সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৩৬তম লুক্সেমবুর্গ ইমিগ্রেশন সাংস্কৃতিক ফেস্টিভালে, চীনা ঐতিহ্যগত চা পরিবেশনা, চীনা বিশেষ খাবার এবং চীনে ভ্রমণের অভিজ্ঞতার মতো ইন্টারেক্টিভ প্রজেক্টগুলি সব প্রদর্শিত হয়েছে, যা সব পক্ষের মনোযোগ আকর্ষণ করে এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে আকর্ষণ করেছে। আয়োজকরা আশা করেন, লুক্সেমবুর্গ ইমিগ্রেশন সাংস্কৃতিক উৎসব চীনা বুথের অভিষেক চীনা ও ইউরোপীয় জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়িয়ে দেবে।
চীনা ঐতিহ্যগত বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে সুন্দর লাইভ সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় চীনা নারীরা বিভিন্ন রঙের ছিপাও পরে মঞ্চে উঠে চীনের জাতীয় পোশাকের মোহিনীশক্তি দেখান। এটি দর্শকদের তুমুল করতালি কুড়িয়েছে।
"চীনা নারীদের ছিপাও শো" চীনা সম্প্রদায়ের এই বছর লুক্সেমবুর্গ ইমিগ্রেশন সংস্কৃতি ফেস্টিভালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি শো। লুক্সেমবুর্গে চীনা মহিলা সমিতির সভাপতি লিউ জিং সাংবাদিকদের বলেন, ৩৫ বছর পর এই প্রথমবারের মতো চীনের বুথে এই শো'র আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন,
"সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অনেক চীনা ব্যাংকের বিদেশি শাখা এবং অধিগ্রহণ উত্থানের পরে চীনা জনগণের পরিচয় বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে। আমরা স্থানীয় লুক্সেমবুর্গ এবং ইউরোপীয়দের কাছে নতুন চীনা শৈলী প্রদর্শনের এই সুযোগ কাজে লাগানোর প্রত্যাশা করি।"
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, লুক্সেমবুর্গের জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ৯০ হাজার। তাদের প্রায় অর্ধেকই অভিবাসী। বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে বিনিময়কে শক্তিশালী করার জন্য এবং বহুসংস্কৃতির সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে, লুক্সেমবুর্গ ফরেনার অ্যাসোসিয়েশন যোগাযোগ কমিটি গত শতাব্দীর ৮০'র দশক থেকে প্রতি বছর লুক্সেমবুর্গ ইমিগ্রেশন সাংস্কৃতিক ফেস্টিভালের আয়োজন করেছে। এটি বছর ৩৬তম আয়োজন।
ইমিগ্রেশন সাংস্কৃতিক ফেস্টিভালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা অনিতা বলেন, এই বছর ইমিগ্রেশন ফেস্টিভালটিতে বিভিন্ন দেশের ৪০০টিরও বেশি বুথ রয়েছে, যা বিভিন্ন ধরনের খাবার, গান ও নাচ পরিবেশন এবং ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী তুলে ধরে। লুক্সেমবুর্গের বিদেশি চীনা গোষ্ঠীগুলির অংশগ্রহণ এই বছরের ইমিগ্রেশন উৎসবকে আরও অর্থপূর্ণ করে তোলে। তিনি আশা করেন, সংশ্লিষ্ট তত্পরতা চীনা ও ইউরোপীয়দের বোঝাপড়া আরও উন্নত করবে।
অনিতা বলেন,
"আমি খুব গর্বিত এবং খুশি যে আমাদের ইমিগ্রেশন সংস্কৃতি উৎসব প্রথমবার চীনা সমিতিগুলির অংশগ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছে। ইউরোপীয়দের চীনের সম্পর্কে আরও জানতে হবে এবং চীনা সংস্কৃতির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। আমি মনে করি এটি শুরু; ভবিষ্যতে আমাদের আরও সহযোগিতা হবে।"
লুক্সেমবুর্গ চীনা মহিলা সমিতির সভাপতি লিউ জিং বলেন, "চীনা নারীদের ছিপাও শো" ছাড়াও, সংশ্লিষ্ট তত্পরতার একটি সিরিজও উল্লেখযোগ্য, যা চীনা বুথগুলোতে সব পক্ষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। তিনি বলেন,
"আমরা চীনের পেইন্টিং, ক্যালিগ্রাফি, কারিগরি বিষয় এবং ভিআর অভিজ্ঞতাসহ অনেকগুলি ইন্টারেক্টিভ কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত করেছি। ভিআর অভিজ্ঞতা খুবই আকর্ষণীয়। যেহেতু অনেক ইউরোপীয় মানুষ কখনও চীন ভ্রমণ করেনি, তারা ভিআর-এর মাধ্যমে চীনকে উপভোগ করতে পারবে। ভিআর অভিজ্ঞতার মধ্যে আমরা শুধুমাত্র সমৃদ্ধ মহানগরকেই চিত্রিত করিনি, মহনগরের পাহাড় ও নদীর সুন্দর দৃশ্যাবলীও এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তারা খুব উপভোগ করেছে বিষয়টি। আমরা যে মেশিনগুলি ব্যবহার করেছি, সেগুলোও চীনেও উত্পাদিত। যাতে তারা চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বর্তমান অবস্থাও জানতে পারে।"