা আরও বেড়ে  হবে ১৫ শতাংশ। চীনা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত সিয়ে চেন হুয়া তার ভাষণে বলেন, চীন সজুব উন্নয়নে অবিচল থাকবে এবং নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে। তিনি বলেন,
"চীন এমন একটি পথে চলছে, যেখানে অর্থনীতির উন্নয়নের গুণগতমান, জ্বালানি কাঠামো এবং জ্বালানি ব্যবহারের কার্যকারিতা উন্নত হচ্ছে এবং;পাশাপাশি কার্বন কম ব্যবহার করা হচ্ছে; জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ সংরক্ষণের কাজ একসাথে এগিয়ে যাচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, চীন অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীল উন্নয়নের ভিত্তিতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা জোরদার করবে এবং নিজের প্রতিশ্রুতি পুরোপুরিভাবে পূরণ করবে।
নিম্ন কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে চীন তার অভিজ্ঞতা অন্য দেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে ইচ্ছুক। এবার ফোরামে চীনা জ্বালানি সংস্থা জ্বালানি রূপান্তর বিষয় নিয়ে 'বিশ্ব জ্বালানি নেইওয়ার্ক' গড়ে তোলার পরিকল্পনা পেশ করে। এর আগে ২০১৫ সালে জাতিসংঘের উন্নয়ন শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং 'বিশ্ব জ্বালানি নেইওয়ার্ক' গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন এবং তা বৈশ্বিক পরিবেশ সমস্যা সমাধানে নতুন একটি পথ দেখায়।
বিশ্ব জ্বালানি নেইওয়ার্ক উন্নয়ন ও সহযোগিতা সংস্থার চেয়ারম্যান লিউ চেন ইয়া তার ভাষণে বলেন, বিশ্ব জ্বালানি নেইওয়ার্ক হবে দূষণ-বিহীন জ্বালানির উন্নয়ন, পরিবহন ও ব্যবহারের একটকি সাধারণ প্লাটফর্ম। স্মার্ট বিদ্যুত নেট,  UHV গ্রিড, ও দূষণবিহীন জ্বালানি নিয়ে গঠিত হয়েছে এ নেইওয়ার্ক।
তিনি বলেন, জীবাশ্মশক্তির বদলে জলশক্তি, সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তিসহ দূষণবিহীন জ্বালানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিদ্যুত পরিবেশবান্ধব এবং মূল্যও কম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রকাশিত হয় 'বিশ্ব জ্বালানি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্ব পরিবেশ কার্যক্রম অভিযান এগিয়ে নিয়ে যাওয়া' শীর্ষক একটি দলিল। এর মাধ্যমে 'বিশ্ব জ্বালানি নেইওয়ার্ক' প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভঅবে জাতিসংঘ পরিবেশ সংরক্ষণের কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। (শিশির/আলিম/রুবি)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040